জুমবাংলা ডেস্ক : তরুণ জনগোষ্ঠীকে দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে ২০৫২৫ কোটি ৬৯ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘উপজেলা পর্যায়ে ৩২৯টি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ স্থাপনে’ একটি প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)।
মঙ্গলবার রাজধানীর এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় মোট ৮টি প্রকল্পের চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়।
একনেক সভাশেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান জানান, চলতি অর্থবছরের ১৭তম একনেক সভায় আজ ২২৯৪৫ কোটি ৮৪ লাখ টাকা ব্যয়ে মোট ৮টি প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
তিনি জানান, এই প্রকল্প ব্যয়ের পুরো অর্থ বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব অর্থায়ন থেকে ব্যয় করা হবে। ৮টি প্রকল্পের মধ্যে ৬টি নতুন প্রকল্প এবং বাকি ২টি সংশোধিত প্রকল্প।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, উপজেলা পর্যায়ে ৩২৯টি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ স্থাপন (২য় পর্যায়) শীর্ষক প্রকল্পটি সরকারের একটি তারকা (স্টার) প্রকল্প। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের মধ্যে দিয়ে আমরা দেশের তরুণ জনগোষ্ঠীকে কারিগরি শিক্ষা প্রদান এবং দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।
তিনি বলেন, বিদেশি শ্রমবাজারে যুব সমাজের অংশগ্রহণের সুযোগ তৈরি এবং রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ানোর জন্য দেশে বিভিন্ন ধরনের কারিগরি প্রশিক্ষণ কর্মসূচি পরিচালনা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এমএ মান্নান জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রশিক্ষণ কর্মসূচি সফলভাবে পরিচালনার জন্য কারিগরি স্কুলের শিক্ষকদের জন্য যথাযথ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, কারিগরি শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে। শিক্ষকের অভাব আছে। প্রয়োজন হলে প্রশিক্ষণের জন্য শিক্ষকদের বিদেশ পাঠাতে হবে।
এর পাশাপাশি কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভবন তৈরি এবং যন্ত্রপাতি, চেয়ার-টেবিলসহ আনুষঙ্গিক উপকরণ প্রস্তুত করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
জানা গেছে, নতুন প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রম হচ্ছে ৯৮৪ একর ভূমি অধিগ্রহণ ও ক্রয়, একাডেমিক কাম ওয়ার্কশপ ও প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ, শিক্ষক ডরমিটরি, ছাত্রীনিবাস, বাউন্ডারি ওয়াল, অভ্যন্তরীণ রাস্তা, গভীর নলকূপ, ৫০০ কেভিএ সাবস্টেশন, শহীদ মিনার, মুক্তিযোদ্ধা মনুমেন্ট এবং পানি সংরক্ষণাগার ইত্যাদি। এটি বাস্তবায়িত হলে ৩২৯টি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা কার্যক্রমের শুরু এবং প্রতি বছর উল্লেখযোগ্যসংখ্যক নতুন শিক্ষার্থী অধ্যয়নের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
সূত্রের তথ্য মতে, কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি, দারিদ্র্য দূরীকরণ, দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়নে টিভিইটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। সরকার ২০২১ সালের মধ্যে দেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করার জন্য কারিগরি শিক্ষায় ভর্তির হার ২০ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।
এ লক্ষ্য অর্জনে কারিগরি শিক্ষাকে গ্রাম পর্যায়ে সম্প্রসারিত করার জন্য কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগ বিদ্যমান ৬৪টি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজের সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং ১০০টি উপজেলায় একটি করে টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ স্থাপন শীর্ষক প্রকল্প ২টি বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। এখন দেশের অবশিষ্ট ৩২৯টি উপজেলায় একটি করে টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ স্থাপনের জন্য দ্বিতীয় পর্যায়ের এ প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হয়েছে।
একনেকে অনুমোদিত অন্য প্রকল্পসমূহ হলো- ৯১ কোটি ১১ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘সিরাজগঞ্জের বিসিক শিল্প পার্ক’, ১৪৩ কোটি ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে এসআরডিআই’র ভবন নির্মাণ ও সক্ষমতা বৃদ্ধি, ২৩৩ কোটি ৯২ লাখ টাকা ব্যয়ে জামালপুরের শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল এবং নার্সিং কলেজ স্থাপন।
এছাড়া কিশোরগঞ্জ জেলার হাওর এলাকার নির্বাচিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান উন্নয়ন প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৩৯৩ কোটি ৪১ লাখ টাকা, বেতগ্রামতুলা-পাইকগাছা-কয়রা সড়ক যথাযথ মানে উন্নীতকরণ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৩৩৯ কোটি ৫৮ লাখ টাকা, লক্ষ্মীপুর শহর সংযোগ সড়ক ও লক্ষ্মীপুর–চর আলেকজান্ডার-সোনাপুর-মাইজদী সড়ক প্রশস্তকরণ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৬৯ কোটি ৪৩ লাখ টাকা এবং ভোলা-চরফ্যাশন আঞ্চলিক মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৮৪৯ কোটি ৪০ লাখ টাকা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।