জুমবাংলা ডেস্ক: কক্সবাজারে দিন দিন আর্টেমিয়া চাষে আগ্রহ বেড়েই চলছে। লাভের মুখ দেখে অনেকে দ্বিগুণ চাষে নেমে পড়েছেন। আর্টিমিয়া মাঠপর্যায়ে চাষিরা তাদের মাছের ঘেরে খাদ্য হিসেবে ব্যবহারের জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। এটি চিংড়ি ও মাছের খামারে লাইভ ফিড হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
১২ ও ১৩ ডিসেম্বর দুইদিন ব্যাপী কক্সবাজারের একটি হোটেলে আর্টেমিয়া চাষ ও বাজারজাতকরণ বিষয়ক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। সেখানে লাভজনক উপায়ে আর্টেমিয়া চাষের উপর গুরুত্বারোপ করা হয়। ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থায়নে ওয়ার্ল্ডফিশ বাংলাদেশ এ প্রশিক্ষণের আয়োজন করে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. বদরুজ্জামান প্রধান অতিথি হিসেবে দুই দিনব্যাপী এই প্রশিক্ষণের উদ্ভোধন করেন এবং কক্সবাজার বিসিকের ব্যবস্থাপক রেদুয়ানুর রশিদ বিশেষ অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন। আর্টেমিয়া ফর বাংলাদেশ প্রকল্পের টেকনিক্যাল টিম লিডার ড. মোহাম্মদ মিজানুর রহমান সভাপতিত্বে দুই দিনব্যাপী এই প্রশিক্ষণ সম্পন্ন হয়।
প্রশিক্ষণে উপস্থিত ছিলেন পিএম খালী, চৌফলদন্ডি, খামারপাড়া, চকরিয়া উপজেলার বদরখালী, মহেশখালী উপজেলার গোরকঘাটা ও লম্বাঘোনা, টেকনাফ উপজেলার রঙ্গীখালী, পেকুয়া উপজেলার আর্টেমিয়া চাষিরা, এছাড়া, বিভিন্ন চিংড়ি হ্যাচারির বাজার প্রতিনিধি, অর্নামেন্টাল মাছ উৎপাদন ও সরবরাহকারী, এনজিও কর্মকর্তা (মুক্তি কক্সবাজার, সুশীলন, কোস্ট ফাউন্ডেশন), ডিওএফ, বিএসসিআইসি এবং প্রকল্পের কর্মকর্তাবৃন্দ।
প্রশিক্ষণের শুরুতে প্রকল্পের টেকনিক্যাল টিম লিডার মিজানুর রহমান আর্টেমিয়া চাষের গুরুত্ব ও প্রকল্পের অগ্রগতি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘আর্টিমিয়া এখন চিংড়ি ও মাছের খামারে লাইভ ফিড হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে এবং এটি মাঠপর্যায়ে চাষিরা তাদের মাছের ঘেরে খাদ্য হিসেবে ব্যবহারের জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। তিনি আরো বলেন বিভিন্ন উপজেলায় সফল আর্টেমিয়া চাষিদের দেখে নতুন অনেক চাষি আর্টেমিয়া চাষে আগ্রহী হচ্ছে।
কক্সবাজার চৌফলদন্ডির খামারপাড়া এলাকার আর্টেমিয়া চাষি হারুনুর রশিদ বলেন, ‘আমি স্থানীয় হ্যাচারিগুলোতে আমার উৎপাদিত আর্টেমিয়া বিক্রি করেছি এবং আমার নিজস্ব চিংড়ি খামারে খাবার হিসেবে আর্টেমিয়া বায়োমাস ব্যবহার করেছি যা আমার চিংড়ি উৎপাদন প্রায় ১.৫ গুণ বৃদ্ধি করেছে।’
আর্টেমিয়া চাষে আগ্রহী আনসারুল করিম বলেন, ‘আমার গ্রামে আর্টেমিয়া চাষিদের সফলতা দেখে আমি আর্টেমিয়া চাষ পদ্ধতি শিখতে এসেছি এবং এ বছর আমি আর্টেমিয়া চাষ শুরু করবো।’
ফায়াদ এগ্রো ফার্মের জনাব ফায়াদ বলেন, ‘আমি ২০০৬ সাল থেকে আর্টেমিয়া বায়োমাসের ব্যাপারে আগ্রহি হই কিন্তু আমি দেখতে পাই যে, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম সহ অল্প কিছু দেশে আর্টেমিয়া উৎপাদন হয়। সম্প্রতি আমি জানতে পারি কক্সবাজারে ওয়ার্ল্ড ফিশ তাদের একটি প্রকল্পের মাধ্যমে আর্টেমিয়া চাষ শুরু করেছে এবং চাষিরা সফলভাবে উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছে যা আমার মতো রঙ্গিন মাছ ব্যবসায়ীদের জন্য সুখবর, কেননা এর ফলে আমরা এখন দেশীয় বাজার থেকে আর্টেমিয়া বায়োমাস কিনতে পারবো।’
প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারী অতিথিরা বলেন, ‘দরিদ্র লবণ চাষিদের জন্য আর্টেমিয়া চাষ একটি লাভজনক ব্যবসা হিসেবে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করবে এবং আর্টেমিয়া চাষের ব্যাপকতা বৃদ্ধি পেলে তা জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখবে।’
দুই দিনের এই প্রশিক্ষণ ফ্যাসিলিটেট করেন মো. শরিফুল আলম (গবেষণা সহযোগী), ডক্টর শেখ রাজিবুল ইসলাম (গবেষণা সহযোগী), আকতার হোসাইন (মনিটরিং এন্ড ইভ্যালুয়েশন অফিসার), আল-শাহরিয়ার (প্রশিক্ষণ সহকারি), রেজাউল হক (গবেষণা সহকারি), খিন মা উ (গবেষণা সহকারি), আযহারুল ইসলাম সবুজ (গবেষণা সহকারি), আবু জাকারিয়া (গবেষণা সহকারি), হিমাংশু বিশ্বাস (জুনিয়র গবেষণা সহকারি), এবং মোঃ রাকিবুল হাসান (জুনিয়র গবেষণা সহকারি) প্রমুখ। প্রশিক্ষণে আলোচ্চ বিষয়বস্তুর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি বিষয় যেমন, আর্টেমিয়া বায়োমাস হ্যাচিং টেকনিক, আর্টেমিয়া নপলি মজুদ পূর্ব ব্যবস্থাপনা, আর্টেমিয়া নপলি মজুদ ব্যবস্থাপনা, আর্টেমিয়া নপলি মজুদ পরবর্তী ব্যবস্থাপনা এবং আর্টেমিয়া বায়োমাস ও সিস্ট প্রক্রিয়াকরণ এবং বাজারজাতকরণ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।