জুমবাংলা ডেস্ক : কামাল-রেজা কমিটি থেকে বেরিয়ে একাংশের আহ্বায়ক কমিটি করা সুব্রত, মন্টু ও সাইয়িদসহ আটজনকে বহিষ্কার করেছে গণফোরাম। দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গ ও ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নের অভিযোগে তাদের বহিষ্কার করা হয়েছে বলে কামালের কমিটির সাধারণ সম্পাদক রেজা কিবরিয়া জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, বহিষ্কারের আগে শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে এই আটজনের কাছে দল থেকে দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হয়েছিল।
শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে জহুর হোসেন চৌধুরী মিলয়নায়তনে গণফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির সভায় তাদের বিরুদ্ধে এই বহিষ্কার আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। এদিন ১২ ডিসেম্বর গণফোরামের জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্তের কথাও জানায় দলটি কামাল হোসেন নেতৃত্বাধীন অংশ।
ওই দুজন ছাড়াও গণফোরাম থেকে বহিষ্কৃত বাকি ছয়জন হলেন- জগলুল হায়দার আফ্রিক, সুব্রত চৌধুরী, খান সিদ্দিকুর রহমান, হেলাল উদ্দিন, লতিফুল বারী হামিম ও আব্দুল হাসিব চৌধুরী। এই ছয়জনের মধ্যে হেলাল উদ্দিন, লতিফুল বারী হামিম, খান সিদ্দিকুর রহমান ও আব্দুল হাসিব চৌধুরীর বিরুদ্ধে আগেই সাময়িক বহিষ্কারাদেশ ছিলো। এখন গণফোরাম থেকে তাদেরকে চূড়ান্ত বহিষ্কার কার হয়।
গণফোরমের গঠনতন্ত্রও বিরোধী কার্যকলাপ ও ‘দলীয় শৃঙ্খলভঙ্গ করার অভিযোগে বিষয়ে পাঠানো শোকজ নোটিসের জবাব না দেওয়ায়, মোস্তফা মহসিন মন্টু, আবু সাইয়িদ, সুব্রত চৌধুরী ও জগলুল হায়দারকে দলের প্রাথমিক সদস্য পদ থেকে বহিষ্কারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গণফোরামের সদস্য মোশতাক আহমদ সভার সিদ্ধান্ত পড়ে শুনালে এর বিরোধীতা করেন মহানগর গণফোরামের হারুন তালুকদার। তিনি দাঁড়িয়ে বলেন, আমি এসব সিদ্ধান্ত সমর্থন করি না।’
গণফোরামের রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক বাস্তবতায় সংগঠনকে শক্তিশালী, গতিশীল করার প্রয়াসে ঘোষিত আগামী ১২ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় কাউন্সিল সভার সভাপতি, সাংসদ মোক্তাদির খান বলেন, একজন এই সিদ্ধান্তের বিরোধীতা করলেও সংখ্যাঘরিষ্ঠের সমর্থনে সব সিদ্ধান্ত পাস হল।
সভায় মোক্তাদির আরো বলেন, যারা দলীয় শৃঙ্খলা মানেন না, দলীয় সিদ্ধান্ত মানেন না, সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কথা শুনেন না। এই অবস্থায় একটি সংগঠন চলতে পারে না। গণফোরাম কোনো এজেন্সির পারপাজ সার্ভ করার জন্য গঠিত হয়নি। গত ২৬ বছর দলের ভেতরে একটি চক্র সেকাজটি করছে।’
গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক ড. রেজা কিবরিয়া বলেন, দল বদলের রাজনীতি অনেক হয়েছে গণফোরামে। এক দল ছেড়ে আরেক দলে যাওয়ার ঘটনা নতুন নয়। কিন্তু দলকে ছেড়ে দলের ক্ষতি করার চেষ্টা করাটা এটা একটু অন্যরকম ব্যাপার। এসব বিষয় কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।
‘তারা যে কি প্রকৃতির মানুষ, সবাই এখন আন্দাজ করতে পারছি, এটা প্রকাশ্যে চলে এসেছে। ওদেরকে নিয়ে আর কিছু আমি বলতে চাই না। দলীয় প্রধানের সাথে তাদের চিন্তা ধারার মিল ছিল না। যখন এই মানুষগুলো ড. কামাল হোসেনকে নিয়ে কটূক্তি করেছে, তখন গণফোরামে তাদের স্থান হতে পারে না। ড. কামাল শুধু দলেরই নয় এই এই দেশের সর্বজন শ্রদ্ধেয় গুণীজন, জাতির বিবেক। ’ নিজের বক্তব্যে দলকে আরো শক্তিশালী ও সুসংগঠিত করার কথা বলেন গণফোরোমর সাধারণ সম্পাদক।
গত বছরের ২৬ এপ্রিল গণফোরামের বিশেষ কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়েছিলো গুলিস্তানের মহানগর নাট্যমঞ্চে। সেই কাউন্সিলে ড. কামাল হোসেন সভাপতি ও ড. রেজা কিবরিয়া সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। গত ২০১৯ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে গণফোরামের একদল নেতাকর্মীকে নিয়ে বর্ধিত সভায় ২৬ ডিসেম্বের গণফোরামের কাউন্সিল অনুষ্ঠানের ঘোষণা দেন।
ওই সভার সভাপতি অবিভক্ত দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু দলের শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে অবিভক্ত দলের সাধারণ সম্পাদক ড. রেজা কিবরিয়া, আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মহসিন রশিদ, আওম শফিক উল্লাহ ও মোশতাক আহমেদকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্তও অনুমোদন করা হয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।