মারাত্মক ছোঁয়াচে করোনাভাইরাস আতঙ্কে কাঁপছে পুরো বিশ্ব। লকডাউন চলছে দেশে দেশে। নেওয়া হয়েছে নানা পদক্ষেপ। এতকিছুর পরেও কিছুতেই এই মারণ ভাইরাসের বিস্তার ঠেকানো যাচ্ছে না। ভাইরাসটি সুনামির গতিতে ছড়িয়ে পড়ার অন্যতম কারণ এর নীরব বাহক। উৎসস্থল চীনে ভাইরাসটিতে আক্রান্তদের বড় অংশই ছিল নীরব বাহক। তাদের শরীরে করোনায় আক্রান্তের লক্ষণ ছিল না কিংবা অনেক দেরিতে প্রকাশ পেয়েছিল। প্রতি তিনজনের একজন ছিল নীরব বাহক। ফলে তাদের মাধ্যমে অন্যরা সহজেই সংক্রমিত হয়েছে। একই অবস্থা দেখা গেছে আইসল্যান্ডে। সেখা আক্রান্তদের অর্ধেকই ছিল নীরব বাহক। সংক্রমণ এড়াতে নীরব বাহক সম্পর্কে জানা খুব জরুরি, নইলে নতুন করে আবার প্রাদুর্ভাব হতে পারে।
চায়না গণমাধ্যম সিনহুয়ার প্রতিবেদনে করোনার নীরব বাহক সম্পর্কে চারটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে। নীরব বাহক থেকে নিরাপদ থাকতে বিষয়গুলো জানা জরুরি-
করোনা প্রাদুর্ভাব এলাকায় ছিলেন- নীরব বাহকের বিষয়টা বিভিন্ন অবস্থার উপর নির্ভর করে। যেমন আপনি যদি প্রাদুর্ভাব এলাকায় থেকে থাকেন। এমনকি দীর্ঘদিন কোয়ারেন্টিনে থাকার পরও আপনার শরীরে নীরবে করোনাভাইরাস বাসা বাঁধতে পারে। যেমনটা ঘটেছে উহানের ক্ষেত্রে। সেখানে এখন প্রচুর নীরব বাহক পাওয়া যাচ্ছে। হুয়াহং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের টঙ্গজি মেডিকেল কলেজের স্কুল অফ পাবলিক হেলথের অধ্যাপক ওয়েই শেং বলেছিলেন, যদি মহামারিটি এখনও মারাত্মক রয়েছে এমন জায়গা থেকে আপনি ফিরে আসেন সেক্ষেত্রে আপনার নীরব বাহক হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি এবং আপনার মাধ্যমে প্রচুর মানুষের সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
অসম্পূর্ণ তথ্য- অনেক সময় মহামারির প্রাদুর্ভাব কেটে গেছে ভেবে নিষেধাজ্ঞা শিথিল এবং মানুষের কাজে ফিরে যাওয়া মহামারিটি ফিরে আসার অন্যতম কারণ হতে পারে। চীনের উহানে এটাই হয়েছে। নীরব বাহকদের মাধ্যমে নতুন করে ভাইরাসটি ছড়াতে শুরু করেছে। নীরব বাহক যে ভয়ের কারণ সেটা অতীতে হাম, ইনফ্লুয়েঞ্জা এবং সার্সের মতো সংক্রামক রোগের ক্ষেত্রে আমরা দেখেছি। একই ঘটনা দেখছি কভিড-১৯ রোগের ক্ষেত্রেও। কোনও কোনও ক্ষেত্রে নীরব বাহক সমাজে বড় আকারের প্রাদুর্ভাব ঘটিয়েছিল।
নীরব বাহকদের স্ক্রিনিং ও ম্যানেজমেন্ট- উহানে মূলত চার ধরনের নীরব বাহকের সন্ধান পাওয়া গেছে। নিশ্চিত রোগী, সাধারণ বহিরাগত রোগী, কর্মীরা পুনরায় কাজ শুরু করার আগে স্ক্রিন করা কর্মীদের ঘনিষ্ঠ পরিচিতি এবং পাশাপাশি উহান ছাড়ার আগে স্ক্রিনিং করা ব্যক্তিরা।
নীরব বাহকগুলি নিশ্চিত হওয়ার পর তাদেরও একই কোয়ারেন্টিন এবং চিকিত্সা পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা করা উচিত। নীরব বাহককে ১৪ দিনের জন্য কেন্দ্রীয়ভাবে চিকিৎসা পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে এবং তাদের বিকাশ হলে অবিলম্বে চিকিৎসার জন্য মনোনীত হাসপাতালে স্থানান্তর করতে হবে।
নীরব বাহক থাকলে আমাদের করণীয়- বেশিরভাগ নীরব বাহকদের কভিড-১৯ পজেটিভ রোগীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ পরিচিতি পাওয়া গেছে। সুতরাং, যে সকল লোকেরা কভিড-১৯ রোগীর সংস্পর্শে আসেনি তাদের সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা নেই এবং আতঙ্কিত হওয়ার দরকার নেই। তবে যারা এমন সংস্পর্শে এসেছেন তাদের অবশ্যই স্ক্রিনিং ও কোয়ারেন্টিন করা উচিত।
বিশেষজ্ঞের মতে, যাদের সন্দেহজনক লক্ষণ বা কনফার্ম কভিড -১৯ রোগীর সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ নেই তাদের জন্য নিউক্লিক অ্যাসিড পরীক্ষা করার প্রয়োজন নেই। সূত্র: সিনহুয়া।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।