জুমবাংলা ডেস্ক: পুঁজিবাজারে প্রকৌশল খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি’র তৃতীয় প্রান্তিকে মুনাফা বেড়েছে। বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা ও ভূ-রাজনৈতিক সংকটসহ নানান নেতিবাচক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যেও ওয়ালটনের ব্যবসায় সুবাতাস বইছে।
চলতি হিসাব বছরের তৃতীয় প্রান্তিকের (জানুয়ারি ২০২৩-মার্চ ২০২৩) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা গেছে।
বুধবার (১৯ এপ্রিল) অনুষ্ঠিত কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ সভায় উক্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর তা প্রকাশ করা হয়।
প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত সমাপ্ত সময়ে (তৃতীয় প্রান্তিক) প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার প্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ৮.২৫ টাকা। এই সময়ে কোম্পানির শেয়ার প্রতি সম্পদ (এনএভিপিএস) পুনর্মূল্যায়ন ব্যতীত দাঁড়িয়েছে ২২৪.৫৭ টাকা এবং পুনর্মূল্যায়নসহ ৩২৭.৮৪ টাকা। তৃতীয় প্রান্তিকে শেয়ার প্রতি নেট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো দাঁড়িয়েছে ৭৩.৭০ টাকা, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৫৫০.৪৯ গুণ বেশি। এছাড়াও চলতি হিসাব বছরের ৩য় প্রান্তিকে কোম্পানির সার্বিক ঋণের পরিমাণ কমেছে।
প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি হিসাব বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত সমাপ্ত সময়ে (তৃতীয় প্রান্তিক) কোম্পানিটির মজুদ-পণ্যের ওপর অধিকতর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা এবং রিসিভেবলস্ এর উন্নতি করার সাথে কোম্পানির সকল খরচের ওপর পর্যবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ এবং সম্পদের সঠিক ব্যবহারের ফলে উল্লেখযোগ্য হারে নেট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো (এনওসিএফপিএস) বৃদ্ধি পেয়েছে। অধিকন্তু সরবরাহকারী ও অন্যান্যদের পেমেন্ট কার্যকারী মূলধন থেকে বিগত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় উল্লেখযোগ্য পরিমাণ কমায় ইতিবাচক এনওসিএফপিএস অর্জন সম্ভব হয়েছে।
এদিকে, চলতি হিসাব বছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই ২০২২-মার্চ ২০২৩) কোম্পানির পরিচালন মুনাফা দাঁড়িয়েছে ২১.০৩ শতাংশ, যা আগের অর্থ বছরের একই সময়ে ছিলো ১৮.৬৭ শতাংশ। এই সময়ে বিক্রয় এবং ঋণের বিপরীতে আর্থিক ব্যয়ের শতকরা হার দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১৪.৭৯ এবং ১৫.৮০ শতাংশ। যা আগের বছরের একই সময়ে ছিলো যথাক্রমে ২.৭৯ এবং ৩.৪২ শতাংশ।
এই সময়ে মার্কিন ডলারের বিপরীতে বাংলাদেশি মুদ্রার মান কমে যাওয়ায় কোম্পানিটি ৩৯২.৭৪ কোটি টাকার সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রার আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। যা পূর্বের অর্থ বছরের একই সময়ে ছিলো মাত্র ৪৪.১৮ কোটি টাকা। তৃতীয় প্রান্তিক শেষে কোম্পানির মোট আর্থিক ব্যয় হয়েছে ৬০৪.৭৯ কোটি টাকা, যা পূর্বের অর্থ বছরের একই সময়ে ছিলো মাত্র ১৪৯.৬০ কোটি টাকা। যার ফলে ২০২৩ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত সমাপ্ত সময়ে (তৃতীয় প্রান্তিক) কোম্পানির কর পরবর্তী মুনাফা দাঁড়িয়েছে ৬.১১ শতাংশ।
এ বিষয়ে ওয়ালটন কর্তৃপক্ষ জানায়, করোনা মহামারি, মহামারি পরবর্তী অবস্থা এবং সাম্প্রতিক সময়ে ইউরোপীয় ভূ-রাজনৈতিক সংকটের ফলে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এতে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য দারুণভাবে বাধাগ্রস্ত হয়। এর ফলে বিশ্বব্যাপী খাদ্য ও জ্বালানিসহ প্রায় সব পণ্যের দাম বৃদ্ধি এবং মূল্যস্ফীতি দেখা দেয়। এতে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে নাজুক অবস্থার সৃষ্টি হয়। এর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচামালের মূল্যবৃদ্ধি এবং পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধি, টালমাটাল বৈশ্বিক বাজার পরিস্থিতি এবং মার্কিন ডলারের বিপরীতে বাংলাদেশি মুদ্রার মূল্যহ্রাসের কারণে কাঁচামাল ও খুচরা যন্ত্রাংশের দাম ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পায়। কিন্তু নানান উদ্ভাবনী পরিকল্পনা ও সময়োপযোগী পদক্ষেপ নেওয়ায় বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দাসহ সকল প্রতীক‚ লতার মধ্যেও মুনাফার ধারা ধরে রেখেছে ওয়ালটন।
যেহেতু বিশ্বব্যাপী অস্বাভাবিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি এবং দুটি ঈদকে কেন্দ্র করে দেশে ইলেকট্রনিক্স পণ্যের চাহিদা ও বিক্রি অনেকগুণ বেড়ে যায়, সেহেতু চতুর্থ প্রান্তিকে প্রতিষ্ঠানটির মুনাফা আরও বৃদ্ধি পাবে বলে কর্তৃপক্ষ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।