আন্তর্জাতিক ডেস্ক: করোনাভাইরাসের থাবা এবার উত্তর কোরিয়ায়। সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।চীনে মোট মৃতের সংখ্যা ১৫০০। খবর ডয়চে ভেলের।
চীনের সরকারি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, শুক্রবার সে দেশে করোনায় মৃত্যু হয়েছে আরও ১২১ জনের। যার অধিকাংশই ঘটেছে করোনাভাইরাসের ভরকেন্দ্র হুবেই প্রদেশে। নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন আরও প্রায় চার হাজার মানুষ।
এ দিকে নতুন করে করোনা সংক্রমণের খবর এসেছে উত্তর কোরিয়া থেকে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, করোনার সঙ্গে লড়াইয়ে উত্তর কোরিয়াকে সব রকম সাহায্য করা হবে। প্রয়োজনে পিয়ংইয়ংয়ের উপর থেকে বেশ কিছু নিষেধাজ্ঞাও তুলে নেওয়া হতে পারে।
বৃহস্পতিবার চীনে করোনাভাইরাসের প্রভাবে মৃত্যু হয়েছিল ২৪২ জনের। শুক্রবার সংখ্যাটা একটু কমলেও তা একশর নীচে নামেনি। শুক্রবার গোটা দেশে মৃত্যু হয়েছে ১২১ জনের। যার জেরে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াল ১৫০০। চীনের সরকারি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে নতুন করে আরও প্রায় চার হাজার মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। এখনও পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৬০ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে।
কী ভাবে এই ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করা হবে, কী ভাবে চীনে মৃত্যু মিছিল বন্ধ করা সম্ভব হবে, তা নিয়ে এখনও দিশেহারা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। চীনের স্বাস্থ্য দফতরও খেই হারিয়ে ফেলছে। সরকার উচ্চপদস্থ স্বাস্থ্য অধিকর্তাদের পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছে। নতুন যাঁরা এসেছেন, তাঁরাও বিশেষ কিছু করে উঠতে পারছেন না। এরই মধ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ফের জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত ২৫টি দেশ থেকে সংক্রমণের খবর মিলেছে। অপেক্ষাকৃত গরিব দেশে এই ভাইরাস ছড়িয়ে গেলে আরও ভয়াবহ ঘটনা ঘটবে। বস্তুত, শুক্রবার সেই আশঙ্কা আরও বেড়েছে। উত্তর কোরিয়াতে ক্রমশ এই সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে। বিশেষজ্ঞদের দাবি, চীন যে ভাবে এই ভাইরাসের মোকাবিলা করছে, উত্তর কোরিয়ার পক্ষে তা কখনওই সম্ভব নয়। অ্যামেরিকা অবশ্য জানিয়েছে, উত্তর কোরিয়ায় এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়লে সব রকম সাহায্য করবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। প্রয়োজনে সরিয়ে নেওয়া হবে একাধিক নিষেধাজ্ঞা।
ভিয়েতনামেও করোনা আতঙ্ক প্রবল ভাবে ছড়িয়েছে। রাজধানী হ্যানয়ের উত্তরে একটি এলাকাকে গত ২০ দিন ধরে কার্যত অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। প্রায় ১০ হাজার মানুষ বসবাস করেন সেখানে। ভিয়েতনামের প্রশাসন জানিয়েছে, ওই অঞ্চলে করোনা ছড়ানোর সম্ভাবনা আছে বলেই এলাকাটিকে আলাদা করে রাখা হয়েছে। যাতে ভাইরাসের সংক্রমণ না ঘটে।
ফ্রান্স, জার্মানি, কানাডা, ফিনল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়াসহ আরো বেশ কয়েকটি দেশ ফেব্রুয়ারিতে চীনে সব ধরনের বিমান চলাচল স্থগিত করেছে৷
এ দিকে হংকং থেকে ছাড়া যে জাহাজটি গত প্রায় ২০ দিন ধরে সমুদ্রে আটকে ছিল, শুক্রবার তা কম্বোডিয়ার উপকূলে পৌঁছয়। ফিলিপিন্স, থাইল্যান্ড, জাপান রাজি না হলেও কম্বোডিয়া ওই জাহাজের যাত্রীদের নামার সুযোগ দিয়েছে। দুই হাজারেরও বেশি যাত্রী আপাতত কম্বোডিয়ার উপকূল শহরে আছেন। ২০ দিন ধরে জাহাজটি সমুদ্রে আটকে ছিল কারণ, মনে করা হচ্ছিল ওই জাহাজে করোনা আক্রান্ত থাকতে পারেন। জাপান উপকূলে এখনও একটি জাহাজ আটকে আছে। সেই জাহাজে বহু যাত্রীর শরীরে করোনার জীবাণু মিলেছে।
বাংলাদেশ জানিয়েছে, চীন থেকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছিল যে নাগরিকদের, এখনও পর্যন্ত তাদের কারও শরীরেই করোনার সংক্রমণ মেলেনি। ভারতও চীন থেকে বহু নাগরিককে উদ্ধার করে এনেছে। এখনও তাদের আইসোলেশনেই রাখা হয়েছে। তাদের দেহেও এখনও পর্যন্ত করোনার সংক্রমণ দেখা যায়নি। জার্মান স্বাস্থ্য মন্ত্রী ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ইউরোপে এখনও পর্যন্ত করোনার আক্রমণ ভালভাবেই প্রতিরোধ করা সম্ভব হচ্ছে। তবে যে কোনও সময় পরিস্থিতি বদলে যেতে পারে। ফলে সমস্ত দেশকেই সতর্ক থাকতে হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।