স্পোর্টস ডেস্ক : জাপানের টোকিওতে ‘দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’ খ্যাত অলিম্পিক গেমস হওয়ার কথা ছিলো ২০২০ সালে। করোনাভাইরাস মহামারিতে রূপ নেওয়ায় পিছিয়ে যায় প্রতিযোগিতা। সূচি অনুযায়ী ২৩ জুলাই পর্দা উঠবে মেগা এই আসরের। অলিম্পিক মানেই সারাবিশ্ব থেকে দর্শকরা উৎসব পালন করতে আসে আয়োজক শহরে। কিন্তু অলিম্পিকের ১২৫ বছরের ইতিহাসে এবার সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম এক গেম দেখতে যাচ্ছে বিশ্বেবাসী।
অলিম্পিকের কথা মাথায় রেখে ১২ জুলাই থেকে টোকিওতে জরুরি অবস্থা চলছে। আগামী ৮ আগস্ট অলিম্পিক শেষ হলেও টোকিও’র জরুরি অবস্থা চলবে ২২ আগস্ট পর্যন্ত। প্রায় দর্শকহীন হতে চলেছে এবারের অলিম্পিক। বিদেশি দর্শকদের জাপানে ঢোকার অনুমতি নেই। স্থানীয় মানুষ কিছু কিছু খেলা দেখতে পেলেও নিষেধ রয়েছে তাঁদের ওপরেও। এ কেমন অলিম্পিকের আসর? যেখানে কোনো উচ্ছ্বাস প্রকাশ করা যাবে না, গান গাওয়া যাবে না, চিৎকার করা যাবে না, মুখে শিস দেওয়া যাবে না। দল বেঁধেও থাকা যাবে না। শারীরিক দূরত্ব মেনে চলতে হবে দর্শকদের। এক কথায় এমন কিছুই করা যাবে না যাতে করোনা সংক্রমণের সুযোগ রয়েছে।
এবারের অলিম্পিকে শুধু দর্শকদের জন্য নয়, ক্রীড়াবিদদেরও মানতে হবে কঠিন বিধি-নিষেধ। জাপানে ঢোকার আগে ৯৬ ঘণ্টার মধ্যে দু’বার করোনা পরীক্ষা করতে হবে। নেগেটিভ রিপোর্ট নিয়েই জাপানে ঢুকতে হবে সবাইকে। গেমস ভিলেজে প্রতি মুহূর্তে তাপমাত্রা পরীক্ষা করা হবে ক্রীড়াবিদদের। নিয়ম অনুযায়ী প্রতিদিন করোনা পরীক্ষা করা হবে।
অলিম্পিকে বড় দেশগুলোর নারী প্রতিযোগীর সংখ্যা বেশি। এই তালিকার শীর্ষে রয়েছে চীন। তাদের ২৯৮ জন নারী এবং ১৩৩ জন পুরুষ প্রতিযোগী। আমেরিকার হয়ে নামবেন ৩২৯ জন নারী এবং ২৮৪ জন পুরুষ প্রতিযোগী। গ্রেট ব্রিটেনের হয়ে নামবেন ২০১ জন নারী এবং ১৭৫ জন পুরুষ প্রতিযোগী। কানাডা দলেও নারীদের সংখ্যা বেশি। ২২৫ জন নারী এবং ১৪৫ জন পুরুষ প্রতিযোগী তাদের। অস্ট্রেলিয়া দলে রয়েছেন ২৫২ জন নারী এবং ২১৯ জন পুরুষ প্রতিযোগী। রাশিয়ার হয়ে খেলবেন ১৮৩ জন নারী প্রতিযোগী এবং ১৪৬ জন পুরুষ। ভারতীয় দলে ৫৬ জন নারী এবং ৭১ জন পুরুষ।
দেশের সংখ্যা কমে গিয়েছে এবারের অলিম্পিকে। ২০১৬ রিও অলিম্পিকে অংশ নিয়েছিল ২০৭টি দেশ। এ বারের অলিম্পিকে অংশ নিচ্ছে ২০৫টি দেশ।
রিও অলিম্পিকে ১১৭ জন ভারতীয় খেলোয়াড় যোগ দিয়েছিলেন। পদক এসেছিলো দুটি। পি ভি সিন্ধু রুপো জিতেছিলেন ব্যাডমিন্টনে এবং সাক্ষী মালিক ব্রোঞ্জ জেতেন কুস্তিতে। এবারেও পদকের জন্য সিন্ধুর দিকে তাকিয়ে থাকবে ভারত। সেই সংগে তিরন্দাজ দীপিকা কুমারীর দিকেও নজর থাকবে। পদকের আশা থাকবে কুস্তিগীর অমিত পঙ্ঘলের থেকেও।
২০২০ সালের আগে অলিম্পিক বাতিল হয়েছিলো তিনবার। প্রতিবারই কারণ ছিলো যুদ্ধ। ১৯১৬, ১৯৪০ এবং ১৯৪৪ সালে বাতিল হয় অলিম্পিক। ১৮৯৬ সাল থেকে আর কোনও বার অলিম্পিক বাতিল হয়নি। ২০২০ সালের অলিম্পিক বাতিল হলো। করোনার কারণে। পিছিয়ে দেওয়া হলো তা ২০২১ সালে।
১৯২০ সালের অলিম্পিকে জার্মানিকে যোগ দিতে দেওয়া হয়নি। প্রথম বিশ্ব যুদ্ধ শুরু করার অভিযোগে জার্মানিকে বাদ দিয়েই অনুষ্ঠিত হয়েছিলো অলিম্পিক। ১৯৬৮ সালের অলিম্পিক কলঙ্কিত হয় বন্দুকের গুলিতে। মেক্সিকোতে অস্ত্রহীন মানুষের উপর গুলি চালানো হয়। টেলিটলকো গণহত্যা নামে যা আজও অলিম্পিকে একটা কালো দাগ।
তবে অলিম্পিকে রক্তের দাগ স্পষ্ট হয়ে ওঠে ১৯৭২ সালে। সে বার মিউনিখ অলিম্পিকে ইজরাইল দলের ওপর হামলা চালায় বেশ কিছু ফিলিস্তিনি। ওই হামলায় নিহত হয় ১১ ইজারাইলি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।