নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর: গাজীপুরের শ্রীপুরে কনকনে শীত উপেক্ষা করে বোরো ধান রোপণের কাজ করছেন নারীরা। স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে বিঘা হিসেবে চুক্তি করে ধান রোপণের কঠিন কাজ করছেন তাঁরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের সাইটালিয়া টেংরা গ্রামে কনকনে শীতের সকালে বোরো ধান রোপণ করছেন একদল নারী। পুরুষদের পাশাপাশি সমান তালে কাঁদামাটিতে ধানের চারা রোপণ করছেন তাঁরা। শীতের পোশাক পরে কয়েকটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে ধান রোপণের কাজ করছেন নারীরা।
সাইটালিয়া গ্রামের কৃষক জাকির হোসেনের খেতে ধান রোপণের কাজ করছেন মালা বর্মন। কথা হয় তাঁর সঙ্গে। তিনি বলেন, স্বামীর পাশাপাশি নিজেও কঠিন কাজ করছি। প্রথম প্রথম কঠিন মনে হলেও এখন মনে হয় না। নিজের সংসারের আয়-রোজগার বাড়ানোর জন্য এ কাজ করছি। প্রথমে পুরুষেরা অন্যভাবে চিন্তা করত, এখন আর করে না। পুরুষের পাশাপাশি আমরাও সমান তালে এই কাজ করছি। পুরুষেরা সহযোগিতা করছে, উৎসাহিত করছে বলে লেগে আছি।
তিনি আরও বলেন, এক যুগের বেশি সময় ধরে কৃষিকাজ করছি। ধান রোপণ, ধান কাটা, মাড়াই সবই করতে পারি। এ ছাড়া শাকসবজির খেতে কাজ করা হয়।
আরেক নারী কৃষিশ্রমিক রচনা বর্মন বলেন, আমরা নারীরা কয়েকটি দলে ভাগ হয়ে এই এলাকায় সব ধরনের কৃষিকাজ করে থাকি। বোরো ধান রোপণ করছি ২ হাজার টাকা বিঘা চুক্তিতে। কনকনে শীত উপেক্ষা করে কাজ করছি। কষ্টকে কষ্ট মনে করছি না। আমাদের যে উপার্জন হয়, তা দিয়ে আমাদের সন্তানদের পড়াশোনাও সংসার চলে। পুরুষের সমান কাজ করলেও মজুরি তো কিছু কম পাই। কী করব, তবু পেটের দায়ে করছি।
রত্না বর্মন বলেন, প্রথম যখন ধান রোপণের কথা শুনি, তখন আমি নিজেই ভাবতাম এটা পুরুষের কাজ। ছয় বছর ধরে এ কাজ করছি। তো এখন তেমন কঠিন মনে হয় না। কষ্ট তো আছেই, যেকোনো কাজই কষ্টের। শুধু ধান রোপণ নয়, এর কিছুদিন পর ধানখেতের আগাছা পরিষ্কার করব আমরা। সারা বছরই চলে কৃষিকাজ। দিন শেষে ৪০০ বা ৫০০ টাকা পাই।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুমাইয়া সুলতানা বর্না বলেন, পুরুষের পাশাপাশি নারীরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করছেন, নিঃসন্দেহে এটি একটি ভালো বিষয়। আমরা এই কাজকে উৎসাহিত করব।’
তিনি জানান, উপজেলায় এ বছর বোরো ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১১ হাজার ৬৬০ হেক্টর জমিতে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।