জ্বর আর তীব্র শ্বাসকষ্টে ভুগছেন বাবা, তাই টানা ১১ দিন একজন ডাক্তারের জন্য বারবার কল করেছিলেন সিলভিয়া, অবশেষে ডাক্তার এলেন, অ্যাম্বুলেন্সও এলো, কিন্তু আর সময় দিতে পারলেননা ৭৮ বছর বয়সী অ্যালেসেন্দ্রো। ডাক্তার শুধু মৃতই ঘোষণা করতে পারলেন।
উত্তর ইতালির বারগামোর বাসিন্দা সিলভিয়া বলেন, ‘বাবা এ কয়দিন শুধু ব্যথানাশক ওষুধ আর এন্টিবায়োটিক খেয়েছিলেন, কিন্তু তাতে কাজ হয়নি। যথাযথ চিকিৎসা ছাড়াই আমার বাবা চলে গেলেন, একজন মানুষ এভাবে মারা যাবে তা মেনে নেয়া যায় না।’
ডাক্তার, নার্স ও পরিবারগুলোর সঙ্গে কথা বলে জানা যায় সিলভিয়ার এ অভিজ্ঞতা অস্বাভাবিক নয়, করোনার কেন্দ্র হয়ে ওঠা ইতালিতে এমন ঘটনা এখন বহু ঘটছে। কভিড-১৯ এর সিম্পটম নিয়ে অনেকেই বাসায় মারা যাচ্ছে। ডাক্তারও আসছে না, পরীক্ষা-নিরীক্ষাও হচ্ছে না। ফলে করোনায় মৃত্যু হিসেবে সরকারি খাতায় তাদের নামও উঠছে না।
সম্প্রতি এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, শুধু বারগামো প্রদেশেই করোনায় মৃত্যু সরকারি হিসাবের দ্বিগুণ। কারণ সরকার শুধু হাসপাতালের মৃত্যু হিসাব করে। আর সরকারি হিসাবে ওই প্রদেশে মারা গেছে ২ হাজার ৬০ জন।
গত শনিবার পর্যন্ত ইতালিতে করোনায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৩৬২ জন। স্থানীয় পত্রিকা এল’ একো ডি বারগামো এবং গবেষণা কনসালটেন্ট ইনটুইগ স্থানীয় প্রশাসনের তথ্যউপাত্ত্ব বিশ্লেষণ করে জানায়, মার্চ মাসে বারগামোতে ৫ হাজার ৪০০ লোক মারা গেছে। যা একবছর আগের একইসময়ের চেয়ে ছয়গুণ বেশি। বিশ্লেষণে দেখা যায়, এর মধ্যে ৪ হাজার ৫০০ জনই মারা গেছেন করোনাভাইরাসে। যা সরকারি হিসাবের দ্বিগুণ।
ইতালিতে এ পর্যন্ত ১১ হাজার স্বাস্থ্যকর্মী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন, এর মধ্যে ৮০ জন মারা গেছেন। এদের বেশিরভাগই ফ্যামিলি ডাক্তার।
সিলভিয়ার বাবাকে যে ডাক্তার দেখার কথা তার সঙ্গে বার্তা সংস্থা রয়টার্স যোগাযোগ করলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, প্রতিদিন আমি ৩০০ থেকে ৫০০ ফোন কল পাই। ফলে যারা গুরুতর অসুস্থ কেবল তাদের কিছু সংখ্যককে দেখতে যেতে পারি, বাকীদের বাদ দিতে হয়।
সূত্র: রয়টার্স।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।