জুমবাংলা ডেস্ক : পুলিশের গুলিতে অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ নিহতের ঘটনায় টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, ইনসপেক্টর লিয়াকত, এসআই নন্দ দুলালসহ পুলিশের ৭ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের এআইজি (মিডিয়া) সোহেল রানা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। একই তথ্য নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার পুলিশ সুপার এ বি এম মাসুদ হোসেন।
পুলিশের ওই সাত সদস্যের মধ্যে তিনজন র্যাবের রিমান্ডে রয়েছেন। এছাড়া বাকি চারজনকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
পুলিশের গুলিতে মেজর সিনহা নিহতের ঘটনায় তার বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ পুলিশের ৯ সদস্যের নামে মামলা করেন। মামলার পর আসামিরা আত্মসমর্পণ করেন। হত্যা মামলার আসামি ওসি প্রদীপ, ইনসপেক্টর লিয়াকত আলী ও এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিতকে সাতদিনের রিমান্ডে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশের অপর চার সদস্যকে জেল গেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দেওয়া হয়।
মেজর সিনহা মো. রাশেদ হত্যা মামলার তদন্তভার বর্তমানে রয়েছে র্যাবের হাতে। ঈদুল আজহার আগের দিন ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার মেরিন ড্রাইভ সড়ক এলাকায় পুলিশের গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান। এ ঘটনায় ওই দিনই মধ্যরাত পেরিয়ে মামলা দায়ের করে পুলিশ। মামলার এজাহারে ৩১ জুলাই রাত ১১টা ১৫ মিনিটে ঘটনার সময় উল্লেখ করা হয়। আর মামলা দায়েরের সময় উল্লেখ করা হয় ১ আগস্ট প্রথম প্রহর, রাত ১টা ৩৫ মিনিট। টেকনাফ থানায় দায়ের করা মামলাটির বাদী উপপরিদর্শক (এসআই) নন্দ দুলাল রক্ষিত।
নিহত সিনহা রাশেদের সহযোগী সাহেদুল ইসলাম সিফাত এই মামলার আসামি।
মামলার এজাহারে বলা হয়, সিনহা মো. রাশেদ খানের গাড়িকে চেকপোস্টে থামতে বলা হলেও সংকেত অমান্য করে চেকপোস্ট অতিক্রমের চেষ্টা করে। গাড়ির গতিরোধ করে গাড়ি থেকে যাত্রীদের হাত উঠিয়ে নামতে বলা হলেও গাড়ির চালকের আসনে বসা ব্যক্তিটি তর্ক শুরু করে। সেনাবাহিনীর মেজর পরিচয় দেওয়া ওই ব্যক্তি কিছুক্ষণ তর্ক করে গাড়ি থেকে নেমে এক পর্যায়ে হঠাৎ তার কোমরের ডান পাশ থেকে পিস্তল বের করে গুলি করতে উদ্যত জন। এ পর্যায়ে পুলিশ নিজেদের জানমাল রক্ষায় সরকারি পিস্তল থেকে চার রাউন্ড গুলি করে।
একই ঘটনায় চার দিন পর ৫ আগস্ট আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে মেজর সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস। মামলায় বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক লিয়াকত আলি ও টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ ৯ পুলিশকে আসামি করা হয়।
এ মামলার অভিযোগে বলা হয়, সিনহা মো. রাশেদ খান ২০১৮ সালে ব্যক্তিগত কারণে সেনাবাহিনী থেকে অবসর নেন। এরপর থেকে তিনি শিল্প ও সংস্কৃতি পরিমণ্ডলে এবং পর্যটন নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। ‘জাস্ট গো’ নামে একটি ইউটিউব চ্যানেল খোলার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। ওই চ্যানেলের জন্য দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে ঘরে তথ্যচিত্র ধারণ করছিলেন তিনি।
মামলার অভিযোগে আরও বলা হয়, ঘটনার দিন টেকনাফ বাহারছড়ার পাহাড়ি এলাকায় ওই দিনের শুটিং শেষ করে মেরিন ড্রাইভ দিয়ে ফিরছিলেন। শামলাপুর চেক পোস্টে পৌঁছালে আসামি পুলিশ সদস্যরা গাড়ির গতিরোধ ধরে। সিফাত হাত উঁচিয়ে বের হয়ে নিজের ও সিনহার পরিচয় দিলে পুলিশ সদস্যরা সিনহাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। এ সময় মেজর সিনহা গাড়ি থেকে হাত উঁচিয়ে বের হলেও তাদের গালিগালাজ চলতে থাকে। একপর্যায়ে পুলিশ পরিদর্শক লিয়াকত গুলি করলে সিনহা মো. রাশেদ মারা যান। -সারাবাংলা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।