করোনা–পরবর্তী বিশ্বে অনেকেই এখনো ফেস মাস্ক ব্যবহার করেন। মাস্ক ব্যবহার করা ভালো জেনেই তাঁরা ব্যবহার করে থাকেন। রাস্তাঘাটে মাস্কের ব্যবহার প্রায়ই চোখে পড়ে। সাধারণত মানুষ যেসব মাস্ক ব্যবহার করেন, তা হয় একবার ব্যবহারযোগ্য সার্জিক্যাল মাস্ক, অথবা সাধারণ বা বাহারি ডিজাইনের কাপড়ের মাস্ক। আরেক ধরনের মাস্ক আছে যেগুলো পেশাজীবীরা ল্যাবে বা মাইক্রো, ন্যানো ড্রপলেট দিয়ে ছড়ায়, এমন রোগের যখন চিকিৎসা করেন, সেই সময় ব্যবহার করেন।
সাধারণ মানুষ যে মাস্ক ব্যবহার করেন, সার্জিক্যাল বা কাপড়ের মাস্ক, এই মাস্ক রোগজীবাণু আটকাতে পারে না বললেই চলে। কারণ, মাস্কে যে ছোট ছোট ছিদ্র থাকে, তার আকার জীবাণুর চেয়ে বড়, তাই ভেতর দিয়ে জীবাণু সহজেই ঢুকে যেতে পারে। এমনকি আপনার সামনে যদি কেউ হাঁচি দেয় এবং তাতে যদি কোনো রোগের জীবাণু থাকে, আপনার সার্জিক্যাল মাস্ক সেই জীবাণুকে আটকাতে পারে না। কাপড়ের পুনর্ব্যবহারযোগ্য মাস্ক আদতে খুব একটা কাজেরই না।
তবে রাস্তার ধুলাবালু থেকে দুটি মাস্কই কিছুটা রক্ষা করে। বিশেষত যাঁদের ধুলোতে (ডাস্ট) অ্যালার্জি আছে, তাঁদের ক্ষেত্রে কাপড়ের মাস্ক কোনো সাহায্য না করলেও সার্জিকাল মাস্ক বেশ ভালো উপকারী।
একটা আদর্শ মাস্কে সাধারণত পাঁচটি স্তর থাকে, যার মধ্যে মেল্টব্লোন স্তর সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের দেশি অনেক সার্জিক্যাল মাস্কেও এই স্তর থাকে না বললেই চলে। প্রথমত, যাঁরা মাস্ক ব্যবহার করেন, তাঁদের মধ্যে খুব কম মানুষই আছেন, যাঁরা মাস্ক কেনার সময় ছিঁড়ে দেখেছেন যে এর মধ্যে আসলে স্তর কয়টা এবং মেল্টব্লোন লেয়ার আদৌ আছে কি না। দ্বিতীয়ত, কাপড়ের মাস্কের কোনো স্বাস্থ্যসম্মত বিধি এখনো প্রমাণিত হয়নি।
কখন মাস্ক ব্যবহার করা নিষেধ
১. বাড়ির ভেতরে মাস্ক ব্যবহার করা (যদি সবকিছু স্বাভাবিক থাকে)।
২. একটি মাস্ক চার ঘণ্টার বেশি ব্যবহার করা।
৩. পুনর্ব্যবহার।
৪. একজনের মাস্ক আরেকজন ব্যবহার করা।
৫. মাস্ক ব্যবহারের সময় কথা বলতে বলতে ভিজে গেলে, তা ব্যবহার করতে থাকা।
৬. শ্বাসকষ্টের রোগীদের দীর্ঘক্ষণ ব্যবহার।
৭. মুখের চামড়ায় কোনো সংক্রামক বা অসংক্রামক কোনো রোগ হলে।
চিকিৎসক ও হাসপাতালের কর্মীদের ক্ষেত্রে হাসপাতালে মাস্ক ব্যবহার করা, যাঁরা হাসপাতালে রোগী দেখতে আসেন, তাঁদেরও ব্যবহার করা। ধুলার জায়গায় কাজ করেন, এমন সব কর্মী, আটা বা কোনো গুঁড়ার মিলে (হলুদ, মরিচ, ধনে) করেন যাঁরা, তাঁরা বিশেষ মাস্ক ব্যবহার করবেন।
সবচেয়ে বেশি মাস্ক ব্যবহারকারী দেশ জাপানে ২০১৬ সালে এক গবেষণায় দেখা যায়, শহরে থাকা ৫৭ দশমিক ৯ শতাংশ মানুষ এবং গ্রামে থাকা ৯ দশমিক ৩ শতাংশ মানুষ মাস্ক ব্যবহার করেন। স্বাস্থ্যগত দিক দিয়েও তাঁরা বেশ ভালো আছেন। ২০২২–এ সেই জাপানের আরেক গবেষণা বলছে, মাস্কের ব্যবহার তারা সরকারিভাবেই কমিয়ে এনেছেন প্রায় ১১ শতাংশর কাছাকাছি (সমগ্র জাপানে), কারণ, তারা আসলে দূষণ কমানোতে মনোযোগ দিয়েছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।