বাংলাদেশের শিক্ষা খাতে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বেতন সংক্রান্ত বিষয়গুলো দীর্ঘদিন ধরে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল। সম্প্রতি, সরকারের নতুন উদ্যোগে পঞ্চম ধাপে প্রায় সাড়ে ১৬ হাজার শিক্ষক-কর্মচারী একসঙ্গে তিন মাসের বেতন ও ঈদুল ফিতরের বোনাস পাচ্ছেন। এই পদক্ষেপ শিক্ষকদের মধ্যে স্বস্তি ও আনন্দের সঞ্চার করেছে।
ইএফটি পদ্ধতিতে বেতন প্রদান: নতুন দিগন্তের সূচনা
সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার (ইএফটি) পদ্ধতিতে বেতন-ভাতা পান। তবে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা এতদিন রাষ্ট্রায়ত্ত আটটি ব্যাংকের মাধ্যমে ‘অ্যানালগ’ পদ্ধতিতে প্রদান করা হতো, যা শিক্ষকদের জন্য ভোগান্তির কারণ ছিল। এই প্রেক্ষাপটে, গত ৫ অক্টোবর বিশ্ব শিক্ষক দিবসে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ঘোষণা দেয় যে, বেসরকারি শিক্ষকদের এমপিওর বেতন-ভাতা ইএফটি পদ্ধতিতে প্রদান করা হবে। এই পদক্ষেপ শিক্ষকদের বেতন প্রাপ্তি প্রক্রিয়াকে সহজ ও দ্রুততর করেছে।
Table of Contents
পঞ্চম ধাপে বেতন ও বোনাস প্রদান: শিক্ষকদের মধ্যে স্বস্তি
পঞ্চম ধাপে প্রায় সাড়ে ১৬ হাজার শিক্ষক-কর্মচারী তিন মাসের বেতন ও ঈদুল ফিতরের বোনাস একসঙ্গে পাচ্ছেন। ইতোমধ্যে তাদের বেতন ও বোনাসের সরকারি আদেশ (জিও) জারি হয়েছে। এডুকেশন ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম (ইএমআইএস) সেলের সিনিয়র সিস্টেম এনালিস্ট খন্দকার আজিজুর রহমান জানান, ‘পঞ্চম ধাপে ১৬ হাজারের বেশি শিক্ষক-কর্মচারী ইএফটি মাধ্যমে বেতন পাবেন। তারা তিন মাসের বেতন একসঙ্গে পাবেন। ইতোমধ্যে বেতনের জিও জারি হয়েছে। এখন আইবাস সফটওয়্যারের মাধ্যমে বেতনের তথ্য হস্তান্তরের কাজ চলছে। চলতি সপ্তাহের মধ্যেই তারা তিন মাসের বেতন এবং ঈদুল ফিতরের বোনাস পাবেন।’
পূর্বের বেতন প্রদান পদ্ধতি: শিক্ষকদের ভোগান্তি
পূর্বে, এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বেতন-ভাতা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ‘অ্যানালগ’ পদ্ধতিতে প্রদান করা হতো। এই প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন পর্যায়ে অনুমোদনসহ সংশ্লিষ্ট কাজে অনেক ক্ষেত্রেই শিক্ষকদের বেতন-ভাতা পেতে দেরি হতো। অনেক সময় পরের মাসের ১০ তারিখের পরও আগের মাসের বেতন-ভাতা পাওয়া যেত না, যা শিক্ষকদের আর্থিক পরিকল্পনায় বিঘ্ন ঘটাতো।
ইএফটি পদ্ধতির সুফল: দ্রুত ও নির্ভুল বেতন প্রদান
ইএফটি পদ্ধতির মাধ্যমে বেতন প্রদান শুরু হওয়ায় শিক্ষকদের ভোগান্তি কমেছে। এখন তারা নির্ধারিত সময়ে বেতন ও ভাতা পাচ্ছেন, যা তাদের আর্থিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করছে। এছাড়া, ইএফটি পদ্ধতি বেতন প্রদানের স্বচ্ছতা ও নির্ভুলতা বৃদ্ধি করেছে।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা: শিক্ষকদের কল্যাণে সরকারের পদক্ষেপ
সরকার শিক্ষকদের বেতন-ভাতা প্রদানে স্বচ্ছতা ও দ্রুততা নিশ্চিত করতে ইএফটি পদ্ধতি চালু করেছে। ভবিষ্যতে এই পদ্ধতির আরও উন্নয়ন ও সম্প্রসারণের মাধ্যমে শিক্ষকদের কল্যাণে কাজ করার পরিকল্পনা রয়েছে। এতে শিক্ষকদের আর্থিক নিরাপত্তা ও পেশাগত সন্তুষ্টি বৃদ্ধি পাবে।
এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বেতন নিয়ে সরকারের এই পদক্ষেপ শিক্ষাক্ষেত্রে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। ইএফটি পদ্ধতির মাধ্যমে বেতন প্রদান শিক্ষকদের আর্থিক স্থিতিশীলতা ও পেশাগত সন্তুষ্টি বৃদ্ধি করবে। সরকারের এই উদ্যোগ শিক্ষকদের মধ্যে স্বস্তি ও আনন্দের সঞ্চার করেছে, যা শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নে সহায়ক হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।