কক্সবাজার বাংলাদেশের সবচেয়ে পর্যটক সমাদৃত এলাকা। কেবল বাংলাদেশ নয়, সারা বিশ্বের যেসব পর্যটক বাংলাদেশ ভ্রমণে আসেন; তাঁদের বেশির ভাগ কক্সবাজারে আসেন পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকতসহ বাংলাদেশের অন্য অঞ্চলের তুলনায় বেশি পর্যটন সুবিধা কক্সবাজারে পাওয়া যায় বলে। বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট ও হোটেলে আন্তর্জাতিক, প্যান–এশিয়ান, ইউরোপিয়ান, ল্যাটিন, মধ্যপ্রাচ্যের কুজিন ছাড়াও নানা ধরনের সামুদ্রিক খাবার আর বাংলাদেশের সব অঞ্চলের কোনো না কোনো খাবার এখানে মিলবে।
পেঁয়াজু’ গরম ফুঁ দিয়েরে হন ক্যাফের পেঁয়াজু
এটা একটা ছোট্ট ক্যাফের নাম। সুগন্ধা বিচের কাছে হোটেল মিশুকের পাশেই এই ক্যাফে। উল্টো দিকে আছে কক্সবাজার আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম। ক্যাফের বাইরের সজ্জা বেশ রঙিন। সমুদ্রপারের আবহ আছে। ‘পেঁয়াজু’ গরম ফুঁ দিয়েরে হন। চট্টগ্রামের নিজস্ব ভাষায় রাখা হয়েছে এই রেস্তোরাঁর নাম।
মচমচে পেঁয়াজু, সমুচা, শিঙাড়া, চা, লইট্টা ফ্রাই, স্কুইড ফ্রাই মুচমুচে খাবারের সাম্রাজ্য। বিশেষ করে পেঁয়াজুর কথা বলতেই হয়। চালের গুঁড়া ব্যবহারের কারণে এর মচমচে স্বাদ ভালোলাগা তৈরি করে, সঙ্গে থাকা ধনেপাতা আর পুদিনার চাটনি দারুণ লাগবে খেতে। এক বাটি ৫০ টাকা সঙ্গে মালাই চা। কক্সবাজার ভ্রমণে অবশ্যই চেখে দেখার মতো এটি। কেবল এই রেস্তোরাঁ নয়, কক্সবাজারের পথের ধারের দোকানের পেঁয়াজু খুবই মজার।
ফালং জি রেস্তোরাঁর রাখাইন কুইজিন
রাখাইন কুইজিনের অথেনটিক স্বাদ যাঁরা কখনো নেননি কিন্তু নিতে আগ্রহী, তাঁদের জন্য একটা দারুণ এক রেস্তোরাঁ আছে। নাম ‘ফালং জি’। রাখাইন খাবারের সঙ্গে স্থানীয় সব পদের সমন্বয় ভোজনরসিকদের দেবে অন্যতর স্বাদ। কায়াং পাড়া বৌদ্ধমন্দিরের পাশে, বার্মিজ মার্কেটে ফালং জি রেস্টুরেন্ট। ডলফিন পয়েন্ট, সুগন্ধা বা লাবণী পয়েন্ট—যেকোনো জায়গা থেকে অটোরিকশাকে বললেই আপনাকে নিয়ে যাবে বার্মিজ মার্কেট।
তবে রাত ৯টার পর যাবেন না, আটটা নাগাদ মূল পদগুলো শেষ হয়ে যায়। ‘চা পাতার ভর্তা’, পাহাড়ি মোরগ ভুনা, পাহাড়ি হাঁস খাওয়ার ইচ্ছা থাকলেও শেষ হয়ে যাওয়ায় আমি নিয়েছিলাম কোরাল ভাপা, মাশরুম ভাজি, বাঁশকোড়লের ভুনা আর ডাল। খাবার আসতে আসতে ঘুরে দেখলাম রেস্টুরেন্টটি। মিয়ানমারের ঐতিহ্যবাহী সজ্জা ও পণ্যে সাজানো পুরো রেস্তোরাঁ।
স্থানীয় পর্যটকদের পাশাপাশি অনেক বিদেশি পর্যটকও এসেছেন রাখাইন খাবারের স্বাদ নিতে। মন ভালো করে দেওয়া একটা আবহে কিছু সময় পার করলাম। এরই মধ্যে চলে আসে বেতের ঝুড়িতে গরম ধোঁয়া ওঠা ভাত, হালকা ঝোল আর কাঁচা পেঁয়াজসহযোগে কোরাল ভাপা। চিংড়ি আর মাশরুম ভাজির মন কাড়া সুবাসে, ঝাঁজাল কিন্তু জিবে জল আনা বাঁশকোড়ল ভুনা আর ডালও বেশ ভালো। পরিবেশনটাও আকর্ষণীয়, যা আপনার ক্ষুধাকে আরও বাড়িয়ে দেবে।
প্রথমেই শুরু করি মাশরুম–চিংড়ি ভাজি দিয়ে। ফালি করে কাটা নরম মাশরুম আর চিংড়ির মচমচে স্বাদের সমন্বয় খাবারের শুরুতে একটা ভালো লাগার অনুভূতি দেবে স্বাদগ্রন্থিকে। বাঁশকোড়লের ভুনায় ব্যবহার করা হয়েছে বিশেষ ধরনের সস আর তেল যা ঝালপ্রেমীদের আলবত পছন্দ হবে।
ঝাল আমার পছন্দ নয়, তবে ঝাল স্বাদের একটা মজার ব্যাপার খুব ভালো লাগে—প্রথমেই তীব্র ঝালটা জিবের গোড়া ছুঁয়ে সারা মুখে ছড়িয়ে পড়ে; এরপর নাকের জলে চোখের জলে হলেও ভালো লাগতে থাকে। এবার অতি প্রতীক্ষিত পদ কোরাল ভাপার পালা। এর স্বাদ এককথায় দুর্দান্ত, মুখে দিতেই নরম মাখনের মতো গলে যায় মাছ, কাঁটার বালাই নেই, মাছের কড়া গন্ধ তো একেবারেই নেই, পাতলা সাদা ঝোলে কাঁচা পেঁয়াজ, ধনেপাতা আর রসুনের স্বাদ বেশ লাগছিল, খালি ঝোল খেতেও দারুণ ছিল।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।