জুমবাংলা ডেস্ক : প্রথমে প্রেমের সম্পর্ক, এরপর বিয়ে, তালাক ও পরে কাবিননামার টাকা আদায় ও নারী নির্যাতনের মামলা দিয়ে টাকা আদায়। এমন প্রতারণায় নেমেছে এক শ্রেণির নারী। তেমনই একজনের গল্প এই প্রতিবেদনে। যার কাজই হচ্ছে একের পর এক বিয়ে করা।
এক কাবিননামায় দেখা যায়, ২০০৬ সালের ১৩ জুন পিরোজপুর জেলার আবুল কালাম মল্লিককে বিয়ে করেন লায়লা শারমীন। বিয়ের কয়েক মাসের মাথায় রাজধানীর খিলগাঁও থানায় স্বামী আবুল কালাম মল্লিকসহ পরিবারের ৫ জনের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন মামলা করেন এবং আসামিদের সবাইকে কারাবরণ করতে হয়।
এ মামলা নিষ্পত্তির ঠিক দু’মাসের মাথায় একই নারী নির্যাতন ট্রাইবুনাল-৪ এ আবারো নারী নির্যাতন মামলাকে পুঁজি করে আবুল কালাম মল্লিকসহ তার পরিবারকে পুনরায় বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করান লায়লা শারমীন বাধন। পুনরায় তাদেরকে কারাবরণ করতে হয়। এ মামলা চলার ৩ বছর পর ২০১৪ সালের ৯ নভেম্বর মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে বাদী লায়লা শারমীন আদালতে হাজির হয়ে মামলাটি তুলে নেওয়ার আবেদন করেন। আবেদনে তিনি উল্লেখ করেন, বাদী তার মোহরানাসহ যাবতীয় পাওনা বুঝে পেয়ে বিবাদী স্বামী আবুল কালাম মল্লিকের সাথে আপোষ মীমাংসা করেছেন।
ঠিক একইভাবে এই নারী প্রতারকের প্রতারণার শিকার ভুক্তভোগী আসাদুজ্জামান ও তার পরিবার। আসাদুজ্জামান পেশায় একজন ব্যবসায়ী। তিনি অভিযোগ করেন, তার ছোট ভাই সরকারি কর্মকর্তা রাশেদুজ্জামানকে জোরপূর্বক বিয়ে করেন লায়লা শারমীন বাধন নামের সেই নারী।
রাশেদুজ্জামানের সাথে কাবিন হওয়ার পর ২০১২ সালের ৫ জুলাই রাশেদুজ্জামান জোর করে বিয়ে করার অভিযোগ এনে কাবিননামা বাতিলের দাবিতে লায়লা শারমীন ও তার বোন আয়শা আক্তারসহ সাতজনের বিরুদ্ধে ময়মনসিংহ যুগ্ম জেলা জজ আদালতে মামলা করেন। এ মামলা রুজু হওয়ার পরক্ষণেই লায়লা শারমীন একটি যৌতুকের মামলা দায়ের করেন এবং সেইসঙ্গে শারমীনের মা জাহানারা পাঠান বাদী হয়ে ময়মনসিংহ ফুলপুর থানায় বাড়ি-ঘর ভাঙচুরের অভিযোগ এনে রাশেদুজ্জামানসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। হলফকারী বাদী সাথী আক্তারকে সমন ও ওয়ারেন্ট দিয়েও আদালতে হাজির করানো যাচ্ছে না। অথচ ১০ বছর ধরে আদালতে দৌড়াচ্ছেন রাশেদুজ্জামান।
লায়লা শারমিনের করা যৌতুকের মামলায় মাস দু’য়েক পর জামিনে বের হন রাশেদুজ্জামান। এ সময় তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। এর এক পর্যায়ে বাধ্য হন মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে বাদী লায়লা শারমীনের সাথে যৌতুক ও ভাঙচুরের মামলায় আপোষ করতে। সেইসঙ্গে মামলা চলাকালীন ২০১৩ সালের ২৮ মার্চ ডিভোর্স দেন লায়লা শারমীন ওরফে বাধনকে। এর দুই সপ্তাহের মাথায় লায়লা শারমীন যৌতুকের মামলাটি তুলে নেন ৩৫ লক্ষ টাকার বিনিময়ে।
লায়লা শারমিন বাধনের তৃতীয় স্বামী একরামের বলেন, সাথী আক্তারকে দিয়ে রাশেদুজ্জামানের বিরুদ্ধে মিথ্যা নারী নির্যাতন মামলা করায় লায়লা শারমিন বাধনের সম্পৃক্ততা আছে।
ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্রুনাল-৪ স্পেশাল পিপি মোহাম্মাদ ফোরকান মিঞা বলেন, যেহেতু মামলার বাদী সাথী আক্তারকে সমনও ওয়ারেন্ট ইস্যু করেও হাজির করানো যাচ্ছে না এবং মামলা দায়েরকারী আইনজীবীও তার দায়িত্ব নিতে রাজি নন। এ পরিস্থিতিতে বিবাদী যাতে সুবিচার পান, সেজন্য বিষয়টি আদালতের দৃষ্টি আর্কষণ করা হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।