রংপুর প্রতিনিধি: রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার রাধানগর ইউনিয়নের পাঠানপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়। প্রায় দেড় বছর পর অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মতো এই স্কুলটি খুললে ২০ ছাত্রীর বাল্যবিয়ের খবর পাওয়া যায়। তাদের মধ্যে একজন ইতোমধ্যে মা হয়েছেন আর মা হওয়ার পথে রয়েছেন আরও চারজন।
মিতু আক্তার, জিন্নাত, তানজিলা, খাদিজা ও কাকুলি সবাই স্কুলটির দশম শ্রেণির ছাত্রী। গত বছরের ১৭ মার্চের আগে নিয়মিত ক্লাস করতো তারা। দীর্ঘ ১৮ মাস বিদ্যালয় বন্ধ থাকার পর গত রবিবার স্কুল খুললে তাদের সবাইকে অনুপস্থিত পাওয়া যায়। সহপাঠিদের কাছ থেকে শিক্ষকরা জানতে পারেন করোনাকালীন সময়ে তাদের বিয়ে হয়েছে। তারা এখন শ্বশুর বাড়িতে। এদের মধ্যে জিন্নাত মা হয়েছেন এবং বাকি চারজনও মা হতে চলেছেন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমজাদ হোসেন খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, তার স্কুলের দশম শ্রেণি ও এসএসসি পরীক্ষার্থীদের মধ্যে আরও ১৫জন ছাত্রীর বিয়ে হয়েছে।
স্বামীর সংসারের বোঝা মাথায় নিয়ে এসএসসি পরীক্ষার্থী মুনমুন, স্বপ্না খাতুন ও আশরিফা এবং দশম শ্রেণির রুমি আক্তার, মরিয়ম ও মিতু আক্তার-২ গত রবিবার বিদ্যালয়ে আসে। তারা নিজেদের বিয়ের কথা স্বীকার করে বলে, ‘তাদের অমতে বাবা মা বিয়ে দিয়েছেন। পরে লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়ার শর্তে দিলে শ্বশুর বাড়ির লোকজন তা মেনে নেন। এ কারণে তারা বিয়ে মেনে নিয়েছেন।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক অভিভাবক বলেন, ‘এখন যুগ খারাপ। সবার হাতে মোবাইল। মেয়েকে ধরে রাখা কঠিন। কখন কি ঘটে যায়, ঠিক নাই। তাই ঘর ও বর ভালো পেয়ে মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি।’
বদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আরশাদ হোসেন বলেন, ‘বাল্যবিয়ের কারণে হতে পারে অপুষ্টিকর শিশুর জন্ম, মাও অপুষ্টিতে ভুগে এবং প্রসবকালীন সময়ে মৃত্যুর ঝুঁকি বেশি থাকে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রেহেনুমা তারান্নুম বলেন, ‘বাল্যবিবাহের অভিযোগ কেউ আমার কাছে দেননি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।