
জুমবাংলা ডেস্ক: রাজনীতিবিদ, প্রকৌশলী, কাস্টমস কর্মকর্তা, ব্যবসায়ীসহ ১০৫ জনের ব্যাংক হিসাবের তথ্য চেয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
গতকাল রবিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটে (বিএফআইইউ) পাঠানো চিঠিতে এ অনুরোধ করেছে দুদক।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, অবৈধ ক্যাসিনো-সংশ্লিষ্টতার মাধ্যমে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান চলমান রয়েছে। অনুসন্ধানে সেসব ব্যক্তির ব্যাংকসংশ্লিষ্ট হিসাব যাচাই করা প্রয়োজন বলে মনে করছে দুদক। সেজন্য দুদক বিএফআইইউর কাছে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের লেনদেনের তথ্য চেয়েছে।
দুদকের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, অবৈধ ক্যাসিনো-সংশ্লিষ্টতার মাধ্যমে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান শুরুর পর কমিশনের কাছে এ ধরনের অনেক অভিযোগ এসেছে। এসব অভিযোগ ও গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য যাচাই করে গতকাল পর্যন্ত মোট ১০৫ জনের নাম বাছাই করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে চলমান অনুসন্ধানে ব্যাংক হিসাবের তথ্য চেয়ে বিএফআইইউর কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
১০৫ জনের তালিকায় অন্তত ছয়জন শুল্ক বিভাগের। তারা হলেন শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. শহিদুল ইসলাম, কমলাপুর আইসিডির কমিশনার আনোয়ার হোসেন, অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসান, সহকারী কমিশনার কানিজ ফারহানা শিমু, সহকারী কমিশনার আবুল কাশেম, সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা তুহিনুল হক। গণপূর্তের বিভিন্ন পর্যায়ের অন্তত ২০ প্রকৌশলীও এ তালিকায় রয়েছেন। এদের মধ্যে রয়েছেন নির্বাহী প্রকৌশলী শওকত উল্লাহ, আবদুল কাদের, আফসার উদ্দিন, ইলিয়াস আহমেদ, স্বপন চাকমা ও ফজলুল হক এবং তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী রোকনউদ্দিন ও আবদুল মোমিন চৌধুরী। বান্দরবানভিত্তিক সিলভান ওয়াই রিসোর্ট ও স্পা লিমিটেডের চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন, পরিচালক ফজলুল করিম চৌধুরী, জামিল উদ্দিন, এসএইচএম মহসিন, উম্মে হাবিবা নাসিমা, জিয়া উদ্দিন আবির ও জাওয়াদ উদ্দিন আবরারের নামও তালিকায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
রাজনীতিবিদদের মধ্যে রয়েছেন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ থেকে অব্যাহতিপ্রাপ্ত নেতা পঙ্কজ নাথ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা কেএস মাসুদুর রহমান, ঢাকা দক্ষিণ যুবলীগের সহসভাপতি মুরসালিক আহমেদ, ঢাকা দক্ষিণ সিটির ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ফরিদ উদ্দিন আহমেদ, ঢাকা দক্ষিণ সিটি ৩৯ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মইনুল হক মঞ্জু, যুবলীগ নেতা কামরান প্রিন্স মোহাব্বত, ঢাকা দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাকসুদুর রহমান, যুবলীগ নেতা আতিয়ার রহমান, কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এমরান হোসেন খান ও সদস্য হেলাল আকবর চৌধুরী। এছাড়া শফিকুল ইসলাম, তসলিম উদ্দিন, কায়সার আহমেদ ও তাজুল ইসলাম চৌধুরীর নামও এ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা রয়েছে।
প্রাথমিকভাবে ক্যাসিনো-সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু হয়। পরে অবৈধ আয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট গণপূর্ত বিভাগের কিছু প্রকৌশলীর বিরুদ্ধেও অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কিছু কর্মকর্তারও ক্যাসিনো-সংশ্লিষ্টতার মাধ্যমে অবৈধ আয়ের তথ্য পাওয়া গেছে। এছাড়া সরকারের অন্যান্য সেবা সংস্থার কিছু কর্মকর্তার নামেও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ পেয়েছে দুদক।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন অবৈধ ক্যাসিনো ও অন্যান্য সামাজিক অপরাধের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে। দুদক ক্যাসিনো-সংশ্লিষ্টতার মাধ্যমে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান শুরু করে ৩০ সেপ্টেম্বর। এজন্য পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেনের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের অনুসন্ধান দল গঠন করে দুদক। পরে আরো দুজনকে অন্তর্ভুক্ত করা হয় দলে। ক্যাসিনো-সংশ্লিষ্টতার মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে এ পর্যন্ত ১৪টি মামলা করেছে দুদক।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।