বিশ্বের প্রথম প্রোগ্রামেবল কম্পিউটার তৈরি করে যুক্তরাষ্ট্র। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষদিকে, ১৯৪৫ সালে সামরিক কাজের জন্য এ কম্পিউটার তৈরি করে দেশটি। এর নাম দেওয়া হয় এনিয়াক (ENIAC)। কথাটির পূর্ণরূপ ইলেকট্রনিক নিউমেরিক্যাল ইন্টিগ্রেটর অ্যান্ড কম্পিউটার। এনিয়াক প্রজেক্টের আওতায় এই কম্পিউটার তৈরির কাজ শুরু হয় ১৯৪৩ সালে।
এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থাপন করা হয় ১৯৪৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি। সে কালের হিসেবে এটি তৈরি করতে প্রায় ৫ লাখ ডলার খরচ হয়েছিল। সেখান থেকেই আধুনিক কম্পিউটারের সূচনা হয়।
প্রায় ৩০ টন ওজনের এই এনিয়াক প্রথম ব্যবহার করা হয় ১৯৪৫ সালের ১০ ডিসেম্বর। এরপর ১৯৪৬ সালের জুলাই মাসে মার্কিন সেনাবাহিনীর হাতে ছেড়ে দেওয়া হয় এনিয়াক। ১৯৫৫ সাল পর্যন্ত সেনাবাহিনীর তদারকিতেই বিশ্বের প্রথম প্রোগ্রামেবল এ কম্পিউটার ব্যবহৃত হয়।
তবে এনিয়াক এখনকার কম্পিউটারের মতো আকারে ছোট ছিল না। এটির দৈর্ঘ্য ছিল প্রায় ১০০ ফুট। ১ হাজার ৮০০ বর্গফুটের একটি বড় কক্ষে এটি স্থাপন করা হয়েছিল। আর এনিয়াক পরিচালনা করতে ১৫০ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে হতো। ১৯৫৫ সালে এর কার্যক্রম প্রায় শেষ হয়ে যায়। তখনও এটি ১৮ হাজার ভ্যাকুয়াম টিউব, ৭ হাজার ২০০টি ক্রিস্টাল ডায়োড, ১ হাজার ৫০০টি রিলে, ৭০ হাজার রেজিস্টার, ১০ হাজার ক্যাপাসিটর ও প্রায় ৫ লাখ কেব্লের সাহায্যে যুক্ত ছিল।
এটিকে বিশ্বের প্রথম প্রোগ্রামেবল কম্পিউটার হিসেবেও বিবেচনা করলেও এর প্রোগ্রামিং ছিল জটিল ও ম্যানুয়াল প্রক্রিয়ার। এর প্রোগ্রাম তৈরি করে চালু করতে কয়েকদিন সময় লাগত। তা সত্ত্বেও এনিয়াক তৎকালীন সময়ে অন্য যেকোনো ডিজিটাল সিস্টেমের চেয়ে আধুনিক ছিল। এটি সেকেন্ডে প্রায় ৫ হাজার সমস্যা সমাধান করতে পারত। অন্য ডিজিটাল ব্যবস্থার চেয়ে যা ছিল প্রায় ১ হাজার গুণ দ্রুত ও নিখুঁত।
শুরুর দিকে এনিয়াকের তথ্য সংরক্ষণের কোনো ব্যবস্থা ছিল না। আইবিএম কার্ডরিডার থেকে ডেটা ইনপুট করে তা আউটপুটের জন্য একটি আইবিএম পাঞ্চ কার্ড ব্যবহার করতে হতো। ১৯৫৩ সালে প্রথমবার ১০০ শব্দের একটি ম্যাগনেটিক কোর মেমোরি সিস্টেম ইনস্টল করা হয় এনিয়াকে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।