জুমবাংলা ডেস্ক: সাময়িক বরখাস্ত হওয়া রাজশাহী জেলার ভোলাহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিম রেজা চৌধুরীর (৪৯) সিরাজগঞ্জের তারাশ উপজেলার বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অনশন করছেন এক নারী। বুধবার (২১ জুন) সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত উপজেলার নওগাঁ ইউনিয়নের বানিয়াবহু গ্রামে ওই নারী বিয়ের দাবিতে অনশন করেন।
সেলিম রেজা চৌধুরী একই গ্রামের মৃত মান্নান চৌধুরীর ছেলে। তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার নাচোল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
অনশনে থাকা নারী অভিযোগ করে জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার নাচোল থানায় থাকা অবস্থায় ওসি সেলিম রেজার সঙ্গে ২০২০ সালের দিকে পরিচয় আমার। থানায় মামলা সংক্রান্ত কাজে যাওয়া-আসার সূত্রে তার সঙ্গে ওসির প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরে বিয়ের আশ্বাস দেখিয়ে জেলা শহরের নাখেরাজপাড়ার ভাড়া করা বাসায় নিয়ে ওসি আমাকে একাধিকবার ধর্ষণ করেন। এছাড়াও ওসি আমাকে বিভিন্ন সময়ে হোটেলে নিয়েও ধর্ষণ করেন।
নাচোল থানার পর জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে বিশেষ শাখায় ও ভোলাহাট থানায় কর্মরত থাকাকালেও সেলিম রেজার সেঙ্গে আমার সম্পর্ক ছিল। এক পর্যায়ে ওসির স্ত্রী সম্পর্কের বিষয়টি জানতে পারলে তিনি (সেলিম রেজা) আমার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন।
সম্পর্কের প্রথম দিকে সেলিম রেজা তার স্ত্রীকে ডিভোর্স দিয়েছেন বলে জানান। যার কারণে আমি তার প্রতি সরল বিশ্বাস রেখে এতদূর পর্যন্ত সম্পর্ক নিয়ে গেছি। পরে জানতে পারি, তিনি তার স্ত্রীকে ডিভোর্স দেননি। তিনি যোগাযোগ বন্ধ করতে চাইলেও আমি তাকে পেতে যোগাযোগের চেষ্টা অব্যাহত রাখি। এরই ধারাবাহিকতায় চলতি বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি তাকে বিয়ের দাবিতে ভোলাহাট থানায় যাই। এ সময় আমাকে মারধর করা হয়।
ওসির বাড়িতে অনশনের আগে বিয়ের দাবিতে থানায় অনশন করার কথা জানিয়ে তিনি আরও বলেন, গত ২২ ফেব্রুয়ারি ভোলাহাট থানায় গেলে ওসি নিজে এবং থানার কনস্টেবল ও ড্রাইভার দিয়ে আমাকে মারধর করেন। আমাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি ও মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। বিয়ের দাবিতে অনশন করলে ৫৪ ধারায় পুলিশের কাজে বাধাদানের অভিযোগে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয় আমাকে। সাত দিন কারাগারে থাকার পর ফিরে এসে জব্দ হওয়া মোবাইল থানায় গিয়ে ফেরত নেই। থানা থেকে মোবাইল এনে দেখি, ওসি আমাদের কথোপকথনের অডিও ও ভিডিও সবকিছু মুছে দিয়েছেন। আমাদের সম্পর্কের কথা অস্বীকার করছেন।’
অভিযুক্ত সেলিম রেজা চৌধুরীর বড় ভাই আব্দুল হাই চৌধুরী বলেন, ‘আমার ভাই (সেলিম রেজা) এ বাড়িতে থাকে না। এই মেয়েটা আমার ভাইয়ের জীবন শেষ করে দিয়েছে। ওর অভিযোগের কারণে ভাই ওসির পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত হয়েছেন।’
সেলিম রেজার স্ত্রী ইয়াসমিন পপি বলেন, ‘এই মেয়ের জন্য আমার স্বামী সাময়িক বরখাস্ত হয়েছেন। আমার স্বামী এই মেয়েকে বিয়ে করবে না। এ জন্য যা হয় হোক।’
নওগাঁ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান (মজনু) বলেন, ‘একটি মেয়ে ওসির বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অনশন করছেন। তবে একজন ওসি হিসেবে কর্মস্থলে থাকা অবস্থায় নারী সংক্রান্ত বিষয়ে জড়িয়ে পড়া সত্যিই দুঃখজনক ‘
তাড়াশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম বলেন, এক নারীর অনশনের বিষয়টি আমি জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯ এর মাধ্যমে জানতে পারি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছিলাম। ওই নারী বিয়ের দাবিতে সেলিম সাহেবের বাসায় রয়েছেন। তাকে বিয়ে না করা পর্যন্ত ওই বাড়ি থেকে তিনি যাবেন না বলে জেনেছি।’
সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মন্ডল বলেন, এ বিষয়টি আমার জানা নেই, তবে খোঁজ নিয়ে দেখছি।
আঁখির চিকিৎসায় নিজেদের গাফিলতির কথা স্বীকার করলো হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।