জুমবাংলা ডেস্ক : চুয়াডাঙ্গায় এসএসসি পরীক্ষার্থী মাহবুবুর রহমান তপুকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা মামলার অন্যতম আসামি ইমদাদুল হক আকাশ (২৩) আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে চুয়াডাঙ্গার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মানিক দাসের আদালতে আত্মসমর্পণ করেন তিনি।
আত্মসমর্পণের পর আকাশের পক্ষে আইনজীবী ইকবাল মাহমুদ জামিন প্রার্থনা করেন। অপরদিকে পুলিশের পক্ষে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. মেফাউল হাসান ইমদাদুলের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। বিচারক উভয় পক্ষের বক্তব্য শোনার পর ১৬ নভেম্বর রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করেন এবং আসামি আকাশকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
ইমদাদুল হক আকাশ চুয়াডাঙ্গা শহরের শান্তিপাড়ার ইউসুফ আলীর ছেলে। তিনি চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত ৪ নম্বর আসামি। মামলার বিবরণে বলা হয়েছে, গত ৭ নভেম্বর যে কয়জন মাহবুবুর রহমান তপুকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করেন, তাঁদের দলনেতা এই ইমদাদুল।
পুলিশ জানায়, ইমদাদুলের নামে এর আগে শহরের কেদারগঞ্জ এলাকার গোলাম হোসেনকে হত্যা এবং আওয়ামী লীগ নেতা আইনজীবী শফিকুল ইসলামকে হত্যাচেষ্টা মামলাসহ অন্তত ছয়টি মামলা রয়েছে। তাঁর নেতৃত্বে গঠিত কিশোর গ্যাং চুয়াডাঙ্গা শহরে বেপরোয়াভাবে একের পর এক অপরাধ ঘটিয়ে চললেও ভয়ে অনেকেই মামলা করতে সাহস পান না। এই গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে অসংখ্য অপরাধের তথ্য–প্রমাণ প্রতিদিন পুলিশের হাতে আসছে। গত ৭ নভেম্বর চুয়াডাঙ্গা শহরের গুলশান পাড়ায় আল-হেলাল মাধ্যমিক ইসলামি একাডেমিতে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠান চলছিল। সেখানে হামলা চালিয়ে মাহবুবুর রহমানকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে এই কিশোর গ্যাং। মুমূর্ষু অবস্থায় হাসপাতালে নেয়ার পরপরই মারা যায় মাহবুবুর। শতাধিক শিক্ষার্থী ও শিক্ষকের সামনে প্রকাশ্যে দিনের আলোয় এই খুনের ঘটনা ঘটিয়ে নিরাপদে এলাকা ছাড়ে হামলাকারীরা।
এই খুনের ঘটনায় নিহতের ভাই শহরের নূরনগর-কলোনিপাড়ার বাসিন্দা মাসুদুর রহমান বাদী হয়ে সাতজনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ৩ জনসহ ১০ জনকে আসামি করে ৮ নভেম্বর চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় হত্যা মামলা করেন।
আসামিরা হলেন- শহরের দক্ষিণ গোরস্তান পাড়ার সিহাব আলী, ফার্মপাড়ার ইমন হোসেন, শান্তিপাড়ার রূপক হোসেন, ইমদাদুল হক আকাশ ও সুমন হোসেন, ফার্মপাড়ার সাদিক ও শান্তিপাড়ার নাবিল।
পুলিশ ৮ নভেম্বর এজাহারভুক্ত আসামি সুমন হোসেনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে তুললে তাঁকে বিচারক কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। আর এদিন ইমদাদুল হক আত্মসমর্পণ করেন। পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, এই দুজনের বিরুদ্ধেই হত্যা, হত্যাচেষ্টাসহ বিভিন্ন অপরাধে মোট মামলার সংখ্যা ১৬।
এদিকে, মাহবুবুর হত্যা মামলার এজাহারে হত্যার পেছনে কোনো কারণ উল্লেখ করা হয়নি। তবে স্থানীয় লোকজন জানান, সম্প্রতি নূরনগর-কলোনি এলাকায় আঁকাবাঁকা করে মোটরসাইকেল চালানোকে কেন্দ্র করে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের সঙ্গে মাহবুবুর ও তার বন্ধুদের বিরোধ তৈরি হয়। ধারালো অস্ত্রসহ কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য সিহাবকে পুলিশেও সোপর্দ করা হয়। সেই ঘটনার প্রতিশোধ হিসেবে এই খুনের ঘটনা ঘটতে পারে বলেই অনেকের ধারণা। তবে পুলিশের তদন্ত এগোচ্ছে একটি কিশোর প্রেমকে ঘিরে।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন বলেন, আলোচিত এই হত্যা মামলার বাকি আসামিদের ধরতে একাধিক টিম কাজ করছে। তিনি বলেন, চুয়াডাঙ্গা থেকে কিশোর গ্যাং নির্মূল করতে যা যা করার সবই করা হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।