মন্দিরে মানবেতর জীবনযাপন করা ওই বৃদ্ধা স্থানীয় গণ্যমান্যদের কাছে বিচার চাওয়ায় তার পুত্রবধূ নির্যাতন করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন। আগৈলঝাড়া থানায় লিখিত অভিযোগ করে এখনো কোনো প্রতিকার না পেয়ে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তিনি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার রত্নপুর ইউনিয়নের বারপাইকা গ্রামের সূর্যকান্ত সরকার মারা যাওয়ার পর তার স্ত্রী জ্ঞানদা রানী (৯৫) ছেলে জগদীশ সরকারের সঙ্গে বসবাস করেন। দরিদ্র পরিবার হওয়ায় স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ থেকে জ্ঞানদা রানীকে একটি বয়স্ক ভাতার কার্ড করে দেওয়া হয়। এ কার্ড দিয়ে জ্ঞানদা রানী তিনমাস পরপর বয়স্ক ভাতার টাকা উত্তোলন করে পূত্রবধূ শিখা রানীর কাছে জমা রাখেন। দুই মাস আগে পূকরোনাভাইরাসের ভয়ে শাশুড়িকে ঘর থেকে বের করে দেন পুত্রবধূ শিখা রানী। পরে স্থান হয় বাড়ির ছোট একটি ভাঙা মন্দিরে।
গত সোমবার বিকেলে ক্ষুধার যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে খাবার চাওয়ায় ক্ষুধার্ত জ্ঞানদা রানীকে মারধর করেন শিখা। এরপর জ্ঞানদা রানী পূত্রবধূ শিখা রানীর কাছে বয়স্ক ভাতার টাকা চাইতে গেলে শিখা শাশুড়িকে অমানুষিক শারীরিক নির্যাতন করে গুরুতর আহত করেন। এর আগেও কারণে-অকারণে ছেলে জগদীশ ও তার স্ত্রী শিখা জ্ঞানদা রানীকে মারধর করতেন বলে জানা গেছে।
নির্যাতনের শিকার হয়ে এই বৃদ্ধা ছেলে ও পুত্রবধূর বিরুদ্ধে বিচার চেয়ে গণ্যমান্যদের কাছে অভিযোগ করেন। সমাজের গণ্যমান্য লোকজন তাদের বাড়িতে গেলে শিখা রানীর ও তার স্বামী জগদীশ সরকার তাদেরকে অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করে বাড়ি থেকে বের করে দেন এবং তাদের মিথ্যা মামলা দেওয়ার হুমকি দেন। এলাকায় বিচার না পেয়ে এ ঘটনায় জ্ঞানদা রানী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে গতকাল সোমবার রাতে আগৈলঝাড়া থানা পুলশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) রফিক ঘটনাস্থলে গিয়ে শিখা রানী ও তার স্বামী জগদীশ সরকারকে থানায় আসতে বলেন।
এ বিষয়ে নির্যাতনের শিকার হওয়া জ্ঞানদা রানী জানান, আগৈলঝাড়া থানায় লিখিত অভিযোগ করে এখনো কোনো প্রতিকার পাননি। তিনি প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। আর কোনো মাকে যাতে তার সন্তান ও পুত্রবধূর হাতে নির্যাতনের শিকার না হতে হয় সে জন্য তার ছেলে ও পুত্রবধূর উপযুক্ত শাস্তি দাবি করেন তিনি।
আগৈলঝাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আফজাল হোসেন বলেন, ‘এই ঘটনাটি গুরুত্ব সহকারে দেখার জন্য এসআই আব্বাসকে দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। তদন্তে সত্যতা প্রমাণিত হলে অভিযুক্ত পূত্রবধূ ও ছেলেকে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।‘
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।