আন্তর্জাতিক ডেস্ক: করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ার মধ্যেই জরুরি বিধিনিষেধ তুলে নেওয়া নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েছে মালয়েশিয়ার সরকার। খবর বিবিসির।
দেশটিতে এখন পর্যন্ত দশ লাখেরও বেশি মানুষের মধ্যে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে এবং এতে মারা গেছেন প্রায় ৮,০০০ জন। তবে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন যে সংক্রমণের প্রকৃত সংখ্যা আরও অনেক বেশি, কারণ পরীক্ষার হার কম।
হাসপাতালগুলোয় মানুষের ভিড়ে তিল ধারণের জায়গা নেই- সাম্প্রতিক এক ছবিতে দেখা গেছে রোগীরা চেয়ারে বসে অক্সিজেন সিলিন্ডার ভাগ করে ব্যবহার করছেন।
দেশটিও বর্তমানে জরুরি অবস্থার মধ্যে রয়েছে, যা পহেলা অগাস্টে শেষ হবে এবং বলা হচ্ছে এই জরুরি অবস্থা আর বাড়ানো হবে না।
বিরোধী নেতারা বলেছেন যে গত সপ্তাহে এই বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার ব্যাপারে যে সিদ্ধান্ত হয়েছে – সে বিষয়ে তাদের অবহিত করা হয়নি।
এই সিদ্ধান্তের ফলে জনগণের উপর কেমন প্রভাব পড়বে, তারা সেটা তা জানতে চেয়েছেন।
“আমাদের কেন জানানো হয়নি? এটা কার সিদ্ধান্ত ছিল?” মঙ্গলবার দেশটির সংসদীয় অধিবেশন চলার সময় ডেমোক্র্যাটিক অ্যাকশন পার্টির ডেপুটি চেয়ারম্যান গোবিন্দ সিং দেও এমন প্রশ্ন রাখেন।
ওই জরুরি অধ্যাদেশে মানুষের চলাচলে যে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে, তা লঙ্ঘন করলে জরিমানা করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
করোনা পরিস্থিতি চরমে মালেয়শিয়ায়
এই অঞ্চলের অন্যান্য দেশের মতো দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশটিও করোনাভাইরাসের ভয়াবহ সংক্রামক ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের আঘাতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
মালয়েশিয়ায় এখন দিনে ১৪,০০০ এরও বেশি মানুষের মধ্যে রেকর্ড পরিমাণ করোনাভাইরাস শনাক্ত হচ্ছে, মঙ্গলবার রেকর্ড সংখ্যক ২০৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।
বিপুল সংখ্যক রোগী সামাল দিতে না পারে হাসপাতালগুলো রোগীদের ফিরিয়ে দিচ্ছে। এমনকি ভর্তি হওয়া রোগীদের জন্য শয্যা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না।
সোমবার দেশটির হাসপাতাল এবং চিকিৎসা কেন্দ্রগুলোর কয়েকশ জুনিয়র চিকিৎসক চাকরি স্থায়ীকরণ ও উন্নত পরিবেশের দাবিতে ওয়াক আউট করেছেন।
যারা মরদেহের সৎকার করেন এবং অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সংশ্লিষ্ট কর্মীরা স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেছেন যে, তারা কোভিড -১৯ এ মারা যাওয়া ব্যক্তিদের লাশ সৎকারের জন্য অসংখ্য কল পাচ্ছেন, যাদের মধ্যে অনেকে বাড়িতেই মারা গেছেন।
কয়েকজন বিশেষজ্ঞ বলেছেন যে, বর্তমান জরুরি ব্যবস্থাও ‘আধাসেদ্ধ’ অবস্থা অর্থাৎ পুরোপুরি কাজ করছে না। ফলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে এই বিধিনিষেধ কোন কাজে আসছে না।
সাহায্যের জন্য সাদা পতাকা উড়াচ্ছেন কেউ কেউ
তবে, বিধিনিষেধের কারণে সাধারণ মানুষের – বিশেষ করে দিনমজুর এবং নিম্ন আয়ের পরিবারগুলোর বিশাল অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে।
তাদের কেউ কেউ সাহায্যের আবেদন জানাতে তাদের ঘরের বাইরে সাদা পতাকা উড়িয়েছেন।
মানুষের সঞ্চয় ফুরিয়ে আসছে। এমন অবস্থায় অনেকে দিনে একবেলা খাবার খেয়ে টিকে আছেন। মানুষের এমন সংবেদনশীল খবরগুলো সাম্প্রতিক সময়ে দেশটির গণমাধ্যমে উঠে আসছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।