বাংলাদেশ এখন ডিজিটাল থেকে স্মার্ট হয়েছে। সেই সাথে সকল ব্যবসা এখন অনলাইনে চলে আসছে। ই-ক্যাবের তথ্যমতে বাংলাদেশে এখন প্রায় দুই হাজার ৫০০ ই-কমার্স এবং ৫০ হাজার ফেসবুক বিজনেস পেজ রয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, এই সকল অনলাইন বিজনেস কি তাদের কাঙ্ক্ষিত সেল পাচ্ছে?
আজকে আমরা কথা বলব এই সকল অনলাইন বিজনেসের সেল কিভাবে বৃদ্ধি করবেন এবং অধিক মুনাফা কিভাবে লাভ করবেন তা নিয়ে। এ জন্যই আজ আমরা কথা বলব বাংলাদেশের একজন অতিপরিচিত ডিজিটাল মার্কেটিং এক্সপার্টের সাথে এবং তার কাছ থেকে জেনে নেব ব্যবসায় অধিক মুনাফা লাভের গোপন সূত্র।
এসইও বা সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন হচ্ছে এমন একটি টেকনিক যার মাধ্যমে আপনি একটি ব্যবসার ব্র্যান্ডিং ও এর অর্গানিক ভিজিটর বৃদ্ধি করতে পারবেন। যার ফলে ওই ব্যবসার সেল বৃদ্ধি পাবে ও অধিক মুনাফা লাভ করবে। আমরা বিজনেসের ওয়েবসাইটে এসইওর এই কৌশল ইমপ্লিমেন্ট করে থাকি।
অন্যভাবে বললে, আপনার বিজনেসের কাঙ্ক্ষিত কি-ওয়ার্ড দ্বারা আপনার ওয়েবসাইটকে গুগল সার্চের প্রথম পেজে র্যাংক করানোর কৌশলই হচ্ছে এসইও। যেমন ধরুন আপনি একটি রিসোর্টের মালিক। কেউ যদি গুগলে গিয়ে সার্চ করে “best family resort in Gazipur” তখন যদি আপনার ওয়েবসাইট প্রথম দিকে র্যাংক করে তাহলে কিন্তু আপনি খুব সহজেই এখন টার্গেটেড কাস্টমার পেয়ে গেলেন, যিনি সত্যিকার অর্থে আপনার সার্ভিসটি নিতে আগ্রহী। এই যে প্রক্রিয়াতে আপনি এই কাস্টমারকে পেলেন এটাই হচ্ছে অর্গানিক এসইও।
এবার আসুন আমি কিছু তথ্য দিয়ে আপনাদের এসইওর গুরুত্ব বুঝিয়ে দিচ্ছি :
১. গুগলে প্রতিদিন ৮.৫ বিলিয়নের বেশি মানুষ সার্চ করে অর্থাৎ কোনো সার্ভিস, প্রডাক্ট বা কোনো তথ্য জানতে সার্চ করে।
২. এই সার্চের ৪৬% মানুষ কোনো না কোনো লোকাল প্রডাক্ট কিনতে বা সার্ভিস নিতে গুগলে যায়।৩. ৬৮% মানুষ তাদের অনলাইন এক্সপেরিয়েন্স শুরুই করে সার্চ ইঞ্জিনের মাধ্যমে।
৪. এসইওর মাধ্যমে অর্গানিক সোশ্যাল মিডিয়ার থেকে ১০০০%-এরও বেশি ট্রাফিক পাওয়া সম্ভব।
৫. এসইওর মাধ্যমে আপনি যে ভিজিটর পাচ্ছেন সেখানে থেকে সাকসেসফুল কনভার্সন রেট ১৪.৬%-এর বেশি।
আশা করছি এ তথ্যগুলো যথেষ্ট যে কেন আপনার বিজনেসের ওয়েবসাইট থাকতে হবে এবং শুধু ওয়েবসাইট থাকলেই হবে না, তার এসইও করতে হবে। যদি আপনি আপনার টার্গেট কাস্টমারকে পেতে চান তাহলে। আপনার ওয়েবসাইটের প্রতিটি পেজ বা পোস্টের টাইটেল যখন দেবেন তখন চেষ্টা করবেন, কী লিখে ভিজিটর আপনার এই পেজটি সার্চ করতে পারে সেটি টাইটেলে দেওয়ার চেষ্টা করুন।
যেমন―আপনি ক্লিনিং সার্ভিস দেন, আপনার একটি পেজ আছে কার্পেট ক্লিনিং নিয়ে। তাহলে আপনি একটু গুগলে চলে যান এবং লিখুন “carpet cleaning”, লক্ষ করুন গুগল আপনাকে আরো কিছু বিষয় অটো-সাজেস্ট করবে, “carpet cleaning services”, “carpet cleaning services near me” এই রকম। এগুলো থেকে আপনি একটি আইডিয়া পেয়ে গেলেন যে কী লিখে মানুষ আপনাকে খুঁজতে পারে। এখন আপনি আপনার ওয়েবপেজের টাইটেলটি তৈরি করুন : “Carpet Cleaning Service in Dhaka”, দেখুন এখানে আপনার সার্ভিস ও লোকেশন সব কিছুই আছে।
আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারি, আপনি এই সামান্য পরিবর্তন যদি আপনার টাইটেলে করেন তাহলেই আপনার পেজের র্যাংক ইমপ্রুভমেন্ট করবেন, ইনশাআল্লাহ। আর যদি কম্পিটিশন কম হয় তাহলে প্রথম পেজেও চলে আসতে পারে। আর একটি বিষয় মনে রাখবেন, আপনার ওয়েবসাইটের প্রতিটি পেজের টাইটেল অবশ্যই ইউনিক হতে হবে।
আপনার ওয়েবসাইটের প্রতিটা পেজ বা পোস্টে এভাবে কি-ওয়ার্ড বের করে সেই কি-ওয়ার্ডগুলো দিয়ে কিছু কন্টেন্ট লিখে সেটি পেজে রাখুন। এতে আপনার পেজের ভ্যালু বাড়বে। আপনার পেজে সার্ভিস বা প্রডাক্টের সাথে মিল রেখে ছবি ব্যবহার করুন এবং প্রতিটি ছবির “alt text” দিয়ে দিন ওই কি-ওয়ার্ড দিয়ে। এই কাজটি আপনি করতে না পারলেও আপনার ডেভেলপারকে বলুন, উনি বুঝে কাজটি করে দেবেন।
সত্যিকার অর্থে এসইও কৌশল বলতে আরো অনেক কিছুকেই বোঝায়। কিন্তু আমি এখানে শুধু অন-পেজ এসইওর তিনটি কাজ আপনাকে করতে বললাম, যেটি সঠিকভাবে করলে অবশ্যই আপনি কিছুটা হলেও ইমপ্রুভমেন্ট দেখবেন ইনশাআল্লাহ।
প্রতিটি কাজের জন্য দক্ষ লোক প্রয়োজন, তেমনি আপনার ব্যবসার উন্নতির জন্য আপনার এসইও সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। যাতে আপনি কোনো প্রতিষ্ঠান বা প্রফেশনাল দিয়ে যদি কাজটি করিয়েও নেন তাহলেও যেন আপনি বুঝতে পারেন কাজটি কতটুকু হচ্ছে।
SEO In The Age Of AI: Build AI Best Practices (searchenginejournal.com)
আপনি কোনো ভালো এসইও এজেন্সি দ্বারা কাজটি করিয়ে নিন, কারণ প্রফেশনাল দিয়ে কাজটি করলে আপনি অনেক দিনের জন্য ভালো একটি পজিশন পেয়ে যাবেন গুগলে। আরেকটি বিষয় মনে রাখবেন, এসইও অল্প দিনের কোনো কাজ না, আপনার বিজনেস যত দিন থাকবে এসইও তত দিন আপনার প্রয়োজন। তাই শুরুতে সর্বনিম্ন ১২ মাসের টার্গেট রেখে কাজ করতে পারেন। এতে ভালো ফল পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।