টাইটানিকের পর যদি কোন জাহাজের গল্প মানুষকে আলোড়িত করে থাকে তাহলে তা ছিল এমভি এক্সপ্লোরার। ১৯৬০-এর দশকে এন্টার্কটিকা সমুদ্রপথে ভ্রমণ করা প্রায় অসম্ভব ছিল। কারণ তখনকার সমুদ্র ছিল একেবারে বরকে ঢাকা। একজন সুইডিশ আমেরিকান ব্যবসায়ী এ বিষয়টিকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করেন।
তিনি এমন একটি জাহাজ তৈরি করতে চেয়েছিলেন যা সহজে এন্টার্কটিকায় চলাচল করতে পারে। একটি বিশাল জাহাজ তৈরি করা হয়েছিল যার ওজন ছিল ২৩০০ টনেরও বেশি। এটি লম্বায় ছিল ২৪০ ফুট। আকারের দিক থেকে এটি টাইটানিক থেকে ছোট তবে শক্তির দিক থেকে এটি কোন অংশে কম ছিল না।
এ জাহাজটিকে এমনভাবে নকশা করা হয়েছিল যেন বরফ ভেদ করে সামনে এগিয়ে যেতে পারে। ২০০৪ সালে টরেন্টো ভিত্তিক একটি টুরিস্ট অর্গানাইজেশন জাহাজটিকে থেকে কিনে নেয়। ২০০৭ সালের নভেম্বর মাস। আর্জেন্টিনা থেকে 100 জন যাত্রী নিয়ে এন্টারটিকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করে জাহাজটি।
ওই সময় জাহাজটির ক্যাপ্টেন ছিলেন ৪৯ বছর বয়সী এক মৎস্যজীবী। ওই সময় ক্যাপ্টেন একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেন। তিনি প্রথাগত রুট বাদ দিয়ে নতুন পথে যেতে চেয়েছিলেন। ২২ নভেম্বর সন্ধ্যায় জাহাজটি বরফ ঢাকা অঞ্চলে প্রবেশ করে।
মধ্যরাতে হঠাৎ বিকট শব্দে জাহাজটি থেমে যায়। জাহাজটি ভারী বরফে আটকে যায়। ক্যাপ্টেন জাহাজটিকে মুক্ত করতে সক্ষম হন এবং এটা আবার চলতে শুরু করে। তবে জাহাজে একটি ফাটল দেখা গিয়েছিল এবং পানি ধীরে ধীরে জাহাজে প্রবেশ করেছিল।
ক্যাপ্টেন বিষয়টিকে প্রথমে গুরুত্ব দেননি। একটু পর তিনি বুঝতে পারলেন যে, জাহাজের অবস্থা ভয়াবহ। পানি দ্রুত কেবিনে প্রবেশ করছিল। সমস্ত লাইফ বোট প্রস্তুত করা হয় এবং জাহাজটিকে খালি করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
জাহাজটিকে তার গন্তব্য থেকে ৪৬ কিলোমিটার দূরে ছিল। চার ঘণ্টা ঠান্ডা সহ্য করার পর অন্য একটি জাহাজ এসে তাদের উদ্ধার করে। সমস্ত যাত্রী এবং ক্রু সদস্যদের সফলভাবে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছিল। ওই জাহাজটিকে এখনো সমুদ্রের তলদেশে নিমজ্জিত অবস্থায় রয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।