শ্রমিকদের ২৩ দফা দাবি মেনে নতুন উদ্যমে আবারও খুলেছে নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেড। বুধবার রাতের বৈঠকে দাবি-দাওয়ার সমাধান হওয়ার পর আজ বৃহস্পতিবার থেকে কারখানাগুলোতে উৎপাদন কার্যক্রম শুরুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন উত্তরা ইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ আবদুল জব্বার।
এর আগে মঙ্গলবার একজন শ্রমিক নিহতের ঘটনায় বুধবার সারাদিন বন্ধ থেকে উত্তরা ইপিজেডের ২৪টি কারখানা। সমস্যা সমাধানে বৈঠকে বসেন জেলা প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সদস্য, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিণী, আন্দোলনরত শ্রমিক প্রতিনিধিসহ বেপজা কর্তৃপক্ষ।
দীর্ঘ ৫ ঘন্টারও বেশি সময় ধরে চলা বৈঠকের পর সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন নীলফামারীর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুস সামাদ শিকদার। তিনি বলেছেন, শ্রমিকদের সকল দাবি মেনে বৃহস্পতিবার থেকে উৎপাদনে ফিরছে নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেড।
নিহত শ্রমিকের ব্যাপারে দুঃখ প্রকাশ করে তিনি বলেন, নিঃসন্দেহে এটা একটা দুঃখজনক ঘটনা। এ ঘটনা কি অনাকাঙ্ক্ষিত দাবি করে এ ধরনের ঘটনা যাতে ভবিষ্যতে আর না ঘটে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
তিনি বলেন, যিনি নিহত হয়েছেন তার পরিবারকে প্রাথমিকভাবে কিছু ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে। আইনানুগকভাবে তাদের যত ক্ষতিপূরণ পাওনা আছে তার পুরোটাই প্রদান করা হবে বলে নিশ্চিত করেন তিনি।
আলোচনা সভায় উপস্থিত বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় কোনো শ্রমিকের বিরুদ্ধে কোনো রকমের মামলা যেন না হয় আমরা সেটা বলেছি, কর্তৃপক্ষ তা মেনে নিয়েছি। শ্রমিকেরা যাতে কারখানায় নির্ভয়ে কাজ করতে পারে এমন দাবিও ছিল রাজনৈতিক নেতাদের।
এ বিষয়ে বিএনপি নেতা আবু মো. সোয়েম বলেন, যিনি নিহত হয়েছেন তাকে এভারগ্রীন কোম্পানি টোকেন মানি দিয়েছে, তার পরিবারকে আরও সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সবমিলিয়ে একটা ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে।
জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর ড. খাইরুল আনাম বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় কোনো শ্রমিকের বিরুদ্ধে কোন মামলা হবে না আমরা সেটা বলেছি, কর্তৃপক্ষ সেটা মেনে নিয়েছে। কাজেই কোনো শ্রমিকের আশঙ্কার কোনো কারণ নেই।
তিনি আরও বলেন, শ্রমিকদের দেওয়া ২৩ দফা দাবি মেনে নেওয়াসহ মৃত শ্রমিকের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান,আহত শ্রমিকদের উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করণ ও ভবিষৎতে এধরনের অপ্রতীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে সেজন্য লিখিত চুক্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
জেলা জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতা আব্দুল মজিদ সাংবাদিকদের বলেন, শ্রমিকদের দেওয়া ২৩ দফা দাবি মেনে নেওয়াসহ মৃত শ্রমিকের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান,আহত শ্রমিকদের উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করণ ও ভবিষৎতে এ ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে সেজন্য লিখিত চুক্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে সার্বিক পরিস্থিতি নজরদারিতে রাখার জন্য যৌথ আইনশৃঙ্খলা বাহিণীর টহল ব্যাহত থাকবে।
সভায় সকল পক্ষের সর্বসম্মতিতে সিদ্ধান্ত হয়, বৃহস্পতিবার থেকে ইপিজেডের সকল প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হবে। শ্রমিকদের যাতে চাকরি হারানোর ভয়ে থাকতে না হয় বরং নিশ্চিন্তে কাজ করতে পারে এ ব্যাপারে শ্রমিক নেতারা এবং জেলা প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা এখন থেকে নিয়মিত তাদেরকি করবেন বলে সিদ্ধান্ত হয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।