ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোর (ডিআর কঙ্গো) উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে আলাদা দুটি নৌকাডুবির ঘটনায় অন্তত ১৯৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন কয়েক ডজন।

কঙ্গোর ইকুয়েটর প্রদেশে গত বুধবার ও বৃহস্পতিবার প্রায় ১৫০ কিলোমিটার (৯৩ মাইল) দূরত্বের ব্যবধানে ওই দুটি দুর্ঘটনা ঘটে।
শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) আলজাজিরার প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে, কঙ্গোর মানবিক কার্যক্রমবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় লুকোলেলা অঞ্চলের কঙ্গো নদীতে প্রায় ৫০০ যাত্রী বহনকারী একটি নৌকায় আগুন লাগে। পরে সেটি উল্টে যায়। এতে অন্তত ১০৭ জন মারা যান।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লুকোলেলা অঞ্চলের মালাঞ্জে গ্রামের কাছে ডুবে যাওয়া নৌকাটি থেকে ২০৯ যাত্রীকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।
কঙ্গোর সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এ ঘটনায় এখনো ১৪৬ জন নিখোঁজ আছেন।
এর আগের দিন বুধবার বাসানকুসু অঞ্চলে আলাদা দুর্ঘটনায় একটি মোটরচালিত নৌকা ডুবে যায়। এতে অন্তত ৮৬ জন মারা যান। তাঁদের বেশির ভাগই শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় আরও কয়েকজন নিখোঁজ থাকার খবর পাওয়া গেছে। তবে ঠিক কতজন নিখোঁজ আছেন তা সুনির্দিষ্ট করে জানা যায়নি।
দুটি ঘটনার একটিরও কারণ জানা যায়নি। শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা পর্যন্ত উদ্ধার অভিযান চলছিল কি না, তা-ও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, সক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী ও মালামাল বোঝাই এবং রাতের অন্ধকারে নৌযান চালানোর কারণে বুধবারের ঘটনাটি ঘটে থাকতে পারে। ঘটনাস্থলের কিছু ছবিতে দেখা গেছে, গ্রামবাসী কয়েকটি মরদেহের চারপাশে জড়ো হয়ে আহাজারি করছেন। স্থানীয় একটি নাগরিক সমাজ সংগঠন এ দুর্ঘটনার জন্য সরকারকে দায়ী করেছে। তাদের দাবি, প্রকৃত মৃত্যুর সংখ্যা সরকারি হিসাবের চেয়ে বেশি।
দুর্ঘটনার পরপরই উদ্ধার অভিযান চালানো হয়। নৌবাহিনীর সদস্য ও স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবীরা নদীর তীর ধরে অনুসন্ধান চালান। কর্তৃপক্ষ আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসা, মৃত ব্যক্তিদের পরিবারকে সহায়তা এবং জীবিত ব্যক্তিদের নিজ নিজ গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
কঙ্গোর বিশাল চিরহরিৎ বনসংলগ্ন অঞ্চলগুলোতে যাতায়াতের ক্ষেত্রে নদীপথই মূল ভরসা। এখানকার পুরোনো কাঠের তৈরি নৌযানগুলো বিভিন্ন গ্রামের মধ্যে চলাচলের প্রধান মাধ্যম। সড়কপথ খুবই সীমিত হওয়ায় নদীপথে যাতায়াত তুলনামূলক সস্তাও।
তবে এসব নৌকা ভালোভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা হয় না। যাত্রী ও পণ্যের ভারে নৌযানগুলো প্রায় ভেঙে পড়ার মতো অবস্থায় থাকে। তাই দুর্ঘটনাও ঘটে প্রায়ই। এমন ভ্রমণে সাধারণত লাইফজ্যাকেট থাকে না।
আবার অনেক নৌকা রাতে চলাচল করায় দুর্ঘটনা ঘটলে উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করা জটিল হয়ে যায়। নিখোঁজ বা মৃত অনেককে উদ্ধার করা সম্ভব হয় না। এ ছাড়া দুর্ঘটনাস্থল প্রত্যন্ত এলাকায় হওয়ায় এবং প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের অভাবেও উদ্ধারকাজ প্রায়ই বাধাগ্রস্ত হয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।