ফারুক তাহের, চট্টগ্রাম : চলতি অর্থবছরে (২০২৪-২৫) কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ে এবার নতুন রেকর্ড গড়েছে চট্টগ্রাম বন্দর। অর্থবছরের আরও ১৫ দিন বাকি থাকার পরও ইতোমধ্যে কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ে বন্দর গত অর্থবছরের রেকর্ড অতিক্রম করেছে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে চলতি ১৫ জুন পর্যন্ত আমদানি ও রফতানি মিলিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছে ৩১ লাখ ৭১ হাজার ৭৭৯ টিইইউস (প্রতিটি ২০ ফুট দৈর্ঘ্যের একক হিসেবে)। ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে চট্টগ্রাম বন্দর ৩১ লাখ ৬৮ হাজার ৬৯০ টিইইউস কনটেইনার হ্যান্ডলিং করেছিল। প্রবৃদ্ধি ছিল ৫ দশমিক ৩৬ শতাংশ। এ হিসেবে গত অর্থবছরের চেয়ে ৪ দশমিক ৬৩ শতাংশ বেশি কনটেইনার হ্যান্ডলিং করা হয়েছে।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার প্রায় মাসব্যাপী গণআন্দোলন, ইন্টারনেট শাটডাউন, সড়ক-মহাসড়ক অবরোধ, গণঅভ্যুত্থানের প্রভাব পড়েছিল চট্টগ্রাম বন্দরের সার্বিক কার্যক্রমে। সেসময় প্রায় মাসখানেক বন্দরের কার্যক্রম স্থবির ছিল। আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতার শেষপ্রান্তে ডলার সংকটের কারণে আমদানিতে অলিখিত নিষেধাজ্ঞার কারণেও কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ে ধস নেমেছিল।
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা নেওয়ার পর দ্রুততার সঙ্গে বন্দরে গতিশীলতা ফিরিয়ে আনার কার্যক্রম শুরু হয়। তবে এর মধ্যেও দেশের বিভিন্ন জেলায় আকস্মিক বন্যা, দফায় দফায় পণ্য পরিবহণকারী যানবাহন চালক-শ্রমিকদের ধর্মঘট নিয়ে অস্থির পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হয়েছে বন্দরকে। সর্বশেষ কাস্টমসে কলমবিরতি এবং দুই ঈদের টানা দীর্ঘ ছুটিরও প্রভাব পড়ে বন্দরে। এর পরও ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের শেষভাগে এসে দেখা যাচ্ছে, কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ে আগের সব রেকর্ড ভেঙেছে চট্টগ্রাম বন্দর।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (হারবার ও মেরিন) ক্যাপ্টেন আহমেদ আমিন আবদুল্লাহ জুমবাংলাকে বলেন, ‘পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে চট্টগ্রাম বন্দরে নানামুখী সংস্কার কার্যক্রম চালানো হয়েছে। দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল হওয়ায় আমদানি-রফতানিতে প্রবৃদ্ধি বেড়েছে। সব অ্যাঙ্গেল থেকে সব পক্ষের সহযোগিতার কারণে এবং আমাদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় আমরা কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ে রেকর্ড প্রবৃদ্ধি অর্জনে সক্ষম হয়েছি।’
বন্দর কর্মকর্তারা জানান, নৌপরিবহন উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাখাওয়াত হোসেনের প্রত্যক্ষ নির্দেশনায় বন্দর ব্যবহারকারীদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ এবং রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধ হওয়ায় কনটেইনার ডেলিভারি দ্রুততর হয়েছে। এছাড়া, বন্দরের অটোমেশান সার্ভিস সুবিধা, ই-গেট পাস চালু, কনটেইনার অপারেটিং সিস্টেম আধুনিকায়নসহ বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়নেরও ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
দেশে আমদানি-রফতানিকেন্দ্রিক সমুদ্র বাণিজ্যের ৯২ শতাংশ এবং কনটেইনার ও পণ্য পরিবহণের ৯৮ শতাংশ সম্পন্ন হয় চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে। লয়’ড লিস্ট অনুযায়ী বিশ্বের ১০০টি ব্যস্ততম বন্দরের মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরের অবস্থান ৬৭তম। মূলতঃ কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের সক্ষমতার ওপর নির্ভর করেই এই তালিকা করা হয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।