জুমবাংলা ডেস্ক : কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি আর ভারত থেকে নেমে আসা ঢলে ময়মনসিংহের পর এবার নেত্রকোনার নিম্নাঞ্চল ডুবে গেছে। ভেঙে গেছে জারিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধ। এতে কংস পাড়ের বাড়ি-ঘর ও সড়ক তলিয়ে গেছে। ডুবে গেছে রেল লাইনও। দুর্গাপুর, পূর্বধলা ও কলমাকান্দা সদরের প্রায় অর্ধলক্ষ মানুষ হয়ে পড়েছে পানিবন্দি।
রোববার (৬ অক্টোবর) সকাল থেকে পূর্বধলা উপজেলায় নাটেরকোনা গ্রামে কালিদাস বাঁধের ওপর দিয়ে পানি গড়িয়ে জারিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধ হুমকির মুখে পড়ে। দুপুর থেকে ২৬ আনসার ব্যাটালিয়নের সদস্যরা স্থানীয়দের সহায়তায় মাটি কেটে ব্যাগে ভরে বাঁধ রক্ষার চেষ্টা করে।
এদিকে যেসব এলাকার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন সেসব বাড়ি-ঘর ছেড়ে আসবাবপত্র বাঁধের ওপর সড়কে নিয়ে আসা হয়। দিনভর নাওয়া-খাওয়া বাদ দিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য লড়াই করে মানুষ। কিন্তু সন্ধ্যার দিকে শেষ রক্ষা হয়নি। বাঁধ ভেঙে বিস্তর ফসলি জমি ডুবিয়ে দেয় কংসর পানি।
জানা গেছে, নাটেরকোনা গ্রামের যেসব বাড়ি ঘরে কোমর পানি হয়ে পরেছে সেই পরিবারে আনসার সদস্যরা ডিম খিচুরি রান্না করে পৌঁছে দিচ্ছে। তবে স্থানীয় প্রশাসনের কোনো লোকজন খোঁজ না নেয়ায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন অনেকেই।
খোদেজা আক্তার নামে এক বাসিন্দা জানান, সারাদিন আসবাবপত্র রক্ষার চেষ্টা করেছেন। পেটে খাবার পড়েনি। পেটের জ্বালায় এখন মুড়ি খাচ্ছেন। কিন্তু সন্ধ্যায় বেড়িবাঁধ ভেঙে সারাদিনের সব পরিশ্রম বৃথা গেছে। এটি তার একার অবস্থা নয়, প্রায় সবাই এ অবস্থায় আছে।
পানিবন্দিরা বলছেন, কংস নদীটি সাবেক আওয়ামী লীগের এমপি ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল ঢাকঢোল পিটিয়ে খনন কাজ উদ্বোধন করেছিল। এ পর্যন্তই শুনেছিলাম। কিন্তু কী করেছে আল্লায় জানে। আজকে নদীগুলোতে পানির ধারণ ক্ষমতা থাকলে এই অবস্থা হতো না। যে বেড়িবাঁধ করেছে সেটা উঁচু করে করলে বা পানি যাওয়ার সব গেট কাজের হলে এইদিন আসতো না।
নেত্রকোনার পূর্বধলা ২৬ আনসার ব্যাটালিয়নের পরিচালক মোহাম্মদ আসলাম সিকদার জানান, তারা সকাল থেকে স্থানীয়দের সহযোগিতায় বাঁধ রক্ষায় কাজ করছেন। পাশাপাশি রান্না করা খাবার দিচ্ছেন। প্রাথমিকভাবে ৫০টি পরিবারের তালিকা করা হয়েছে।
সোমবারও (৭ অক্টোবর) খাবারের ব্যবস্থা করা হবে। পাশাপাশি যাতে কোনো দুর্ঘটনা না ঘটে সেদিকে লক্ষ্য রাখা হচ্ছে। যেখানেই সহযোগিতা লাগছে সেখানেই ঝাঁপিয়ে পড়ছেন আনসার সদস্যরা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।