নভেল করোনাভাইরাস এর স্তরবিন্যাস অনুযায়ী বাংলাদেশ তৃতীয় ধাপে অবস্থান করছে। এখনই সাবধান না হলে এটি চতুর্থ ধাপে যাবে। যার অর্থ মহামারী। ঢাকায় যে হারে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হচ্ছে তাতে তিনি মহামারীর বার্তা দিলেন।
তিনি বলেন, “নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণের এ পর্যায়ে আমরা রয়েছি তৃতীয় স্তরে। তার মানে করোনাভাইরাসটি এখন সামাজিক পর্যায়ে বিস্তৃত হয়েছে, তবে তা সীমিত আকারে। আমরা এখন সোশ্যাল ডিসট্যান্সিংয়ে গুরুত্ব দিচ্ছি। এটা যদি যথাযথভাবে পালন করা না হয় তবে চতুর্থ স্তরে চলে যেতে পারি।”
পুরো বিশ্বে এরই মধ্যে আক্রান্ত হয়েছেন ১৪ লাখের বেশি মানুষ। মৃতের সংখ্যা ৮১ হাজারের বেশি। ইউরোপ আমেরিকা সহ গোটা পৃথীবির উন্নত দেশগুলো এ ভাইরাসের মোকাবেলায় টালমাটাল অবস্থায় পড়ে যাচ্ছে।
বাংলাদেশে মাসখানেক আগে ৮ মার্চ সর্বপ্রথম করোনাভাইরাস সংক্রমন ধরা পড়ে। এরপর থেকে সংক্রমনের হার কম থাকলেও শনিবার থেকে যেন পরিস্থিতি নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। সর্বপ্রথম ৯ জন এরপর ১৮, ৩৫, ৪১ ও সর্বশেষ বুধবার ৫৪ জনের করোনাভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়েছে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হওয়া এই ৫৪ জনের ৩৯ জনই রাজধানী ঢাকার বাসিন্দা।
ঢাকায় আক্রান্ত হওয়া রোগীদের মধ্যে বেশি শনাক্ত হয়েছে ওয়ারি ও বাসাবো এলাকায়, ৯ জন করে।এরপরে মিরপুর-১ এ ৮ জন এবং মোহাম্মদপুরে, গুলশান ও টোলারবাগে রয়েছে ৬ জন করে, লালবাগ ও উত্তরাতে ৫ জন করে নতুন রোগী পাওয়া গেছে। ঢাকায় এখন মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২৩ জন।
অধ্যাপক সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন “যাদের সংক্রমণ ধরা পড়েছে, তার প্রায় সবগুলোর কন্টাক্ট ট্রেসিং করার চেষ্টা করছি আমরা। হ্যাঁ, কিছু নমুনা আছে যার কন্টাক্ট ট্রেসিং বা উৎস আমরা অনুসন্ধান করতে পারিনি। সোর্স অব ইনফেকশন অ্যানালাইসিস করে আমরা কিছু কিছু এলাকাকে ক্লাস্টার হিসেবে চিহ্নিত করেছি। কিছু কিছু জায়গায় কমিউনিটি ট্রান্সমিশন রয়েছে। আমরা এখন যে পদক্ষেপগুলো নিয়েছি সেগুলো কঠোরভাবে মেনে চলা হলে আমরা চতুর্থ ধাপের পথে অগ্রগতিটা রুখে দিতে পারব।”
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, ভাইরাস আক্রান্তদের নমুনা সংগ্রহ করতে প্রতিনিয়তই পাচ্ছেন নতুন তথ্য। সকল তথ্য উপাত্ত যাচাই করে পরবর্তী দিনের করণীয় নির্ধারণ করা হচ্ছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, নমুনা পরীক্ষার জন্য তাদের হাতে এখন ৭১ হাজার কিট রয়েছে। সংশ্লিষ্ট পরীক্ষা কেন্দ্রগুলোতে মজুদ থাকায় নুতন কিট্ সরবরাহের প্রয়োজন হয়নি।
সানিয়া তহমিনা জানিয়েছেন, কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের নমুনা পরীক্ষা ও চিকিৎসার জন্য সারা দেশে ২ হাজার ৪৮৫ জন চিকিৎসক এবং ৭৫৪ জন নার্সকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এই ভাইরাস মোকাবেলায় ২১টি গাইডলাইন প্রণয়ন করেছে , যেগুলো অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে।
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যে অনেক জায়গা থেকেই চিকিৎসা না পাওয়ার অভিযোগ আসছে। এই সমস্যার সমাধানে সানিয়া তহমিনা বলছেন, তারা গুরুত্ব দিচ্ছেন টেলিমেডিসিনে।
তিনি জানান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ নিয়ে ২ হাজার ৩৬৭ জন চিকিৎসক স্বাস্থ্য সেবা বাতায়নের ১৬২৬৩, জরুরি সেবার ৩৩৩, আইইডিসিআরের হটলাইন নম্বরগুলোতে রোগীদের টেলিমেডিসিন সেবা দিচ্ছেন। এ পর্যন্ত ১৭ লাখ ১৮ হাজার ২৯১ জনকে টেলিমেডিসিন সেবা দেওয়া হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।