চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের (চমেক) সহযোগী অধ্যাপক ও অর্থোপেডিক সার্জন ডা. সমিরুল ইসলাম মারা গেছেন। আজ বুধবার দুপুর আড়াইটার দিকে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
ডা. সমিরুল ইসলাম অনেকদিন ধরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন ছিলেন। প্রথমে তিনি করোনা পজিটিভ থাকলেও পরে পরীক্ষায় নেগেটিভ পাওয়া যায়। পরে তাকে মেট্রোপলিটন হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে আজ সকাল ৮টার দিকে তাকে ভেন্টিলেশনে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আড়াইটার দিকে তিনি মারা যান।
ডা. সমিরুল চট্টগ্রামে সবার কাছে মানবদরদী চিকিৎসক হিসেবে সুপরিচিত ছিলেন। এ গুণী চিকিৎসকের মৃত্যুতে যেন কাঁদছে বন্দর নগরী চট্টগ্রাম। শোকের ছায়া নেমে এসেছে চট্টগ্রামের সর্বোস্তরের মানুষের মধ্যে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে শোক জানাচ্ছেন তারা। পরোপকারী এই চিকিৎসকের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে তার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করে অনেকে দোয়া চেয়েছেন।
চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি নাজিমুদ্দীন শ্যামলের স্কুল বন্ধু ছিলেন ডা. সমিরুল। নাজিমুদ্দীন শ্যামল ডা. সমিরুল সম্পর্কে লিখেছেন, ‘এমন ভালো মনের বন্ধু এবং সবার প্রিয় চিকিৎসক এভাবে চলে যাবে এটা কিছুতেই মেনে নেওয়ার নয়।’
দৈনিক যুগান্তরের সাংবাদিক মিজানুল ইসলাম লিখেছেন, ‘এই শহরে শুধু আমি নই অসংখ্য মানুষের অতিপ্রিয় চিকিৎসক বন্ধু ছিলেন সমিরুল ইসলাম। এমন প্রিয় মানুষের করোনা দূর্যোগে মৃত্যু কিছুতেই মেনে নেওয়ার নয়। অদৃশ্য করোনার ছোবলে এভাবেই কি আমরা হারিয়ে ফেলবো প্রিয় মুখগুলো?’
সাংবাদিক জিয়াউল হক জিল্লু লিখেছেন, ‘এমন মানবদরদী আর মিষ্টভাষী ডাক্তার খুব বেশি দেখিনি। ডা. সমিরুল ইসলামকে আল্লাহ জান্নাতবাসী করুন।’
মোহাম্মদ ইউনুস নামে একজন লিখেছেন, ‘শোকের নদী এখন সমুদ্র হয়ে গেছে। আল্লাহ জান্নাতুল ফেরদৌস দান করুন এই অসাধারণ, ক্ষণজন্মা চিকিৎসক সমীরুল ইসলাম স্যারকে।।
আরেকটা সমীরুল ইসলাম তৈরি হবে কি দরিদ্র এই দেশে, আহারে বাবু স্যার, আহা? বুকের ভেতর কেমন লাগছে, কি ভয়াবহ এই শূন্যতা!’
সাংবাদিক রিয়াজ হায়দার লিখেছেন, ‘চট্টগ্রামের প্রথম প্লাজমা থেরাপি দেয়া হয়েছিল অর্থোপেডিকের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সমিরুল ইসলাম বাবুকে । অগুনতি রোগী ও স্বজন শুভার্থীদের দোয়ায় করোনা আক্রান্ত এই চিকিৎসক প্লাজমা দেয়ার পরে অনেকটা সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন । চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে তাঁকে একটু ভালোর আশায় ভর্তি করা হয়েছিল মেট্রোপলিটন হাসপাতালে । হঠাৎ করে শারীরিক অবস্থার অবনতি হয় তাঁর । ভেন্টিলেশনে নিয়ে যাওয়া হয় । শেষ পর্যন্ত কিছুক্ষণ আগে তিনি সবাইকে শোকের সাগরে ভাসিয়ে চলে গেলেন না ফেরার দেশে।
মহান রাব্বুল আলামিন এই করোনা যোদ্ধার রুহের মাগফেরাত দান করুন । আমীন।’
আজাদ মইনুদ্দীন নামে একজন লিখেছেন, আমার ওয়াফি ৬ মাস বয়সে পা ভেঙেছিল। প্লাস্টারের পর ছোট করে জানতে চাইলেন, কে করল এমন কাজ। আমি জানালাম, ঘরে তাকে দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা কাজের মানুষটির অসাবধানতার ফল। এবার বলে দিলেন, যেন মেয়েটিকে বকাঝকা না করি।আমি কিছুটা আশ্চার্য হলাম। এমনই মানবিক ডাক্তার তিনি। ভাঙাকে জোড়া দেয়ার এই ডাক্তার আছেন চট্টগ্রাম শহরের হাজারো মানুষের হৃদয়জুড়ে।‘
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।