একটি নয় বছরের শিশু নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় তার পরিবার এবং সমাজের মধ্যে এক গভীর উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। কিন্তু এর মধ্যেই উঠে এসেছে একটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগ, যা কেবল একটি জেলা বা শহরের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নিখোঁজ শিশুদের খোঁজে সরকারী সচেতনতা বাড়াতে লক্ষ্যবস্তু হতে পারে। গত ২৩ মে গাজীপুরের টঙ্গী এলাকায় নিখোঁজ হওয়া চার বছরের আলিফের ছবি জাতীয় ওয়েবসাইটে দেখা যায়। এটি ছিল আন্তর্জাতিক নিখোঁজ শিশু দিবস উপলক্ষে বিশেষ উদ্যোগ, যেখানে শিশুর ছবি শেয়ার করার মাধ্যমে তার বাবা-মায়ের দুশ্চিন্তা কমানোর জন্য সচেতনতা তৈরির চেষ্টা করা হয়েছে।
Table of Contents
নিখোঁজ শিশুর ছবি ওয়েবসাইটে: বিশেষ উদ্যোগ
অভিযোগ উঠেছিল যে মহিলাদের ও শিশুর বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটটি হয়তো হ্যাক হয়েছে, কারণ উপদেষ্টার ছবি বাদ দিয়ে একটি শিশুর ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। কিন্তু পরবর্তীতে জানা যায়, এটি সরকারের একান্ত সচেতনতার অংশ। বিভাগের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ জাতীয় স্তরে নিখোঁজ শিশুদের সচেতনতা বাড়াতে এই উদ্যোগটির ঘোষণা দেন।
শিশুর তথ্য ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্য
আলিফের ছবি ওয়েবসাইটে উল্লেখ করে লেখা হয়েছিল, “নিখোঁজ শিশুটির নাম আলিফ। পরনে ছিল মেরুন শার্ট। দয়া করে খোঁজ পেলে জানান ও শেয়ার করুন। তার বাবা-মা সন্তানকে খুঁজতে খুব উদ্বিগ্ন।” এই উদ্যোগের মাধ্যমে জনগণের ভেতর সচেতনতা তৈরি করার চেষ্টা করেছেন শারমীন এস মুরশিদ। সরকারের পক্ষ থেকে এই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে যাতে জনসাধারণ নিখোঁজ শিশুদের বিষয়ে সচেতন হন এবং দুই পক্ষের মধ্যে তথ্য আদান-প্রদান হয়।
উপদেষ্টা জানান, “আগামীতে আমরা প্রতিটি সরকারি ওয়েবসাইটে এলাকায় নিখোঁজ শিশুদের ছবির জন্য একটি বিশেষ অপশন সংযোজিত করার পরিকল্পনা করছি।” অর্থাৎ, সরকারের এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিখোঁজ শিশুদের খোঁজে জনগণের মাঝে সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে পরিচালিত হচ্ছে।
জাতীয় নিখোঁজ শিশু রেজিস্ট্রি গঠন: নতুন দিশা
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আলিফের নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি অগ্রগতির একটি বড় উদাহরণ হতে পারে। এই উদ্যোগের আওতায়, সরকারের পরিকল্পনা রয়েছে ন্যাশনাল নিখোঁজ শিশু রেজিস্ট্রি গঠন করার। উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ ‘এটুআই’ (Access to Information) প্রকল্পের মাধ্যমে এই সংস্থাটি কার্যক্রমে যথাযথ সহযোগিতা করবে।
এছাড়া, সরকারী পর্যায়ে ‘অ্যাম্বার অ্যালার্ট’ নামের একটি আন্তর্জাতিক সতর্কতা প্রযুক্তি চালুর প্রক্রিয়াও চলছে, যা নিখোঁজ শিশুদের খোঁজে দ্রুততর পদক্ষেপ গ্রহণে সহায়ক হবে।
গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ও চ্যালেঞ্জসমূহ
এই উদ্যোগের পক্ষে ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন সাইবার টিনস হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। সংগঠনটি ইতোমধ্যে ১০০,০০০ স্বাক্ষর সম্বলিত একটি পিটিশন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কাছে জমা দিয়েছে, যাতে সরকারীয় সহায়তা চাওয়া হয়েছে।
শিশু শান্তি নোবেল জয়ী সাদাত রহমান ও তার সহযোগীরা নিখোঁজ শিশুদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ICMSI (International Child Missing Support Initiative) এর সহযোগিতা চাইছেন। তারা ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে সঠিক সিস্টেম গড়ে তুলতে কাজ করছেন, যাতে এই প্রযুক্তিগুলি কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করা যায়।
বিশেষ অনুরোধ
যদি আপনার কাছে আলিফ বা এই ধরনের অন্য কোন নিখোঁজ শিশুর বিষয়ে তথ্য থাকে, দয়া করে নিকটস্থ থানায় জানান অথবা ৯৯৯-এ ফোন করুন। সচেতনতার জন্য এগিয়ে আসুন, কারণ একসঙ্গে আমরা নিখোঁজ শিশুদের খোঁজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারি।
FAQs:
- নিখোঁজ শিশুর বিষয়ে কীভাবে জানাব?
নিখোঁজ শিশুর সম্পর্কে জানালে নিকটস্থ থানায় যোগাযোগ করুন বা দয়া করে ৯৯৯ নম্বরে ফোন করুন। - নিখোঁজ শিশু দিবস সম্পর্কে জানাবেন?
আন্তর্জাতিক নিখোঁজ শিশু দিবস প্রতিবছর ২৫ মে পালন করা হয়, যা নিখোঁজ শিশুদের বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে। - কীভাবে সরকারের এই উদ্যোগে সহায়তা করতে পারি?
আপনি সামাজিক মাধ্যমে নিখোঁজ শিশুদের ছবি শেয়ার করতে পারেন, এবং স্থানীয় কমিউনিটিতে আলোচনা শুরু করতে পারেন। - অ্যাম্বার অ্যালার্ট কী?
অ্যাম্বার অ্যালার্ট একটি জরুরি সতর্কতা ব্যবস্থা, যা নিখোঁজ শিশুদের দ্রুত খোঁজে সহায়ক হয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।