জুমবাংলা ডেস্ক : আকলিমা (২৫) হত্যার মাত্র ছয় দিনের মাথায় তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় খুনিকে গ্রেপ্তার করতে পারে হবিগঞ্জ থানা পুলিশ। বুধবার রাতে ঘাতক আনোয়ার হোসেন ওরফে সোবহান (২৭) আদালতে দোষ স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়।
আসামি আনোয়ার হবিগঞ্জ সদর উপজেলার উচাইল গ্রামের বাসিন্দা।
পুলিশ জানায়, ২৫ ডিসেম্বর রাত অনুমান ৮টায় হবিগঞ্জ সদর থানাধীন রাজিউড়া দক্ষিণ গ্রামের হাওরে শুকনো জমি থেকে ২৫ বছর বয়সী এক অজ্ঞাত নারীর মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। লাশের গলায় ওড়না প্যাঁচানো ছিল। মৃতদেহের কিছু দূরে একটি ভ্যানিটি ব্যাগে মোছা. আকলিমা আক্তার (২৫), বাবা-হেলাল মিয়া, সাং-জাম্বুরাছড়া, থানা-শ্রীমঙ্গল, জেলা-মৌলভীবাজার ছাপা একটি জাতীয় পরিচয়পত্র পাওয়া যায়। হবিগঞ্জ পুলিশ শ্রীমঙ্গল থানার মাধ্যমে ওই নারীর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে।
পরদিন সকালে সদর হাসপাতালে এসে মৃতদেহ শনাক্ত করেন তার পরিবারের সদস্যরা। ময়নাতদন্ত শেষে তারা লাশ বুঝে নেন।
হবিগঞ্জ থানার ওসি মাসুক আলী দেশ রূপান্তরকে জানান, ‘আকলিমার ভাই আমির হোসেন অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে হবিগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ঘটনাস্থলের পাশে পাওয়া এনা বাসের টিকিটের একটি অংশের সূত্র ধরে পুলিশ জানতে পারে ২৩ ডিসেম্বর আকলিমা আক্তার ঢাকা টঙ্গী থেকে বাসযোগে সন্ধ্যার পর শায়েস্তাগঞ্জে নামেন। এনা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে যাত্রী আকলিমা আক্তারের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করা হয়’।
তিনি আরো বলেন, ‘তথ্যপ্রযুক্তির সাহায্যে পুলিশ জানতে পারে আকলিমা মোবাইলে ওই দিন হবিগঞ্জ সদর উপজেলার রাজিউড়া দক্ষিণ গ্রামের আনোয়ারের সঙ্গে একাধিকবার কথা বলেন। এরপর মঙ্গলবার উচাইল এলাকা থেকে আনোয়ারকে গ্রেপ্তার করা হয়। সে পেশায় একজন কাঠমিস্ত্রি। জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায় আকলিমার সঙ্গে প্রায় ১ বছর তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। আকলিমা বিয়ের জন্য চাপ দিলে সে কৌশলে এড়িয়ে যায়’।
পুলিশ জানায়, গ্রামের লোকজনের নিকট বিচার প্রার্থী হওয়ার কথা বললে আনোয়ার হতভাগ্য আকলিমা আক্তারকে কৌশলে তার বাড়িতে ডেকে আনে। দুদিন বাড়িতে রাখার পর ২৫ ডিসেম্বর ভোরে তাকে হাওরে নিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে।
ওসি মাসুক আরো জানান, আকলিমা ঢাকার একটি গার্মেন্টসে চাকরি করত। তার পাঁচ বছরের এক শিশু রয়েছে তার। এক বছর আগে স্বামী তাকে তালাক দেয়। অপরদিকে আসামি আনোয়ারও বিবাহিত। বনিবনা না হওয়ায় স্ত্রী গত ৮ মাস ধরে বাবার বাড়ি রয়েছে। আসামি আনোয়ার হোসেন তাহার অপরাধে অনুতপ্ত হয়ে বিজ্ঞ আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে।
এই হত্যাকাণ্ডে এলাকায় মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছিল। দ্রুত সময়ের মধ্যে ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন হওয়ায় এবং আসামি গ্রেপ্তার হওয়ায় এলাকায় জনমনে স্বস্তি ফিরে এসেছে বলে জানান ওসি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।