জুমবাংলা ডেস্ক : একটি বাল্ব ও একটি সিলিং ফ্যানের এক মাসের বিদ্যুৎ বিল করা হয়েছে ৩৫ হাজার ৭৮৪ টাকা। এমনই এক ভৌতিক বিলের খবরসহ গ্রাহকদের পক্ষ থেকে বিভিন্ন অভিযোগ পাওয়া গেছে যশোরের অভয়নগর উপজেলায় যশোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২, নওয়াপাড়া জোনাল অফিসের বিরুদ্ধে। গ্রাহক হয়রানির পাশাপাশি পরিশোধিত বিল বকেয়া দেখিয়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করারও অভিযোগ রয়েছে। পুনঃসংযোগ পেতে গ্রাহকদের গুনতে হচ্ছে মোটা অংকের টাকা। অভিযোগ দিয়েও সেবাবঞ্চিত হচ্ছেন গ্রাহকরা। কোনো বিষয়ে জানতে গেলে গ্রাহকদের সঙ্গে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা করছেন খারাপ আচরণ।
যশোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২, নওয়াপাড়া জোনাল অফিস সূত্র জানায়, তাদের আওতাধীন অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়া পৌর এলাকায় রয়েছে প্রায় ৮০ হাজার গ্রাহক। এর মধ্যে বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান ৫২টি, ছোট শিল্প প্রতিষ্ঠান ৪৫০টি, সেচ ৬১০টি, মসজিদ ও সরকারি প্রতিষ্ঠান এক হাজার ১০০টি, বাণিজ্যিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চার হাজার ৭০০টি, আবাসিক গ্রাহক রয়েছে ৭৩ হাজার ৮৮টি।
জানা গেছে, নওয়াপাড়া বাজারের সনজিৎ কুমার সাহার পল্লী বিদ্যুৎ হিসাব নম্বর ১৯৫৬। ওই মিটার পরিচালনাকারী বিরেন জোয়ারদার নিজ কক্ষে একটি বাল্ব ও একটি ফ্যান চালান। প্রতি মাসে তার বিদ্যুৎ বিল আসে ৯০ থেকে ১১০ টাকা। কিন্তু গত আগস্ট মাসে তার বিল করা হয়েছে ৩৫ হাজার ৭৮৪ টাকা। হঠাৎ এমন ভৌতিক বিল হওয়ায় তিনি পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে যোগাযোগ করেন। পরবর্তীতে ওই বিল কমিয়ে ৪ হাজার ৮৫৮ টাকা করা হয়।
এ ব্যাপারে বিরেন জোয়ারদার বলেন, আমি একটি বাল্ব ও একটি ফ্যান চালাই। এত বিল কীভাবে হয় অফিসে জানতে গেলে আমার সঙ্গে খারাপ আচরণ করে কর্তৃপক্ষ। পরে বিল কমিয়ে যা করে দিয়েছে, তাও অস্বাভাবিক। এটা আমার পক্ষে দেওয়াও সম্ভব নয়।
নওয়াপাড়া মদিনা ক্লিনিকের পল্লী বিদ্যুতের হিসাব নম্বর ৬০৯/১৯৮৭। ওই ক্লিনিকে গত আগস্ট মাসের বিলের সঙ্গে অন্যের হিসাব যোগ করে ৬৬ হাজার ১১৭ টাকা বিল করা হয়েছে। এ ব্যাপারে ওই ক্লিনিকের প্রতিনিধি রফিকুল ইসলাম মিন্টু পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে গেলে তার সঙ্গেও খারাপ ব্যবহার করা হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। তাকে ওই টাকাই দিতে হবে বলে সাফ জানিয়ে দেয়া হয়েছে।
নওয়াপাড়ার গুয়াখোলা গ্রামের খোকন আকুঞ্জির দাবি, ভোগান্তির আরেক নাম যশোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২, নওয়াপাড়া জোনাল অফিস। অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা গ্রাহকদের নানাভাবে হয়রানি করে থাকেন। আমার আবাসিক মিটারে সেপ্টেম্বর মাসের বিদ্যুৎ বিলের সঙ্গে ট্রান্সমিটার ভাড়া বাবদ ৭ হাজার ৫২৬ টাকা বিল করা হয়েছে। এ ধরনের গ্রাহক হয়রানি থেকে তিনি মুক্তির দাবি করেন।
নওয়াপাড়া গোহাট বায়তুল সালাম জামে মসজিদ কমিটির কর্মকর্তা আব্দুস সালাম বলেন, বিদ্যুৎ সমস্যার থেকে মুক্তি পেতে মুসল্লিদের পক্ষ থেকে একটি ট্রান্সমিটারের জন্য গত ১৫ মে আবেদন করে ৪২ হাজার ২৭ টাকা জমা দেয়া হয়। এ ব্যাপারে মসজিদ কমিটি বারবার পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের ডিজিএমসহ বিভিন্ন কর্মকর্তার কাছে ধর্না দিলেও এখন পর্যন্ত ট্রান্সমিটার বসানো হয়নি।
নওয়াপাড়ার বুইকারা গ্রামের জাবের আলী বিশ্বাসের বিল পরিশোধ থাকার পরও তার নামে মামলা করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে জাবের বিশ্বাস বলেন, ভুয়া মামলার কারণে আমি পল্লী বিদ্যুতের বিরুদ্ধে উল্টো মামলা করতে চাইলে কর্তৃপক্ষ আমাকে ডেকে তাদের দেয়া মামলা প্রত্যাহার করে নেয়।
বিভিন্ন গ্রাহকের অভিযোগ, ২ থেকে ৩ মাস বিদ্যুৎ বিল বকেয়া হলেই সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। পুনঃসংযোগ পেতে এক হাজার ২০০ টাকা জমা দিতে হয়। এক কথায় প্রতিনিয়িত গ্রাহক হয়রানি করে চলেছে পল্লী বিদ্যুৎ।
সার্বিক বিষয়ে যশোর পল্লী বিদ্যু৭ সমিতি-২, নওয়াপাড়া জোনাল অফিসের উপ-মহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আমার আগের কর্মকর্তা ভাড়াটিয়াদের নামে মিটার দিয়েছিলেন, তারা বিল বাকি করে চলে গেছেন। এখন ভাড়াটিয়াদের বিল ঘর মালিকের নামে করা হয়েছে। কোনো ভৌতিক বিল নয়, দু-একটি সমস্যার কথা স্বীকার করে তা সমাধানের আশ্বাস দেন তিনি। গ্রাহক হয়রানি ও খারাপ আচরণের বিষয়ে তার কাছে অভিযোগ করলে সাথে সাথে ব্যবস্থা গ্রহন করবেন বলে জানান। সূত্র- কালের কণ্ঠ
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।