জুমবাংলা ডেস্ক: উন্নয়ন প্রকল্পের যেগুলো অত্যাবশ্যকীয় নয়, সেগুলোর বরাদ্দকৃত অর্থ আপাতত করোনা মোকাবিলায় ব্যয় করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
কভিড-১৯ এর কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক ঝুঁকি মোকাবেলায় গৃহীত পদক্ষেপ তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, সংকটটা যাতে কাটিয়ে উঠতে পারি, তার জন্য আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। অর্থনৈতিকভাবে যে নেতিবাচক দিনগুলো সামনে আসতে পারে, সেগুলো বিবেচনা করে আমরা কর্মসূচি নিয়েছি।
গতকাল একাদশ জাতীয় সংসদের সপ্তম অধিবেশনের বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। অধিবেশনে শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনা ও সমাপনী ভাষণ একই সঙ্গে দেন প্রধানমন্ত্রী।
গতকাল শনিবার বিকাল ৫টায় জাতীয় সংসদের অধিবেশন কক্ষে এ অধিবেশন শুরু হয়। শুরুতেই সংসদের সভাপতি স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী জানান, শুধু সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কারণেই এ অধিবেশন। বৈশ্বিক ও জাতীয় সংকটের প্রেক্ষাপটে এ অধিবেশন হবে সংক্ষিপ্ত।
অধিবেশনের শুরুতেই শোক প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। বিশ্বব্যাপী করোনায় মৃত্যুবরণ করা মানুষদের স্মরণে শোক প্রকাশ করা হয়। শোক প্রকাশ করা হয় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করা সিলেটের ওসমানী মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক মাঈনউদ্দিনের স্মরণেও।
শেখ হাসিনা বলেন, দেশের সব শ্রেণীর মানুষের কথা বিবেচনা করে প্যাকেজ তৈরি করা হয়েছে। প্রণোদনা দেয়া হচ্ছে। ৯৫ হাজার ৬১৯ কোটি টাকার বিভিন্ন প্রণোদনা প্যাকেজ আমরা দিয়েছি অর্থনীতি যাতে গতিশীল থাকে, সেজন্য আমরা তিন ভাগে এই সুযোগটা দিচ্ছি।
তিনি বলেন, আমাদের পরিবারগুলো যাতে খাদ্যে কষ্ট না পায়, সেজন্য আমরা পদক্ষেপ নিয়েছি। দুর্ভিক্ষ যদি বিশ্বব্যাপী হয় আমাদের দেশে মানুষ যাতে দুর্ভিক্ষে না পড়ে, তার জন্য আগাম তিন বছরের বিষয়টি মাথায় রেখেই প্যাকেজ ঘোষণা করেছি। তিনি বলেন, আমাদের খাদ্যের অভাব নেই, অভাব হবেও না। কৃষি উৎপাদন যদি অব্যাহত থাকে তার জন্য আমরা নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছি। ৪ শতাংশ সুদে ঋণ দেয়ার ব্যবস্থা করেছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন ধান কাটার মৌসুম শুরু হয়েছে, দিনমজুর যারা এখন কাজ পাচ্ছেন না তাদের একটা সুযোগ। তারা এখন ধান কাটতে যেতে পারেন। কেবল দিনমজুর নয় সবারই যাওয়া উচিত। এখানে কেবল উঁচু-নিচু নয়, কাজ করা সবার দায়িত্ব। ছাত্র-শিক্ষক সবাইকে, বিশেষ করে ছাত্রদের আমি বলব, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা যেন একটু এগিয়ে আসে। সবাই মিলে ধানটা যদি আমরা ভালোভাবে তুলতে পারি, আমাদের খাবারের কোনো অভাব হবে না।
তিনি বলেন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্দেশনা দেয়া আছে যারা যেখানে ধান কাটতে যেতে চায় তাদের সেখানে পৌঁছে দেয়া হবে।
তিনি বলেন, বিশ্ব থেকে এরই মধ্যে খাদ্য দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা করা হচ্ছে কিন্তু আমাদের উর্বর মাটি আছে, মানুষ আছে, আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। আমরা যে যা পারি তরিতরকারি হোক ছাদে হোক মাটিতে হোক উৎপাদন করতে পারি, আমরা নিজেরা চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি বিদেশকে দিতে পারি।
চিকিৎসাসেবার হটলাইনে ফোন দিয়ে অনেকে খাবারও চাচ্ছেন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, যারা হাত পাততে পারেন না কিন্তু বাড়িতে খাবার নেই, এই তথ্য পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের বাড়িতে খাবার পৌঁছে দেয়া হচ্ছে আমি দুর্যোগ মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দিয়েছি এ হটলাইনের সঙ্গে সমন্বয় করার জন্য, যদি কেউ সাহায্য চায় সঙ্গে সঙ্গে যেন তা পৌঁছে দেয়া হয়। ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিতরণের জন্য ৫০ লাখ কার্ড আমাদের দেয়া আছে। আরো ৫০ লাখ কার্ড করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, সেটা শুরুও হয়েছে। সব মিলিয়ে প্রায় এক কোটি কার্ড করা হচ্ছে। এতে চার থেকে পাঁচ কোটি মানুষ সুবিধা পাবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।