জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্পে কমিশনের টাকার ভাগবাটোয়ারা নিয়ে বিভিন্ন কথাবার্তার একটি ফোনালাপ ইউটিউবে ফাঁস হয়েছে। এতে ছাত্রলীগ থেকে পদত্যাগে বাধ্য সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর সঙ্গে জাবি শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের সাদ্দাম হোসাইন ও শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি হামজা রহমান অন্তর বলে ধারণা করা হচ্ছে। রোববার বিকেলে এরকম একটি ফোনালাপ ইউটিউবে পাওয়া গেছে। ফোনালাপটি নিচে হুবহু তুলে ধরা হলো:
গোলাম রাব্বানী: হ্যাঁ অন্তর, কোথায় আছো, টাকা নেওয়ার সময় ছিল কে কে? হামজা রহমান অন্তর: জুয়েল ভাই, চঞ্চল ভাই ও সাদ্দাম ভাই ছিল আরকি।
গোলাম রাব্বানী: টাকাটা দিছে কোথায়? হামজা রহমান অন্তর: ভাই, ম্যামের বাসায়, সাদ্দাম ভাইয়ের সঙ্গে একটু কথা বলেন। আমার পাশেই আছে।
গোলাম রাব্বানী: আচ্ছা দাও দাও! সাদ্দাম হোসাইন: ভাই স্লামুআলাইকুম।
গোলাম রাব্বানী: ওয়ালাইকুম আসসালাম, সাদ্দাম কি খবর ভাই। সাদ্দাম হোসাইন: ভাই খবর তো আপনাকে জানাইছি ভাই, খবর তো ভালো না বেশি একটা। আমি আপনাকে বলছিলাম না ভাই- আমি, তাজ, জুয়েল, চঞ্চল আমরা চারজন ছিলাম ওই মিটিংয়ের সময়। আজ কিছুক্ষণ আগে জাহাঙ্গীরনগর ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে প্রেসরিলিজ দিছে আপনাদের বিপক্ষে।
গোলাম রাব্বানী: সেটা তো দেখলাম। সাদ্দাম হোসাইন: বিষয়টা হচ্ছে ভাই, বামের সঙ্গে সেটিংয়ে গেছে। বৈঠক হইছে বামের সঙ্গে। তারপর বৈঠকে বিচার বিভাগীয় তদন্ত বাদে বাকিগুলা বামের সঙ্গে মেনে নিছে। আর বিচার বিভাগীয় তদন্তের ব্যাপারে মানবে কিনা আগামী বুধবার পর্যন্ত ভাই। তিনদিন সময় দিছে।
গোলাম রাব্বানী: আন্দোলন নিয়া? সাদ্দাম হোসাইন: হ্যাঁ হ্যাঁ হ্যাঁ।
গোলাম রব্বানী: ম্যাম তো বলছে যে আন্দোলনও নাকি আমরা করাচ্ছি। সামথিং লাইক ওরকম কিছু। আন্দোলন কারা করতেছে ওটাও তো আমরা জানি না। আমাদের এটা তো আমরা জানি না। সাদ্দাম হোসাইন: ভাই বিষয়টা হচ্ছে উনি ছাত্রলীগের ওপর দিয়ে সবকিছু করে নিজের ফ্যামিলিকে সেভ করতে চাচ্ছে আরকি। উনি বাঁচতে চাচ্ছেন। আর প্রধানমন্ত্রীর রেফারেন্স দিয়ে অনেকগুলা কথা বলছে আপনার বিপক্ষে, মানে সেন্ট্রাল ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। এবং যুগান্তরে ভাই, নিউজটা কি দেখছেন…….
গোলাম রাব্বানী: ওটা দেখছি, আচ্ছা টাকা যখন দিছিলো তখন তুই ছিলি না! সাদ্দাম হোসাইন: ছিলাম ভাই আমি আর তাজ ছিলাম। এখন আপনি ভাই বলেন। কি করতে হবে আমরা করতেছি। সমস্যা নাই।
গোলাম রব্বানী: তুই আর কে? সাদ্দাম হোসাইন: আমি আর তাজ, আমার বন্ধু ভাই।
গোলাম রাব্বানী: অহ তাজ তাজ, সহ-সভাপতি! তুই হলি জয়েন্ট সেক্রেটারি। টাকাটা কীভাবে! ম্যাডাম দিছিল নাকি অন্য কেউ ছিল? সাদ্দাম হোসাইন: ওইখানে আর কেউ ছিল না। ব্যাপারটা হচ্ছে ম্যাডাম আমাদের সঙ্গে ডিলিংটা করছে। টাকাটা আমাদের হলে পৌঁছায় দিছে।
গোলাম রাব্বানী: ওহ হলে পৌঁছাই দিছে টাকা! সাদ্দাম হোসাইন: হ্যাঁ হ্যাঁ। কথা তো হইছেই। আমি আর জুয়েলসহ তিনজনের সঙ্গেই কথা হইছে।
গোলাম রাব্বানী: কয় টাকা দিছে? সাদ্দাম হোসাইন: আমাদের বলছে হচ্ছে এক কোটি। আমরা বাকিটা জানি না। জুয়েল-চঞ্চলের সঙ্গে আলাদা ডিল হইতে পারে। বাট আমাদের সঙ্গে বসে মীমাংসা……….
গোলাম রাব্বানী: আমি শুনলাম যে ১ কোটি ৬০ লাখ….. সাদ্দাম হোসাইন: ব্যাপারটা হচ্ছে ভাই ৬০ এর টা আমরা জানি না। ওখানে বসে ভাগ করে দিছে ৫০ হচ্ছে জুয়েলের, ২৫ আমাদের আর ২৫ চঞ্চলের।
গোলাম রাব্বানী: ওহ ম্যাডাম ওভাবে ভাগ করে দিছে! জুয়েল ভালো ছেলে ওইজন্য ৫০ আর চঞ্চল ক্যাম্পাসের বাইরে থাকে ওইজন্য ২৫….. সাদ্দাম হোসাইন: চঞ্চল তো ভাই ওই ঝামেলায় আমাদের বাদ দিতে পারে নাই।
গোলাম রাব্বানী: ও সেক্রেটারির টাকাই তোদের দিছে। সাদ্দাম হোসাইন: আমরা বলছি আমাদের ২৫ পারসেন্ট দিতে হবে। চঞ্চলকে ২৫ পারসেন্ট দিতে হবে। আমাদের না জানাইয়া ওদের আলাদা ৬০ লাখ টাকা দিছে। এটা হতে পারে। আমরা ওটা জানি না। আমরা ১ কোটির হিসাব জানি।
গোলাম রাব্বানী: কিন্তু তোমার ম্যাডাম যে এখানে আমাদের নাম জড়াইলো, আমার তো কোনো আইডিয়াই নাই। সাদ্দাম হোসাইন: ভাই উনি খুব নোংরামি করতেছে ভাই। আপনারা ভাই সিদ্ধান্ত নেন। আমাদের কি করা লাগবে আমরা করতেছি।
গোলাম রাব্বানী: তোমাদের কিছু করা লাগবে না। তোমরা সাইলেন্ট থাকো। যেহেতু আপার কানে দিয়েছে, আমিও বুঝতেছি সে নিজে সেফ হওয়ার জন্য নিজের ফ্যামিলিকে সেফ করার জন্য। আরেকটি জিনিস, এই ৬টা কাজ ডিল করছে কে বেসিক্যালি? সাদ্দাম হোসাইন: তার ছেলে, মূলত হচ্ছে তার ছেলে, তার পিএস সানোয়ার ভাই আর হচ্ছে পিডি, আর হচ্ছে তার হাজবেন্ড। এই হচ্ছে চারজন।
গোলাম রাব্বানী: স্বামী, ছেলে, পিএস সানোয়ার ও পিডি নাসির? আগে থেকে ৬টা কোম্পানি রেডি করে রাখছে না! সাদ্দাম হোসাইন: শুরু থেকেই তারা সবকিছু করছে ভাই। টেকনিক্যাল কমিটিতে ওরা ছিল।
গোলাম রাব্বানী: টেকনিক্যাল কমিটিতে ওরা ছিল! না না ওরা তো থাকতে পারে না। এটার নিয়ম নেই। সাদ্দাম হোসাইন: কথা হলো উনিতো সবাইকে ফেরত টেরত পাঠালো না! ছিনাই নিচ্ছিলো। তখন আমরা বললাম সবাইকে ড্রপ করাতে দিতে হবে। তখন সবাইকে ড্রপ করাতে দিল। কিন্তু কাজ হচ্ছে………………………… হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল ওটা নাটক ছিল। শিডিউল বিক্রির টাইমে তিনি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ইচ্ছে করে। যেন কেউ যোগাযোগ করতে না পারে।
গোলাম রাব্বানী: ওহ আচ্ছা আচ্ছা। শিডিউল বিক্রির টাইমে সে হাসপাতালে ভর্তি হইছে ইচ্ছা করে? সাদ্দাম হোসাইন: হ্যাঁ ভাই।
গোলাম রাব্বানী: তুই জানলি কেমনে এইটা? সাদ্দাম হোসাইন: শিডিউল বিক্রির সময় উনি হাসপাতালে ছিলেন। সিডিউল বিক্রি শেষ উনি……………
গোলাম রাব্বানী: আমি তোর সঙ্গে কথা বলবোনি প্রয়োজন হলে। ম্যাম আমাদের সম্পর্কে যা মিথ্যাচার করলো!
সাদ্দাম হোসাইন: আমি ফোন দিলে ভাই…………..
গোলাম রাব্বানী: আচ্ছা। থ্যাংক ইউ থ্যাংক ইউ
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।