এক হিন্দু মেয়েকেই চারবার বিয়ে করে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে এক তরুণ। তারা প্রমাণ করতে চেয়েছে প্রেমের কোনো জাতি-ধর্ম নেই। ফইজ ও অঙ্কিতা নামের ভারতীয় ওই দুই যুগল তাদের প্রেমের কাছে ধর্মকে একেবারেই পাত্তা দেননি!
জানা গেছে, ভারতের আইআইএম ইন্ডোরের দুই শিক্ষার্থী ছিল ফইজ ও অঙ্কিতা। তাদের নিজেদের প্রেম, সম্পর্ক ও একে অপরের প্রতি বিশ্বাসে একটুও কমতি ছিল না। শুধু পরিবারকে নিয়েই ছিল ভয়।
কারণ ফইজ প্রগতিশীল মুসলিম পরিবারের ছেলে হলেও অঙ্কিতা রক্ষণশীল হিন্দু পরিবারের মেয়ে। ফইজ-অঙ্কিতার সম্পর্কের কথা শোনা মাত্রই অঙ্কিতার পরিবার সাফ জানিয়ে দিয়েছিল, এই সম্পর্ক তারা কোনোভাবেই মেনে নেবে না।
পরিবারের কথা মানতে গিয়ে তখন দুজনই ভেবেছিল সম্পর্কের ইতি টানবেন। কিন্তু মন থেকে মানতে পারেনি। সম্পর্কের ইতি টেনে দিলেও তিন থেকে চার দিন পরই তারা বুঝে গিয়েছিল যে, একে অপরকে ছেড়ে বেঁচে থাকা অসম্ভব। এই প্রেমের ইতি টানা যাবে না।
এদিকে অঙ্কিতার পরিবার এই বিয়ে একেবারেই মানতে চায়নি, কারণ তাদের ধারণা ছিল- বিয়ের পর নিজের ধর্ম-জাতি সংস্কৃতি-নাম সবই বদলে ফেলতে হবে অঙ্কিতাকে। কিন্তু ফইজ এমন নয়, একথা পরিবারকে জানিয়ে দেন অঙ্কিতা। ধর্মের রীতি অনুযায়ী ফইজ চারবার বিয়ে করতে পারে। এতে তাদের মেয়ে কষ্ট পাবেন এটা ভেবেও বারবার এ সম্পর্ক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় অঙ্কিতার পরিবার।
এরপর হঠাৎই একদিন বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে অঙ্কিতার বাড়িতে হাজির হয় ফইজ। অঙ্কিতার বাবাকে বুঝিয়ে বলেন যে, তাদের আদরের মেয়েকে ততটাই আদরে রাখবেন যতটা তারা রেখেছিলেন। কখনোই নিজের সংস্কৃতিকে ছাড়তে হবে না। পরিবর্তন করতে হবে না ধর্মও। এও বুঝালেন, আমিষও খেতে হবে না।
আরো বললেন, ধর্মে যেহেতু চারবার বিয়ে করার অনুমতি দেয়া হয় পুরুষদের, তাই চারবারই অঙ্কিতাকেই বিয়ে করা হবে। এমন আশ্বাসও সেদিন দিয়েছিল ফইজ। কিন্তু তাও মেনে নেয়নি অঙ্কিতার পরিবার।
এরপর একটি রাম মন্দিরে গিয়ে ফইজ ও অঙ্কিতা বিয়ে করে। আইন মেনেই তারা বিয়ে করে।বন্ধুদের সঙ্গে এই আনন্দ ভাগ করার জন্য দুজন গোয়ার সমুদ্র সৈকতে বন্ধুদের নিয়ে যায়। আর ফইজ তার কথা রেখে অঙ্কিতাকেই চারবারই বিয়ে করল।
এরই মধ্যে তাদের বিয়ের দুবছর কেটে গেছে। কিন্তু দুজনের কাউকেই নিজের ধর্ম ও সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে হয়নি। এর মধ্যে অঙ্কিতার পরিবারও ফইজকে স্বাভাবিক করে নিয়েছে। তাই আজ একই বাড়িতে ঈদ আর দিপাবলী একসঙ্গে পালিত হয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।