জুমবাংলা ডেস্ক : অধ্যাপক ড. বিজন কুমার শীল একজন বাংলাদেশী অণুজীববিজ্ঞানী। তিনি সার্সের কুইক টেস্টের আবিষ্কারক। গণবিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং গণস্বাস্থ্য ফার্মাসিউটিক্যালসের প্রধান বিজ্ঞানী। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের র্যাপিড ডট ব্লট কিটেরও উদ্ভাবক তিনি। সম্প্রতি বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসের সর্বশেষ পরিস্থিতি ও ভবিষ্যতসহ নানা বিষয়ে জানতে চেয়ে তিনি বর্তমান প্রেক্ষাপটের কথা তুলে ধরেন।
আমরা কোন স্টেজে আছি? এটাকে কি পিক টাইম বলা যায়? পিক টাইমটা কী রকম হবে? এ প্রশ্নের উত্তরে ড. বিজন কুমার শীল বলেন, করোনার সর্বোচ্চ সংক্রমণ কিংবা সর্বনিম্ন সংক্রমণ নির্ভর করবে এলাকাভিত্তিক। যেমন যুক্তরাষ্ট্রে এক প্রদেশে পিক হচ্ছে, আরেক এলাকায় শুরু হচ্ছে। যার জন্য সারা দেশের সর্বোচ্চ সংক্রমণের চিত্র দিতে পারছে না তারা, তবে ইউরোপের দেশগুলো পেরেছিল। আমার মনে হয়, আমরা ইতোমধ্যে করোনার পিক টাইমে চলে এসেছি কিংবা কাছাকাছি এসেছি। আমার যেটা অভিজ্ঞতা হয়েছে, আপনারা যে পরিমাণ আক্রান্ত দেখেছেন, তার চেয়ে অধিক মানুষ কিন্তু (করোনা থেকে) সেরে উঠেছেন এবং তারা তা জানেন না। তাদের কোনও আইডিয়াই নেই। হয়তো তাদের একটু গা ব্যথা করেছে, হালকা জ্বর হয়েছে, একটু কাশি হয়েছে বা একটু পেটে সমস্যা হয়েছে ইত্যাদি। কিন্তু তারা এখন সুস্থ হয়ে উঠেছেন।
বাংলাদেশে আক্রান্তের হার কমবে কবে? ড. বিজন বলেন, যাদের মধ্যে অ্যান্টিবডি (রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা) এসে গেছে, তারা কিন্তু করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবকে বন্ধ করে দিতে পারে। কারণ তাদের ভেতরে ভাইরাস গ্রো করতে (টিকতে বা বেড়ে উঠতে) পারবে না। ভাইরাস যখনই গ্রো করতে না পারবে, তখন ভাইরাসের পরিমাণ কমে আসবে। যখনই কমে আসবে, তখনই মানুষ আর আক্রান্ত হবে না। এটা খুব দ্রুত কমে যাবে। কারণ, ঢাকা শহরেই অনেক মানুষের শরীরে অ্যান্টিবডি চলে এসেছে, তারা এই ভাইরাসকে তৈরি হতে আর সাহায্য করবে না। সঙ্গত কারণেই তখন ভাইরাসের প্রকোপ কমে যাবে এবং আমরা সবাই তখন এর থেকে পরিত্রাণ পাব।
সরেজমিনে পরিস্থিতি কেমন দেখছেন? এব্যাপারে বিজন কুমার শীল বলেন, আমরা এটা পর্যবেক্ষণ পেয়েছি। একটা পরিবারের স্যাম্পল দেখলাম- প্রথমে একজন পিসিআরে করোনা পজিটিভ ছিল, বাকি ৮ জনের মধ্যে অ্যান্টিবডি চলে এসেছে। হয়তো আপনি অনুভব করেন যে, মাথাব্যথা হচ্ছে বা একটু পেটে সমস্যা, সামান্য কাশি- পরে সেরে গেছে। এই সংখ্যা কিন্তু বাংলাদেশে এখন অনেক। তারা কিন্তু আমাদের দেশের ভাইরাসকে ইরাডিকেট (ধ্বংস) করতে সাহায্য করবে। কারণ এই মানুষগুলোর মধ্যে ভাইরাস আর গ্রো (টিকতে না পারা) করতে পারবে না। না করতে পারলে ভাইরাস কিন্তু আস্তে আস্তে বিলীন হয়ে যাবে।
কবে করোনামুক্ত হবে দেশ? বিজন শীল বলেন, সংক্রমণটা যত দ্রুত উঠছে তার চেয়ে দ্রুত নেমে যাবে। তবে শূন্যের কাছাকাছি যেতে আরও সময় লাগবে। আমার মনে হয়, শীতের আগেই পরিত্রাণ পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। তবে কিছু নির্দিষ্ট এলাকায় থাকতে পারে। যেসব এলাকায় একেবারে করোনা হয়নি। ঢাকায় পিক আসতে সময় লেগেছে প্রায় চার মাস। নামতে প্রায় ১০ থেকে ১১ সপ্তাহ লাগবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।