স্পোর্টস ডেস্ক : যেই নেইমার-এমবাপ্পের সম্পর্ক নিয়ে এতো জলঘোলা, তাদের মেলবন্ধনেই উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগে এবার দুর্দান্ত সূচনা করলো পিএসজি। রেফারির বাঁশিকে মাত্রই ম্যাচ শুরু হয়েছে, স্টেডিয়ামের দর্শকরা হয়তো ঠিকমতো বসতেও পারেনি, ম্যাচের মাত্র পাঁচ মিনিট না গড়াতেই জুভেন্টাসের জালে বল। নেইমারের এসিস্ট থেকে পিএসজিকে এগিয়ে নেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। জুভেন্টাসের বিপক্ষে নিজেদের মাঠে ২- ১ গোলে জয় তুলে নিয়েই চ্যাম্পিয়নস লিগ শুরু করলো ফরাসি ক্লাবটি।
চ্যাম্পিয়নস লিগের নতুন মৌসুমে আজই প্রথম মাঠে নেমেছিলো ইউরোপের ক্লাবগুলো। সবগুলো ম্যাচের মধ্যেও পিএসজি-জুভেন্টাসের হাই ভোল্টেজ লড়াই নিয়েই চলছিলো বেশি আলোচনা। একে তো নিজেদের মাঠে খেলা, তার ওপর মৌসুমের শুরু থেকেই দুর্দান্ত ফর্মে থাকা মেসি-নেইমার-এমবাপ্পেকে নিয়ে গড়া পিএসজির ফরোয়ার্ড লাইন, পার্ক দ্যেস প্রিন্সেসে আজ পরিষ্কার ফেবারিট ছিলো স্বাগতিকরাই।
ম্যাচের শুরুতেই নেইমারের দারুণ অ্যাসিস্টে এমবাপ্পের ঠান্ডা মাথার ফিনিশিংয়ে এগিয়ে যায় পিএসজি। এমবাপ্পের কাছ থেকেই বল পেয়ে ডি বক্সের বাইরে থেকে দারুণ এক লফটেড শটে বক্সের ভিতরে বল ফেলেছিলেন নেইমার, সেই বল থেকেই জুভেন্টাসের গোলরক্ষককে পরাস্ত করতে কোনো সমস্যাই হয়নি এমবাপ্পের।
তারকাসমৃদ্ধ পিএসজি নিজেদের অধরা চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপা জয়ের জন্য যেন এই মৌসুমে আটঘাট বেধেই নেমেছে। আক্রমণ খুব বেশি না হলেও পুরো ম্যাচজুড়ে তুরিনের বুড়িদের ডিফেন্স লাইনে আতঙ্ক ছড়িয়ে গেছে মেসি-নেইমার-এমবাপ্পেরা।
ম্যাচের পাঁচ মিনিটেই দলকে এগিয়ে নেয়ার পর দ্বিতীয় গোলটিও করেন এমবাপ্পে। ২৫ মিনিটে আশরাফ হাকিমির পাস থেকে দুর্দান্ত এক প্লেসিং শটে বল জালে জড়িয়ে ঘরের মাঠের দর্শকদের উল্লাসে মাতান এই ফরাসি তারকা।
এই গোলে অবশ্য একটি কীর্তিও গড়ে ফেলেছেন এমবাপ্পে। চ্যাম্পিয়নস লিগের ইতিহাসে জুভেন্টাসের বিপক্ষে এটিই সবচেয়ে কম সময়ে জোড়া গোলের রেকর্ড। এর আগের রেকর্ডটি ছিলো ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর। রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে ২০১৩ সালে জুভেন্টাসের বিপক্ষে ২৯ মিনিটের মধ্যে জোড়া গোল করেছিলেন রোনালদো।
২-০ গোলের লিড নিয়েই বিরতিতে যায় স্বাগতিকরা। ম্যাচের প্রথমার্ধ্বে পুরো আধিপত্য বিস্তার করে খেলতে থাকে পিএসজি। দ্বিতীয়ার্ধ্বে কিছুটা ঘুরে দাঁড়ায় সফরকারীরা। ম্যাচে পিএসজির নেয়া ১৫টি শটের মধ্যে ৫টি ছিলো লক্ষ্যে, আর জুভেন্টাসের ১৩ শটের মধ্যে ৪টি, যেগুলোর বেশিরভাগই দ্বিতীয়ার্ধ্বে।
প্রথমার্ধ্বে নাজেহাল হওয়া জুভেন্টাস দ্বিতীয়ার্ধ্বে মাঠে ফিরে নিজেদের কিছুটা গোছাতে শুরু করে। ম্যাচের ৫৩ মিনিটে একটি গোল শোধও করে ফেলে তারা। ফিলিপ কাস্তিচের কর্ণার থেকে হেড করে ওল্ড লেডিদের হয়ে গোলটি করেন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্টন ম্যাককেনি।
ম্যাচের বাকি সময়টা আর গোল করতে পারেনি কোন দলই। হ্যাটট্রিকের দুটি সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি এমবাপ্পে।
ম্যাচ শেষে ২-১ গোলের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে ইউরোপ সেরার শিরোপা জিততে মরিয়া পিএসজি। দলটি এই মৌসুমের শুরু থেকে যেভাবে খেলছে, মেসি-নেইমার-এমবাপ্পেকে নিয়ে গড়া ভয়ংকর ফরোয়ার্ড লাইনের ফর্ম বিচারে তাদের জন্য চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতাটা অস্বাভাবিক কিছু নয় বৈকি!
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।