জুমবাংলা ডেস্ক : সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে চলন্ত বাসে ধর্ষণচেষ্টার শিকার সেই কলেজছাত্রী এখনও স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেননি। ভয় আর আতঙ্ককে দূরে ঠেলে দিতে পারছেন না কিছুতেই। সেদিনের ভয়াবহতার কথা মনে হলেই কেঁদে উঠছেন।
গত ২৬ ডিসেম্বরের ওই ঘটনায় টানা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ধাকার পর গত বৃহস্পতিবার বিকেলে দিরাই আদালতের বিচারক শুভদীপ পালের কাছে ২২ ধারায় জবানবন্দি দেন তিনি। পরে তাকে মা-বাবার কাছে দেন আদালত।
গণমাধ্যমকে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন কোর্ট ইন্সপেক্টর আশেক সুজা মামুন।
এদিকে ধর্ষণচেষ্টার ঘটনায় বাসচালক শহিদ মিয়াকে আটক করে ঢাকায় নিয়ে এসেছে সিআইডি পুলিশ। গতকাল দুপুরে তাকে নিয়ে রওনা দেয় তারা।
কলেজছাত্রীর চাচা বলেন, ‘২২ ধারায় জবানবন্দি দেয়ার আগে পুলিশ সুপার মিজানুর রহামানের কাছেও ওই দিনের ঘটনার বর্ণনা দেন তার ভাতিজি। সে সময় পুলিশ সুপার ঘটনা জানতে চাইতেই কাঁদতে থাকেন মেয়েটি।’
কাঁদতে কাঁদতে মেয়েটি জানায়, ‘বোনের জামাই সিলেটের লামাকাজি থেকে তাকে বাসে তুলে দেন। লোকাল বাস ছিলো সেটি। দিরাইয়ে পৌঁছার কয়েক কিলোমিটার আগেই বাসে কোনো যাত্রী ছিলেন না। চালক গাড়ি চালানোর দায়িত্ব হেলপারকে দিয়ে আসন থেকে উঠে আসে তার পাশে।’
‘একপর্যায়ে চালক শরীরে হাত দিলে তিনি চিৎকার দিয়ে হেলপার- কন্ডাক্টরের সাহায্য চেয়ে বলেন, চালক এমন আচরণ করছেন, আপনারা কি দেখছেন না। দয়া করে তাকে আটকান। তারা দুজনের কেউই তার আকুতিতে সাড়া দেননি। মেয়েটির হাতের মোবাইল ফোন ও ব্যাগ কেড়ে নেয় চালক। দুজনের মধ্যে টানাহেঁচড়া শুরু হয়। অনেক চেষ্টা করে চলন্ত বাস থেকেই লাফিয়ে পড়ে মেয়েটি।’
মেয়েটির চাচা আরো বলেন, ‘বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে তার ভাতিজি বাবা মা ও ভাইবোনের সঙ্গে থাকলেও এ প্রসঙ্গে কেউ কিছু বললেই কাঁদতে থাকেন। এজন্য কাউকেই এ বিষয়ে কিছু বলতে দিচ্ছেন না তারা।’
প্রসঙ্গত, গত শনিবার সন্ধ্যায় উচ্চমাধ্যমিক প্রথম বর্ষের ওই ছাত্রী সিলেট থেকে বাসে করে দিরাই আসছিলেন। সুজানগর এলাকায় অন্য যাত্রীরা নেমে গেলে চালক ও তার সহকারী ১৮ বছর বয়সী ওই কিশোরীকে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। নিজেকে রক্ষা করতে গিয়ে বাস থেকে লাফ দিয়ে আহত হন ওই কিশোরী।
স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে দিরাই হাসপাতালে পাঠায়। সেখান থেকে চিকিৎসক তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।
এ ঘটনায় ওই কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে ২৬ ডিসেম্বর রাতে একটি মামলা করেন। মামলায় বাসচালক, চালকের সহকারীসহ অজ্ঞাতনামা তিনজনকে আসামি করা হয়। আসামিদের মধ্যে সেই বাসের চালক ও হেলপারকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।