এক প্রবাসী শাহ আলমই ৩ ইউনিয়নে করোনা ছড়িয়ে মারা গেছেন

জুমবাংলা ডেস্ক: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে গত ৭ এপ্রিল করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান মালয়েশিয়া প্রবাসী যুবক শাহ আলমের (৩৫)। এরই মধ্যে তার ৭ মাসের অন্ত:সত্তা স্ত্রী সানজিদা পারভিন (২২), সন্তান এবং তার ভাইয়ের করোনা আক্রান্তের রিপোর্ট পজেটিভ এসেছে।

নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাক্তার অভিজিৎত রায় জানিয়েছেন, ‘শাহআলমের পরিবারের ১২ জনের নমুনা সংগ্রহ করেন তারা প্রথমে। গতকাল শুক্রবার তার শ্বশুর বাড়ির আরো ৬ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। শাহআলম কতোজনের সংস্পর্শে এসেছিলেন তা নিরুপন করার চেষ্টা করছেন তারা।’

রোগটি মারাত্মক রকমের ছোঁয়াচে তাই এখন ঝুঁকিতে পড়েছে শাহ আলমের গোটা পরিবারসহ দুই উপজেলার ৩ ইউনিয়নের  মানুষ। শাহ আলমের বাড়ি নাসিরনগর উপজেলার পূর্বভাগ ইউনিয়নের মকবুলপুর গ্রামে। তার মৃত্যুর পর পূর্বভাগ ইউনিয়নের পাশাপাশি পূর্বভাগ ও গোকর্ণ ইউনিয়নের মানুষজনের চলাচলের ওপরও নিষেধাজ্ঞা জারী করা হয়েছে।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয়রা জানায়, মালয়েশিয়া থেকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আসা শাহ আলম মানেননি হোম কোয়ারেন্টাইন। বিমানবন্দর থেকে শুরু করে সব জায়গায় টাকা দিয়ে ধামাচাপা দিয়েছেন কোয়ারেন্টাইন। এ ছাড়া নিজের পরিবার, স্বজনসহ সকলের কাছে রোগের বিষয়টি গোপন করেছেন। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে ঘুরে বেড়িয়েছেন।

বিভিন্ন এলাকা থেকে স্বজনরা তার বাড়িতে বেড়াতেও এসেছেন। শাহ আলমের কাছে সবকিছুই ছিল স্বাভাবিক। তার সাথে ঘুরেছেন কুলিগন্ডা গ্রামের বাসিন্ধা তারই এক ভগ্নিপতি। করোনার উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুর পর শাহ আলমের গোপন রাখা সকল কর্মকান্ড একে একে বেড়িয়ে আসতে থাকে। মৃত্যুর পর তার স্ত্রী, সন্তান, শালিকা, শ্বশুর ও পিতার নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

শাহ আলমের অন্ত:সত্তা স্ত্রীর রয়েছে ৩ বছর বয়সের এক কন্যা শিশু। করোনা পজেটিভ আসায় ১৩ এপ্রিল পারভিনকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদরের আইসোলেশনে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে শাহ আলমের নিজ গ্রাম মকবুলপুর, শ্বশুরবাড়ি জেঠাগ্রাম ও সরাইলের শাহজাদাপুর গ্রামের মানুষদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এই তিন গ্রাম ছাড়াও মৃত্যুর আগে শাহ আলম মলাইশ, শাহবাজপুর ও সরাইলে বসে আড্ডা দেওয়ার জায়গা গুলোতেও চলছে নানা কানাঘুষনা। ওইসব জায়গার লোকজনের মধ্যে বিরাজ করছে করোনায় আক্রান্তের ভীতি।