জুমবাংলা ডেস্ক : করোনা সংক্রমণ রোধে দেশে সাধারণ ছুটি চলছে। একই সঙ্গে সবাই যার যার বাসাবাড়িতে অবস্থান করছেন। ঘরবন্দি মানুষ বিভিন্নভাবে কাটাচ্ছেন অলস সময়। কেউ রান্না করছেন, কেউ ঘরের কাজে স্ত্রীকে সহযোগীতা করছেন, আবার কেউ এসব নিয়ে মজা করছেন। একান্তে সৃষ্টিকর্তার আরাধনায় মগ্ন রয়েছেন অনেকে। কেউ আবার নিজের এসব কাজ প্রকাশ করছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। তবে কয়েকদিন ধরে ফেসবুকে একটি বিষয় খুব বেশি দেখা যাচ্ছে। আর তা হচ্ছে মাথা ন্যাড়া করা। ফেসবুক খুললেই দেখা মিলছে ন্যাড়া মাথা। মাথার চুল ফেলে কেউ বাসায় অবস্থান করছেন, আবার অনেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করছেন সেই ছবি। এসব দেখে এক কথায় বলা যায়-করোনা আতঙ্কে টাক বা ন্যাড়া হওয়ার ধূম লেগেছে।
একজন ন্যাড়া মাথার ছবি পোস্ট করার সঙ্গে সঙ্গে পাল্টা আরেকজনের পোস্ট। ফেসবুকের পাতা স্ক্রল করে এমন মজার মজার সব তথ্য মিলছে।
একটি বীমা কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তিনি হালের বড় ব্যবসায়ীও। ন্যাড়া হয়ে ফেসবুকে ছবি পোস্ট করে তিনি লিখেছেন, কোয়ারেন্টিন দিনলিপি। তার দেখাদেখি অধিনস্থ এক কর্মকর্তাও স্যারকে ফিরতি পোস্ট ট্যাগ করেছেন ন্যাড়া মাথার। আরেক কর্মকর্তা মন্তব্য লিখেছেন- আমি আর বাদ যাই কেন? ধারাবাহিক পোস্টগুলো এভাবেই চলছে।
চুল ফেলে দেওয়া একজন জানান, লকডাউনে সেলুন সব বন্ধ। কবে চুল কাটতে পারব তার ঠিক নেই। তাই চুল সব ফেলে দেওয়াই হচ্ছে উত্তম কাজ। তাছাড়া তীব্র গরমও পড়েছে।
দেশের বিভিন্ন জেলা থেকেও একইরকমের খবর আসছে। কোয়ারেন্টিন আর করোনার লকডাউন পিরিয়ডে সকলেই ন্যাড়া হয়ে গৃহবাসী হচ্ছেন।
এদিকে করোনা থেকে মুক্তি মিলবে-এই বিশ্বাসে মাথা ন্যাড়া করা শুরু করেছেন টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার অনেকে। গত কয়েকদিনে বিভিন্ন এলাকায় পড়েছে মাথা ন্যাড়া করার হিড়িক। শত শত যুবক এরই মধ্যে মাথা ন্যাড়া করেছেন। সেই ন্যাড়া মাথার দলগত ছবি পোস্ট করেছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও।
মাথা ন্যাড়া করা উপজেলার কচুয়া গ্রামের ইব্রাহিম শিকদার, নজরুল ইসলাম জানিয়েছেন, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে এখন সবাইকে বাসা-বাড়িতে থাকতে হচ্ছে। কতদিন পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে, তারা স্বাভাবিক কর্মজীবনে ফিরবেন, তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। এই সুযোগে মাথা ন্যাড়া করে নিচ্ছেন। এছাড়াও এই ভাইরাস থেকে মুক্তি পেতে তারা মাথা ন্যাড়া করছেন বলেও জানান। তবে করোনা ভাইরাস থেকে বাঁচতে মাথা ন্যাড়া করার এ বিষয়টি হাস্যকর বলছেন চিকিৎসকরা।
আবার অনেকেই জানিয়েছেন, সরকারি নির্দেশনায় এখন অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মতো সেলুনগুলোও বন্ধ রয়েছে। দীর্ঘদিন সেলুনে যেতে না পারায় মাথায় চুল বেড়ে যাচ্ছে। তাছাড়া গরমের এই সময়ে চুল বেড়ে গিয়ে মাথা চুলকাচ্ছে। তাই বাড়িতে বসেই মাথা ন্যাড়া করে ফেলছেন তারা।
মাথা ন্যাড়া করার হিড়িক পড়েছে খুলনা, বরিশাল সহ সারাদেশে। পরিবারের সবাই একসঙ্গে ন্যাড়া হচ্ছেন। সেই ছবি পোস্ট করছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। বিষয়টি নিয়ে হাস্যরস সৃষ্টি হয়েছে।
তবে প্রবীণরা বলছেন, চৈত্রের তীব্র গরমে মাথা ন্যাড়া করা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। এতে গরম কিছুটা কম লাগবে।
কবির শিকদার নামে একজন জানান, করোনা ভাইরাসের প্রকোপ শুরুর আগে কয়রা উপজেলার নিজ গ্রামে চলে আসি। এরপর গাড়ি বন্ধের কারণে কর্মস্থলে ফিরতে পারিনি। এখানে কোনো দোকান-পাট খোলা নেই। এছাড়া তীব্র গরমে থাকতে না পেরে চুল কেটে ফেলেছি। আমরা দেখা দেখি গ্রামের সমবয়সী ৪৮ জন একসঙ্গে ন্যাড়া হয়েছে।
বরিশাল সদর উপজেলার লামচরি এলাকার বাসিন্দা রাসেল হোসেন জানান, তিনি পড়াশোনার পাশাপাশি একটি চাকরি করেন। বর্তমান পরিস্থিতি তাদের বাড়ির সবাই নিজ ঘরেই আছেন। দিনের বেলা ঘর থেকে বের হয়ে উঠান কিংবা বাগানের বাহিরে কোথাও যাচ্ছেন না। বাড়িতেও কেউ আসছে না। এই সুযোগে তারা সমবয়সি কয়েকজন মিলে মাথা ন্যাড়া করেছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



