আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ৯৪ বছর বয়সে এসে অনেকেই হয়ত তাদের মা-কে স্মরণ করেন। তবে হিউস্টনের ডরোথি উইলিয়ামস সত্যিই ভাগ্যবান। তার মা, এলিজাবেথ ফ্রান্সিস, সবেমাত্র ১১৪ বছরে পা দিয়েছেন। হিউস্টনে মা- মেয়ে দুজনে একসঙ্গে থাকেন। ফ্রান্সিস, ২৫ জুলাই ১১৪ বছরের জন্মদিন পালনের সময়ে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। ফ্রান্সিসের নাতনি, এথেল হ্যারিসন ( ৬৮) দাদির জন্য একটি পার্টির আয়োজন করেছিলেন।
ভ্যানিলা এবং চকলেট কেক নিজের হাতে খাইয়ে দিয়েছিলেন আদরের দাদিকে, উপহার দিয়েছিলেন ফুলের তোড়া। সেইসঙ্গে দাদির ১১৫ বছরের জন্মদিন পালন করার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন ফ্রান্সিসের নাতনি। হ্যারিসন বলেন, ফ্রান্সিসকে দেশের দ্বিতীয় সবচেয়ে প্রবীণ জীবিত সুপারসেন্টেনারিয়ান এবং বিশ্বের সপ্তম সবচেয়ে বয়স্ক ব্যক্তি বলে মনে করা হয়। সুপার সেন্টেনারিয়ান তাঁদের বলা হয় যাঁরা ১১০ বছর বা তার বেশি বেঁচে থাকেন।
জেরোন্টোলজি রিসার্চ গ্রুপ সবচেয়ে বয়স্ক জীবিত ব্যক্তিদের ট্র্যাক করে জানিয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ১১৫ বছর বয়সী এডি সিকারেলি তালিকায় ফ্রান্সিসের ঠিক ওপরে রয়েছেন এবং ১১৬ বছর বয়সী মারিয়া ব্রানিয়াস মোরেরা তালিকায় শীর্ষে রয়েছেন।
হ্যারিসন বলেন, “আমার দাদি ১০৬ বছর পেরিয়ে যাবার পর থেকে আমি প্রতি বছর পার্টির আয়োজন করছি।”এলিজাবেথ ফ্রান্সিস ১৯০৯ সালে লুইসিয়ানাতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন।তিনি যখন ছোট ছিলেন তখন তার মা মারা যান। তাকে এবং তার পাঁচ ভাইবোনকে বিভিন্ন আত্মীয়র বাড়িতে পাঠানো হয়েছিল। ফ্রান্সিস হিউস্টনে গিয়েছিলেন, যেখানে তিনি একজন খালার কাছে থাকতেন । হ্যারিসন বলছেন, কয়েক বছর ধরে, দাদির আরেক বোন তাঁর ঠিক পাশেই থাকছে , যাঁর বয়স ১০৬ বছর। দুই বোন একে ওপরের খুব ঘনিষ্ঠ বলে জানাচ্ছেন হ্যারিসন।
ফ্রান্সিস, একজন একক মা, ১৯৭৫ সাল থেকে হিউস্টনের বুকে একটি কফি শপ চালিয়ে নিজের একমাত্র মেয়ে উইলিয়াম-কে বড় করে তোলেন । হ্যারিসন বলেন, তাঁর দাদি গাড়ি চালাতে জানতেন না , পরিবর্তে তিনি প্রচুর হাঁটতেন। এটি হয়তো তার দীর্ঘ জীবনের চাবিকাঠি। এছাড়াও ফ্রান্সিসের জীবন খুব সংযমী ছিলো। তিনি তাড়াতাড়ি ঘুমোতে যেতেন , তাড়াতাড়ি উঠতেন , কঠোর পরিশ্রম করতেন , পুষ্টিকর খাবার খেতেন এবং দিনের শেষে পরিবারকে সময় দিতেন। ফ্রান্সিস তার নিজের বাগানে প্রচুর সবজি চাষ করতে ভালোবাসতেন। হ্যারিসন বলেন, তাঁর দাদি সবসময় পরিবারের প্রতি বেশি মনোযোগী ছিলেন।লংগেভিকুয়েস্ট, একটি সংস্থা যা বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক ব্যক্তিদের সন্ধান করে , সংস্থার প্রধান নির্বাহী বেন মেয়ার্স বলেছেন, কিছু লোকই সুপার সেন্টেনারিয়ান হবার যোগ্যতা অর্জন করে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এই মুহূর্তে ৩৫ জন সুপারসেন্টেনারিয়ান জীবিত রয়েছেন। মেয়ার্সর মতে , এই ব্যক্তিদের ইতিবাচক মনোভাবই তাঁদের জীবনের চলার পথ সহজ করে তোলে। মায়ার্স ফ্রান্সিসের ১১৪ তম জন্মদিনের অনুষ্ঠানের জন্য বোকা রেটন, ফ্লা. থেকে হিউস্টনে উড়ে এসেছিলেন কারণ তিনি গত কয়েক বছর ধরে তার গল্প অনুসরণ করছেন এবং ব্যক্তিগতভাবে তার সাথে এই বিশেষ দিনটি উদযাপন করতে চেয়েছিলেন । জন্মদিনের একটুকরো কেক মুখে দিয়ে ফ্রান্সিস বলে ওঠেন -” আমি হিউস্টনের সবচেয়ে বয়স্ক জীবিত ব্যক্তি। আমি ঈশ্বরকে এবং সেই সমস্ত লোকদের ধন্যবাদ জানাতে চাই যারা আমাকে ঘিরে রেখেছেন এবং সারা জীবন আমাকে ভালোবেসেছেন। তারাই আমাকে এতটা পথ পাড়ি দিতে সাহায্য করেছেন ।”
সূত্র : ওয়াশিংটন পোস্ট
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।