জুমবাংলা ডেস্ক: সিলেট এমসি কলেজের হোস্টেলে স্বামীকে বেঁধে রেখে স্ত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় তোলপাড়ের মধ্যে এবার নগরের দাড়িয়াপাড়া এলাকায় এক কিশোরীকে (১৪) বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছে। মামলাটি করেন কিশোরীর মা। তিনি শুক্রবার (২ অক্টোবর) দিবাগত রাত পৌনে ১টায় সিলেট মহানগরীর কোতোয়ালি মডেল থানায় অভিযুক্ত কিশোর নিজু আহমদ (২০)-কে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন।
অভিযুক্ত নিজু সিলেটের মদন মোহন কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র ও সুনামগঞ্জের জাউয়া বাজারের আব্দুল কাইয়ুমের ছেলে। বর্তমানে নগরের দাঁড়িয়াপাড়া ১৪/বি বাসায় থাকে। নিজু ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত বলেও জানা গেছে।
ধর্ষণের শিকার কিশোরী সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি আছে।
ধর্ষণের শিকার কিশোরীকে ওসিসিতে গিয়ে দেখে এসেছেন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ ও কোতোয়ালী মডেল থানার ওসি সেলিম মিঞা। অভিযুক্ত নিজুকে গ্রেপ্তার করতে পুলিশ অভিযানে নেমেছে বলে জানিয়েছেন ওসি সেলিম।
তিনি শুক্রবার মধ্যরাতে বলেন, কিশোরীর মা বাদি হয়ে রাত পৌনে ১টায় মামলা করেছেন। আসামিকে গ্রেফতার করতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। আমরাও ভিকটিমকে দেখে এসেছি।
জানা যায়, অভিযুক্ত নিজু আহমদ দাঁড়িয়াপাড়া ১৪/বি বাসার বাসিন্দা এবং মদন মোহন কলেজের শিক্ষার্থী। গত ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে নিজু আহমদ বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ওই কিশোরীকে বাসার ছাদে নিয়ে ধর্ষণ করে এবং পরের দিন তাড়িয়ে দেয়। পরে ওই কিশোরী ধর্ষণের বিষয়টি বাসায় জানায়।
ঘটনা জানার পর পরিবারের সদস্যরা তাকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করেন। এরপর রাতে ওই কিশোরীর মা নিজু আহমদকে আসামি করে সিলেট কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নং ৩ (০৩.১০.২০)।
এ ব্যাপারে সিলেট নগরের ২ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বিক্রম কর সম্রাট বলেন, আমিও এরকম একটি অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনাটি সম্ভবত ২/৩ দিন আগে ঘটেছে। অভিযুক্ত কিশোর দাড়িয়াপাড়া এলকায় ভাড়া থাকে। আর কিশোরী নগরের আরেকটি এলাকায় থাকে।
তিনি বলেন, অভিযোগকারী কিশোরীর পরিবার আর্থিকভাবে তেমন স্বচ্ছল নয়, তাই দুদিন আগে ঘটনা ঘটলেও সম্ভবত সমঝোতার চেষ্টা করা হয়েছিলো। আবার তাদের দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিলো বলেও একটি পক্ষ দাবি করেছে। যদিও কোনো কিছুই এখন পর্যন্ত আমি নিশ্চিত নই।
সম্রাট বলেন, অভিযুক্ত কিশোর ছাত্রলীগের মিছিল-মিটিংয়ে যায় বলে শুনেছি। এখন তো সবাই-ই ছাত্রলীগ।
প্রসঙ্গত, গত ২৫ সেপ্টেম্বর এমসি কলেজে স্বামীর সঙ্গে বেড়াতে গিয়ে গণধর্ষণের শিকার হন এক তরুণী। রাত সাড়ে ৮টার দিকে স্বামীর কাছ থেকে ওই তরুণীকে জোর করে তুলে নিয়ে ছাত্রাবাসে ধর্ষণ করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ ঘটনায় ভিকটিমের স্বামী বাদী হয়ে শাহপরান থানায় মামলা করেন। মামলায় ছাত্রলীগের ছয় কর্মীসহ অজ্ঞাত আরো তিনজনকে আসামি করা হয়। এঘটনায় এখন পর্যন্ত ৮ জনকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে সাইফুর রহমান, অর্জুন লস্কর ও রবিউল ইসলাম নামে তিন ছাত্রলীগ নেতা শুক্রবার (২ অক্টোবর) দায় স্বীকার করে আদলতে জবানবন্দি দিয়েছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।