জুমবাংলা ডেস্ক : শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার ক্ষেত্রে সার্কিট ব্রেকারের (দাম বাড়া বা কমার সর্বোচ্চ সীমা) নতুন নিয়ম চালু করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। ফলে একদিনে কোনো কোম্পানির শেয়ারের দাম ৩ শতাংশের বেশি কমতে পারবে না।
বুধবার (২৪ এপ্রিল) এ বিষয়ে এক নির্দেশনা জারি করে বিএসইসি। এতে সই করেন বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম। আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে সার্কিট ব্রেকারের নতুন নিয়ম কার্যকর হবে।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ২০২১ সালের ১৭ জুন শেয়ারের দাম বাড়ার ক্ষেত্রে সার্কিট ব্রেকারের যে নিয়ম নির্ধারণ করা হয় তা অপরিবর্তিত থাকবে। তবে দাম কমার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সীমা হবে ৩ শতাংশ। ফ্লোর প্রাইসে থাকা সিকিউরিটিজ বাদে সব সিকিউরিটিজের ক্ষেত্রে এ নিয়ম কার্যকর হবে।
বিনিয়োগকারী ও শেয়ারবাজারের স্বার্থে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে বিএসইসির নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়েছে। তবে শেয়ারবাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, এই সিদ্ধান্তের ফলে শেয়ারবাজারের উপকার হবে না। বরং বাজারের স্বাভাবিক চাহিদা ও সরবরাহ ব্যবস্থায় ব্যাঘাত ঘটবে।
তারা বলেন, এর আগে ফ্লোর প্রাইস দিয়ে দীর্ঘদিন বাজার আটকে রাখা হয়। অনেক সমালোচনার পর বিএসইসি ফ্লোর প্রাইস তুলে নেয়। এখন আবার একই ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো। এতে বাজারের কোনো উপকার হবে না।
বিশ্লেষকরা বলছেন, শেয়ারবাজার তার নিজস্ব গতিতে চলতে দিতে হবে। বাজারে নিয়ন্ত্রক সংস্থার অযাচিত হস্তক্ষেপ ঠিক নয়। মূল্য সংশোধের পর বাজার একটা পর্যায়ে ঘুরে দঁড়াবে এটাই স্বাভাবিক। নিয়ন্ত্রক সংস্থার উচিত সূচক আটকে রাখার চেষ্টা না করে বাজারে কেউ অনিয়ম কারলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া। একই সঙ্গে সরকারের বিভিন্ন মহলের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিনিয়োগকারীদের সিস্টেমে প্রণোদনার ব্যবস্থা করা।
এ বিষয়ে শেয়ারবাজার বিশ্লেষক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, এভাবে বাজারে হস্তক্ষেপ করা ঠিক নয়। মার্কেট এক জায়গায় গিয়ে ঠিক হয়ে যেতো। দাম বাড়ার ক্ষেত্রে আগের নিয়ম রাখা হয়েছে, কিন্তু কমার ক্ষেত্রে কমতে পারবে না, এটা আগের মতো আরও একটা ভুল সিদ্ধান্ত।
তিনি বলেন, বিএসইসি সূচক নিয়ে এত দুশ্চিন্তাগ্রস্ত থাকে কেন? তাদের উচিত বাজারে যে অনিয়ম হয় তা দেখা। একই সঙ্গে সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয় ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সঙ্গে বসে বিনিয়োগকারীদের সিস্টেমে কিছু প্রণোদনা দেওয়া যায় কি না, তার ব্যবস্থা করা। এটার জন্য চেষ্টা-তদবির করা উচিত।
অধ্যাপক আবু আহমেদ আরও বলেন, দাম কমার ক্ষেত্রে সার্কিট ব্রেকারের যে নিয়ম করে দেওয়া হলো এটা বাজারের কোনো উপকার করবে না। ক্ষতিই করবে। বাজারে ফ্রি ডিমান্ড-সাপ্লাইয়ের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করবে। এত সমালোচনার পর ফ্লোর প্রাইস উঠিয়েছে, তারপর আবার সেই দিকে যায়। পড়াটাকে জোর করে বেঁধে রাখা যায় না। যেটা পড়ার সেটা পড়বেই।
বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী বলেন, বাজারে এক ধরনের আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে সাময়িক সময়ের জন্য দাম কমার ক্ষেত্রে ৩ শতাংশ পর্যন্ত কমার যে নিয়ম করে দেওয়া হয়েছে সেটি দেওয়া যেতে পারে। এটি ৪-৫ দিনের জন্য দিলে সমস্যা নেই। কিন্তু এটা সপ্তাহের পর সপ্তাহ চলতে থাকলে সমস্যা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।