খালেদ মুহিউদ্দীন, ডয়চে ভেলে: করোনাকালে প্রতারণা করে পাবলিক আর সরকারের টাকা পকেটে ভরার অপরাধে পালিয়ে আছেন মোহাম্মদ সাহেদ৷ ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে গুরুত্বপূর্ণদের সঙ্গে তার বিচিত্র রঙ্গের বিপুল ঢঙ্গের ছবি৷
অনেকে এটাও বলছেন যে, সাহেদ যে প্রতারক তা তিনারা আগেই বুঝতে পেরেছিলেন৷
সবগুলো, বলা উচিত প্রায় সবগুলো টেলিভিশনে তার নানান কীর্তিগাঁথা দেখানো হচ্ছে, প্রথম আলো, কালের কণ্ঠসহ বড় কাগজগুলোতে সাহেদনামা বা কে-এই-সাহেদ-পংক্তিমালা ছাপা হচ্ছে, আরো নিশ্চয়ই হবে৷
কিন্তু আমাদের প্রশ্ন, আমরা কি এই তথ্যগুলো র্যাব অভিযান না করলে জানতাম? এমনকি কয়েকদিন আগে চ্যানেল টোয়েন্টি ফোর যখন রিজেন্ট হাসপাতাল সংক্রান্ত নেতিগুলো তুলে ধরেছে, তখনও কি আমরা বিষয়টি নিয়ে মাথা ঘামিয়েছি? স্বমহিমাতে থেকেই মোহাম্মদ সাহেদ এটা তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র আখ্যা দিয়ে গেছেন৷ ইংরেজি ধার করে জানতে চাওয়া যায়, হোয়াট ওয়াজ দা ডিল?
আমরা জানছি, ২০১৪ সাল থেকে রিজেন্ট হাসপাতালের লাইসেন্স ছিল না৷ আচ্ছা, দেশে যেসব বেসরকারি হাসপাতাল পরিচালিত হয় তার সবগুলোর লাইসেন্স রয়েছে? সেইসব প্রতিষ্ঠান কী যোগ্যতায় লাইসেন্স পায়, কী অযোগ্যতায় হারায়? যে রাষ্ট্রের রাজধানীতে ছয় বছর ধরে লাইসেন্সহীন হাসপাতাল কাজ চালিয়ে যায়, সেই রাষ্ট্রে আর কী কী বেআইনি রয়েছে তা আমরা কবে জানবো, কিভাবে জানবো? আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পরের অভিযানের জন্য অপেক্ষা করলেই হয়তো জানা যাবে, যাবে কি?
আমাদের সন্দেহ, এই দেশের অনেক হাসপাতাল, অনেক স্কুল, অনেক খাদ্য ও ওষুধনির্মাতা, অনেক আবাসন প্রতিষ্ঠানেরই অনুমোদন বা লাইসেন্স নেই৷ কোনো বিল্ডিং পড়ে গেলে বা পুড়ে গেলে আমরা সাংবাদিকেরাই আপনাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেবো ঢাকা শহরে মোট কতগুলো বিল্ডিংয়ে অগ্নিনির্বাপক নেই বা কতগুলো নকশা রাজউক অনুমোদিত নয়৷ দিবোই, দেখে নিয়েন৷
আর হ্যাঁ, অনেকে প্রমাণ করতে চাইছেন যে, জনাব সাহেদ আসলে বিএনপির লোক, খোলস পাল্টে আওয়ামী হয়েছেন৷ তাদের জন্য বলছি, ১২ বছর শাসনের পর এই শিশুতোষ ছড়া আর ঘুমপাড়ানি গান আর কাজে লাগে না৷ মিটিং করুন, নতুন কিছু ‘আবিষ্কার’ করুন৷
রোগবালাই দুর্নীতিতে মুমূর্ষু এক নাগরিকের আকূল আবেদন, রিজেন্ট বিল্ডিং বন্ধ করার পাশাপাশি সাহেদ সাহেবদের বন্দি করেন৷ জানতে চান, আমাদের সবার নাকের ডগাতে এরকম একজন আমলনামার মানুষ সমাজের মগডালে বসে পা নাচানোর ক্ষমতা কোথা থেকে পেলেন? আমরা তার খুঁটিও চিনতে চাই, জানতে চাই সেই খুঁটি নড়বড়েও বা কেন হলো, কেন হয়? অন্য খুঁটি কেন শক্ত থাকে তা-ও জানতে চাই৷
আর সাহেদ সাহেবের মতো আর সব গুণীজনকেও ধরা হোক৷ মনে রাখবেন, আপনি আকার ও আকৃতিতে বড় বলে ঝুঁকিটা আপনারই সবথেকে বেশি৷ ঘুণে কড়িবর্গা খেয়ে ফেললে ছাদ কিন্তু সবার আগে আপনার মাথার উপরই ভেঙে পড়বে৷
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।