এ অর্থ তার আন্তর্জাতিক বাজারে অস্ত্র ব্যবসার মুনাফার অংশ। তার দীর্ঘদিনের ব্যবসায়িক অংশীদার আদনান খাসোগির কাছ থেকে তিনি এ অর্থ পেয়েছেন। কোনো ধরনের হয়রানি ছাড়া তিনি বাংলাদেশে এই টাকা স্থানান্তরের জন্য সরকারের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন।
সম্প্রতি বিষয়টি উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালকে একটি চিঠি দিয়েছেন মুসা বিন শমসের। ওই চিঠিতে তিনি বলেছেন, এ টাকা দেশে আনা হলে শুধু আমি ও আমার পরিবার উপকৃত হবে না, দেশও সুবিধাভোগী হবে। এজন্য টাকা দেশে আনার ব্যাপারে দ্রুত সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
তার ব্যবসায়িক পার্টনার আদনান খাসোগি এই অর্থ মুসা বিন শমসেরকে দেয়ার জন্য মৃত্যুর আগে একটি নির্দেশনা দিয়ে গেছেন সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে। এতে তিনি বলেছেন, এই অর্থ স্থানান্তরের ব্যাপারে আমি (আদনান খাসোগি) সুইস প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেছি। তিনি সন্তোষজনক সমাধান দিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে পাওয়া গেছে এসব তথ্য।
প্রসঙ্গত, মুসা বিন শমসেরের এই অর্থ চলতি অর্থবছরের (২০১৮-১৯) বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) চেয়েও বেশি। বাংলাদেশের চলতি এডিপির আকার এক লাখ ৭৯ হাজার ৬৬৯ কোটি টাকা।
জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, মুসা বিন শমসেরের টাকা দেশে আনার প্রস্তাবটি পাওয়া গেছে। কিন্তু বিষয়টি এখনও বিবেচনায় নেয়া হয়নি। কারণ এটি দেশীয় মুদ্রায় অনেক টাকা। দেশে হঠাৎ করে এই টাকা প্রবেশ করলে মূল্যস্ফীতিতে সয়লাব হয়ে যাবে। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত আরও উপর থেকে হওয়া উচিত। এ প্রস্তাবটি মুসা বিন শমসের প্রধানমন্ত্রীর কাছে দিতে পারেন বলে মনে করেন অর্থমন্ত্রী।
অর্থমন্ত্রীকে দেয়া চিঠিতে মুসা বিন শমসের লিখেছেন, ‘ইতিপূর্বে সুইস ব্যাংক আমার ১২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বাংলাদেশি টাকায় ১ লাখ ২ হাজার কোটি টাকা ফ্রিজ করেছে। এটি আপনি (অর্থমন্ত্রী) ও বিশ্ববাসী জানেন। আমি ফের সে পথে যেতে চাচ্ছি না।
বর্তমানে আমি বিদেশ থেকে আমার ১ লাখ ৯৩ হাজার কোটি টাকার (২০ বিলিয়ন ইউরো) ফান্ডটি বাংলাদেশে স্থানান্তরের জন্য আপনার সহযোগিতা চাই। তাই বিলম্ব না করে ফান্ড বাংলাদেশে নিয়ে আসার জন্য আপনি একটি চিঠি ইস্যু করবেন। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে কথা বলে আমি আমার ব্যাংকে (কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলন) নির্দেশনা দেব।’
জানা গেছে, মুসা বিন শমসের দুর্নীতি দমন কমিশনে এর আগে সম্পদের হিসাব জমা দিয়েছেন। সে হিসাব অনুযায়ী সুইস ব্যাংকে তার ১২ বিলিয়ন ডলার জমা রয়েছে, যা বাংলাদেশি টাকায় ১ লাখ ২ হাজার কোটি টাকা (প্রতি ডলার ৮৫ টাকা হিসেবে)।
সম্পদ বিবরণীতে তিনি জানিয়েছেন, সুইস ব্যাংকে তার এ পরিমাণ অর্থ ‘ফ্রিজ’ (সাময়িক জব্দ) অবস্থা আছে। এ ছাড়াও সুইস ব্যাংকের ভল্টে ৯ কোটি ডলার দামের (বাংলাদেশি ৭৬৫ কোটি টাকা) অলংকার জমা আছে। দেশে তার সম্পদের মধ্যে গুলশান ও বনানীতে দুটো বাড়ি সাভার ও গাজীপুরে ১২০০ বিঘা জমির কথাও বিবরণীতে তুলে ধরেছেন।
বাংলাদেশে নিজের ব্যবসায়িক কাজের তথ্য তুলে ধরতে গিয়ে সম্পদ বিবরণীতে মুসা জানান, বনানীতে মেসার্স ড্যাটকো লিমিটেড নামে একটি জনশক্তি রফতানি প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান তিনি। এর আরও কয়েকজন অংশীদার রয়েছেন। প্রতিষ্ঠানটির নামে ঢাকায় দুটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট আছে। তবে তার নিজ নামে দেশে কোনো ব্যাংক অ্যাকাউন্টের কথা সম্পদ বিবরণীতে উল্লেখ করেননি। সূত্র – মিজান চৌধুরী, যুগান্তর
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।