আন্তর্জাতিক ডেস্ক : তাঁর আগুনে বক্তব্যের জন্যই তিনি ‘বাংলার অগ্নিকন্য।’ মঞ্চে মাইক্রোফোন হাতে দাঁড়িয়ে বাম শাসনের ‘জগদ্দল পাথর’কে সরিয়ে দিয়েছেন অনেকবার। শেষে ২০১১ সালে রাজ্যে এসেছে ‘পরিবর্তন।’ তবে তার অনেক থেকেই, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কন্ঠ বাংলার রাজনীতিতে ‘ট্রেডমার্ক’ হয়ে রয়েছে। তাঁর বলার ভঙ্গিমায় সেই চিরবিদ্রোহ যেন চিরকালীন। মুখ্যমন্ত্রী হিসাবেও তাঁকে সদর্পে বাঁচিয়ে রেখেছেন মমতা।
বাংলার অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষকও হামেশাই বলেন, মমতা যেন সেই বিরোধী নেত্রী হয়েই থেকে গেলেন। ওর আর মুখ্যমন্ত্রী হওয়া হলো না। সোমবারের পর সেই তাঁরাও যেন একটু দ্বিধায় রয়েছেন। ওইদিন গুরুত্বপূর্ণ দলীয় বৈঠকের পর সাংবাদিক সম্মেলনে মমতার বাচনভঙ্গি দেখে পুরানো ‘দিদি’র সঙ্গে মিল খুঁজে পেলেন না অনেকেই। ‘আগুনে’ মমতার এযেন অন্য রূপ। স্তিতধী , শান্ত , অনাবেগি একেমন মমতা … । সাংবাদিক বৈঠকের প্রথম দিকে নিজের বক্তব্যের এক-একটি শব্দ ধরে-ধরে উচ্চারণ করছিলেন মমতা। যেন কোনও তাড়া নেই। অন্য মমতা যে …।
কিছুদিন আগেই যারা ২১ জুলাই মমতার ভাষণে নজর রেখেছিলেন, তাঁরা ভালোই জানেন, ৫০ মিনিটে কিভাবে আগুন ঝরিয়েছেন দিদি। ‘বাক্যবাণে’ বিদ্ধ করেছেন মোদি থেকে বিজেপি এবং ‘গামছা বাবু’কে। দলেরও অনেকেই তাঁর নিশানায় ছিলেন। সাম্প্রীতিক কালে সাংবাদিক সম্মেলনেও বাক্যবাণে নিশানায় বিরোধীদের এনেছেন। কিন্তু সোমবার থেকেই কি নিজের স্ট্রাটেজি বদলেছেন মমতা? অনেকেই বলছেন, মমতা মিডিয়া পলিসি বানিয়ে ফেলেছেন। মাথা লাগিয়েছেন প্রশান্ত কিশোর। জনসভায় একরকম ভাবে জনতার উদ্দেশ্যে ভাষণ দেবেন মমতা। আবার, সাংবাদিক সম্মেলনে অন্য মমতাকে দেখবেন রিপোর্টাররা। সেখানে স্পষ্ট বক্তা , যুক্তিবাদী নেত্রী রিপোর্টারদের ধরে-ধরে ব্যাখ্যা করবেন বাস্তব পরিস্থিতি। আবার প্রশাসনিক বৈঠকে ‘মুখ্যমন্ত্রী’ মমতার দেখা মিলবে। এই তিন মমতাই যেন পরস্পরের থেকে আলাদা।
অনেকেই বলছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ২০২১ সালে ফের ক্ষমতায় ফেরাতে খেলা শুরু করে দিয়েছেন ‘ভোট গুরু’ প্রশান্ত কিশোর। জানা গিয়েছে, তৃণমূলের হয়ে এবার তিনি সংবাদমাধ্যমকেও সামলাবেন। তাঁর টিমের লোকেরাই মিডিয়া সেল দেখভাল করবেন। সোমবার থেকেই এই কৌশলী পদক্ষেপ করা হয়েছে। এক নতুন মমতাকে দেখার অপেক্ষায় রাজ্য – তাঁর বক্তব্যের ধরণ দেখেই তা পরিষ্কার হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।