এবার রাজনৈতিক দল গঠন নিয়ে যে ঘোষণা দিলেন হিরো আলম!
বিনোদন ডেস্ক: সম্প্রতি বগুড়ার দুটি সংসদীয় আসনের উপ-নির্বাচনে অংশ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনেও আলোচনার উত্তাপ ছড়িয়েছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের আলোচিত মুখ আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলম।
ভাইরাল হওয়ার আগে নিজ এলাকায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের সদস্য পদে ভোটে অংশ নিয়ে হেরে যাওয়া হিরো আলম সংসদীয় আসনের উপ-নির্বাচনেও পরাজিত হয়েছেন। তবে, তাতে দমে যেতে রাজী নন তিনি। ইতোমধ্যেই জানিয়েছেন, আগামীতেও সংসদ নির্বাচন করতে চান তিনি।
উপ-নির্বাচনে হিরো আলমের অংশ নেওয়া নিয়ে বাক্য বিনিমিয় চলেছে দেশের বড় দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের মধ্যেও। এতে যোগ দিয়েছেন হিরো আলম নিজেও।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হিরো আলমের অনুসারীদের অনেকের মধ্যেই আবার প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, আগামীতে তিনি কোনো রাজনৈতিক দলে যোগ দেবেন কি-না।
তবে হিরো আলম জানালেন, কোনো রাজনৈতিক দলে যোগদান নয়, ভবিষ্যতে নিজেই নতুন দল গঠনের ইচ্ছা রয়েছে তার।
এখন যেসব রাজনৈতিক দল আছে, সব একই রকমভাবে চলছে উল্লেখ করে তিনি বলছেন, নতুন দল করলে সেখানে পরিবর্তন আনতে চান তিনি। দিতে চান নতুন কিছু।
জার্মানিভিত্তিক গণমাধ্যম ডয়চে ভেলের বাংলা বিভাগের ইউটিউব চ্যানেলে প্রচারিত এক টকশোতে অংশ নিয়ে শুক্রবার (১০ ফেব্রুয়ারি) রাতে তিনি এসব কথা বলেন। ‘
“রাজনীতির সংস্কৃতি ও হিরো আলম” শিরোনামের টকশোতে উপস্থাপক ডয়েচে ভেলে বাংলা বিভাগের প্রধান খালেদ মুহিউদ্দীন হিরো আলমের কাছে জানতে চান, হিরো আলমের রাজনৈতিক লক্ষ্য কী? কোনো জোটে বা রাজনৈতিক দলে যোগ দেবেন কি-না? সরকার বা বিরোধী দলে যোগ দেওয়ার জন্য তার সঙ্গে কেউ কোনো যোগাযোগ করেছেন কি-না?
জবাবে হিরো আলম বলেন, “আমি সব সময় জনসেবা করা পছন্দ করি। সেই উদ্দেশ্য থেকেই রাজনীতি করা। ভোটের আগে বা পরে বড় কোনো রাজনৈতিক দল এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের যোগাযোগ করেনি। কোনো দলে যোগ দিব কি-না, এখন পর্যন্ত ঠিক করিনি।”
নিজের কোনো নতুন রাজনৈতিক দল করবেন কি-না, এমন প্রশ্নের জবাবে হিরো আলম বলেন, “সবারই স্বপ্ন থাকে দল করার। আমারও নতুন দল করার ইচ্ছা আছে। আমি দল করলে নতুন কিছু নিয়ে আসব। কোনো হিংসা থাকবে না, বিবাদ থাকবে না, সুষ্ঠুমতো ভোট হবে। যার যাকে ভালো লাগবে, তাঁকে ভোট দিবেন। সমাজের জন্য কাজ করবেন।”
কী রকম রাজনৈতিক দল করতে চান, লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য কী হবে, খালেদ মুহিউদ্দীনের এ প্রশ্নের জবাবে হিরো আলম বলেন, “নতুন দল করলে পরিবর্তন কিছু নিয়ে আসব। রাজনৈতিক দলগুলোর দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টাতে হবে। সমাজ পাল্টাতে হবে। দলের কিছু পরিবর্তন আনতে হবে। এখন যেসব রাজনৈতিক দল আছে, সব একই রকমভাবে চলছে। যারা চালাচ্ছেন, একই রকমভাবে চালাচ্ছেন। যিনি ক্ষমতায় আছেন, তার বাবাও আছে, বাবা গেলে ছেলে আছে। তারা কিন্তু দলে আসন ছাড়ছেন না। এতে দলে এবং দেশে কোনো পরিবর্তন খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। দেশের পরিবর্তন করতে গেলে নতুনদের পদ ছেড়ে দিতে হবে। পরিবর্তন আনার জন্য নতুনদের সুযোগ দিতে হবে।”
আপনার মধ্যে কী এমন গুণ আছে যে মানুষ অন্যদের বাদ দিয়ে আপনাকে বেছে নেবেন, এমন প্রশ্নের উত্তরে হিরো আলম বলেন, “আমি সৎ পথে চলি, মানুষের পাশে দাঁড়াই, সহযোগিতা করি। মানুষ এখন ক্যাডার চায় না, সুখে–দুঃখে মানুষের পাশে থাকবেন, এমন মানুষ চায়।”
অনুষ্ঠানের অপর আলোচক ছিলেন ব্যারিস্টার নিঝুম মজুমদার। তিনি অভিযোগ করেন, বগুড়া-৪ উপ-নির্বাচনে বিএনপি কূটচালে হিরো আলমকে ভোট দিয়ে জেতানোর চেষ্টা করেছে। বিএনপির নির্দেশে নেতা-কর্মীরা হিরো আলমের পক্ষে কাজ করেছেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে হিরো আলম বলেন, “বিএনপির একজন নেতা-কর্মী তাকে সহযোগিতা করেছেন, এমন প্রমাণ কেউ দিতে পারলে আর কোনো দিন ভোট করব না। আওয়ামী লীগ-বিএনপি সব দলের লোকজনই আমাকে ভোট দিয়েছে।”
প্রসঙ্গত, ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত বগুড়া-৪ ও বগুড়া-৬ আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী (একতারা প্রতীক) হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন হিরো আলম। এর মধ্যে বগুড়া-৪ আসনে ১৪ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক জাসদের এ কে এম রেজাউল করিমের কাছে ৮৩৪ ভোটে হেরে যান তিনি। এরপর হিরো আলম অভিযোগ করেন, ভোটের ফলাফলে কারচুপি করে তাকে হারিয়ে দেওয়া হয়েছে। বগুড়া-৬ আসনে জামানত হারান তিনি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।