২০২২ সালে রুশ–ইউক্রেনীয় যুদ্ধ শুরুর পর ওয়াগনার গ্রুপ ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশ নিয়েছে এবং ইউক্রেনীয় সশস্ত্রবাহিনীকে পরাজিত করে একাধিক শহর দখল করেছে। ওয়াগনার গ্রুপকে রুশ সরকার ইতিবাচকভাবে নিলেও গত ২৪ জুন ওয়াগনার গ্রুপ ভয়াবহ বিদ্রোহ করায় বৈশ্বিক রাজনীতিতে আলোড়নের সৃষ্টি হয়।
ওয়াগনার গ্রুপের বিদ্রোহ সম্পর্কে বিভিন্ন বিশ্লেষক বিভিন্ন ধরনের মন্তব্য করেছেন। কেউ কেউ এর জন্য প্রিগোঝিনের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা অধিকারের উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে দায়ী করেছেন। কেউ কেউ মনে করছেন, প্রিগোঝিন রাশিয়ার ভূরাজনৈতিক শত্রুদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে তাদের স্বার্থে কাজ করছিলেন।
কার্যত ওয়াগনার গ্রুপের বিদ্রোহের কোনো ঘোষিত রাজনৈতিক লক্ষ্য ছিল না। প্রিগোঝিন পুতিন বা রুশ সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেননি। কার্যত তিনি তার ভিডিও বার্তাগুলোতে পুতিনের নাম নেয়া থেকেই বিরত থেকেছেন।
রুশ সরকার ও প্রিগোঝিন ঠিক কোন কোন শর্তে সমঝোতায় পৌঁছেছে, সেটি এখনো স্পষ্ট নয়। ওয়াগনার গ্রুপের সাধারণ সদস্যরা শাস্তি পাচ্ছে না — এটি ব্যতীত রুশ সরকার ওয়াগনার গ্রুপকে আর কোনো ছাড় দিয়েছে কিনা, সেটিও এখন পর্যন্ত অজ্ঞাত। প্রিগোঝিন বেলারুশে চলে গেছেন, কিন্তু তার শেষ পরিণতি কী হবে, সেটিও অজানা।
শীর্ষ রুশ রাজনীতিবিদরা এবং রুশ ফেডারেশনের অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন প্রদেশ ও প্রজাতন্ত্রগুলোর সরকারগুলো রুশ কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি তাদের সমর্থন ঘোষণা করে। রুশ সশস্ত্রবাহিনীর খুবই স্বল্প সংখ্যক সদস্য প্রিগোঝিনের আহ্বানে সাড়া দিয়ে বিদ্রোহে যোগ দেয়।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ও ওয়াগনার গ্রুপের এই দ্বন্দ্বে পুতিন শেষ পর্যন্ত প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে সমর্থন করেন। রুশ সূত্রগুলোর ভাষ্যমতে, প্রিগোঝিন বেশ কিছুদিন যাবৎ পুতিনের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছিলেন, কিন্তু সেটি সম্ভব হয়নি।
কার্যত এই বিদ্রোহের ফলে বহু সংখ্যক প্রশ্নের উৎপত্তি হয়েছে, এবং সেগুলোর সিংহভাগেরই উত্তর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু যে বিষয়টি স্পষ্ট, সেটি হচ্ছে: এতদিন সমস্ত রুশ সামরিক প্রতিষ্ঠানের ওপর রুশ সরকারের অন্তত বাহ্যিক যে নিয়ন্ত্রণ ছিল, এই বিদ্রোহের ফলে সেটিতে ফাটল ধরেছে। দীর্ঘমেয়াদে এটি রুশ ও বৈশ্বিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ভয়াবহ প্রভাব ফেলতে পারে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।