জুমবাংলা ডেস্ক : উত্তপ্ত রাজধানীর সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও কবি নজরুল সরকারি কলেজ। এরইমধ্যে ডা. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজে ভাঙচুর চালিয়েছেন বিক্ষুব্ধ দুই কলেজের শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (২৫ নভেম্বর) ১২টা দিকে সড়কে অবস্থান নিয়ে ডা. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজে ভাঙচুর চালান শিক্ষার্থীরা।
এসময় মোল্লা কলেজের গেট ভাঙচুর করে ভেতরে ঢুকে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ার, কম্পিউটার-ল্যাপটপ-ডকুমেন্টসহ মূল্যবান অসংখ্য জিনিস লুটপাট করে নিয়ে যেতে দেখা যাচ্ছে কবি নজরুল সরকারি কলেজ ও সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থীদের।
এ অবস্থায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে ডেমরার এই কলেজটি। তবে হামলা থেকে রক্ষা পেতে কলেজের গেট বন্ধ করে দিয়েছেন মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থীরা।
এর আগে সকাল থেকেই বিভিন্ন এলাকা থেকে ক্যাম্পাসে জড়ো হতে থাকেন সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থীরা। বেলা ১০টার দিকে তারা লাঠিসোটা হাতে বের হন কবি নজরুল সরকারি কলেজের দিকে। কথা ছিল সেখান থেকে দুই কলেজের শিক্ষার্থীরা এক হয়ে রওনা দেবেন ডা. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের দিকে।
তবে পরিস্থিতি জটিল হওয়ার শঙ্কায় কবি নজরুল কলেজের অধ্যক্ষ সবাইকে শান্ত হয়ে শান্তিপূর্ণ অবস্থানের ঘোষণা দেন। এসময় কবি নজরুলের শিক্ষার্থীদের একাংশ শান্ত হলেও বাকিরা রওনা দেন ডা. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের উদ্দেশে।
তবে জানা গেছে, সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও কবি নজরুল কলেজের শিক্ষার্থীরা মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের উদ্দেশে এক সাথে রওনা হন।
এদিকে রবিবার (২৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় কলেজ দুটির শিক্ষার্থীরা ঘোষণা দেন কলেজ ক্যাম্পাসে ভাঙচুরের প্রতিবাদে সোমবার (২৫ নভেম্বর) বিক্ষোভ মিছিল করার। পাশাপাশি কলেজ ক্যাম্পাস ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে গ্রেফতারে প্রশাসনকে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেন সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (১৮ নভেম্বর) ন্যাশনাল মেডিকেল ইনস্টিটিউট হাসপাতালে চিকিৎসকের গাফিলতিতে বন্ধুর মৃত্যুর অভিযোগে রবিবার দফায়-দফায় সংঘর্ষে জড়ান শিক্ষার্থীরা। মেডিকেল ঘেরাও কর্মসূচি পরে রূপ নেয় সংঘর্ষে। এ সময়, হাসপাতালটির পাশাপাশি সোহরাওয়ার্দী ও কবি নজরুল কলেজেও ভাঙচুর চালানো হয়। ঘটনার সময় পুলিশ উপস্থিত থাকলেও তাদের ভূমিকা নিস্ক্রিয় ছিল বলে অভিযোগ উঠে।
রবিবার দুপুরে ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল ইনস্টিটিউট হাসপাতালে দলে-দলে আসতে থাকেন বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীরা। তাদের অভিযোগ, ডা. মাহাবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থী অভিজিতের চিকিৎসায় গাফিলতি করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এতে সোমবার মৃত্যু ঘটে অভিজিতের। ওই ঘটনার বিচার চাইতে হাসপাতাল ঘেরাও ও ভাঙচুর করেন উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা।
এক পর্যায়ে হাসপাতালের মূল ফটক ছেড়ে সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও কবি নজরুল সরকারি কলেজের দিকে এগিয়ে যান শিক্ষার্থীরা। মৃত্যুর বিচার চেয়ে হাসপাতাল ঘেরাওয়ের কর্মসূচি রূপ নেয় কলেজে হামলায়। এর আগে দুই দফা অবস্থান নিলেও ন্যাশনাল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সোহরাওয়ার্দী কলেজ এবং কবি নজরুল কলেজের শিক্ষার্থীদের তাদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করেছিল।
হামলার সময় ওই দুই কলেজেই পরীক্ষা চলছিল। ভাঙচুর শুরু হলে পরীক্ষার্থীরা এলোপাতাড়ি এদিক-ওদিক ছুটতে থাকেন। প্রায় সাড়ে ৩ ঘণ্টা পর শিক্ষার্থীরা রাস্তা ছেড়ে দিলে জড়ো হতে থাকেন কবি নজরুল ও সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থীরা। হামলা-ভাঙচুরের পাশাপাশি অর্থ লুটপাটের অভিযোগ করেন তারা। উত্তাল হয়ে ওঠে পুরো এলাকা। ঘটনাস্থলে শুরু থেকেই পুলিশের উপস্থিতি থাকলেও সংঘর্ষ ঠেকাতে কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে পুলিশ থাকলেও হামলা ও ভাঙচুরের বিষয়ে তারা অবগত নন বলে জানান লালবাগ জোনের পুলিশ কর্মকর্তা।
দুই কলেজের পাশাপাশি ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল ইনস্টিটিউট হাসপাতালের ভেতরেও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এতে আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।