আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতের আলোচিত নির্ভয়া ধর্ষণকাণ্ডে আসামিদের শাস্তি কার্যকরের সময় ঘনিয়ে এসেছে। ধর্ষকদের নিজের হাতে ফাঁসির দড়ি পরিয়ে দেবেন মিরাট জেলের জল্লাদ পবন কুমার। আর কয়েকদিন পর রায় কার্যকর হতে যাচ্ছে। তাদের গলায় ফাঁস পরানোর বিষয়ে পবন কুমারের মনে কোনো খেদ নেই। বললেন, ওরা মানুষই নয়। মরবে জানোয়ারের মতো। নিষ্ঠুর বলেই ওদের ফাঁসিতে মরতে হবে। এদিকে, আদালতের রায় পুনর্বিবেচনার জন্যে যে শেষ আর্জি করেছিলেন আসামিরা, তা আজ শনিবার খারিজ করে দিয়েছেন পাতিয়ালা হাউস কোর্ট। খবর সংবাদ প্রতিদিনের।
নির্ভয়ার আসামিদের গলায় যিনি ফাঁস পরাবেন তাকে নিয়ে মানুষের আগ্রহ বেশ। তাকে নিয়ে একটি প্রতিবেদন করেছেন কলকাতার সংবাদপত্র আজকাল। মিরাটের এক মহল্লায় ছোট্ট ফ্ল্যাট তার। পবনের বয়স ৫৪। তিনি বলেন, অন্যদের শিক্ষা দিতে ওদের মতো লোকেদের ফাঁসিই দিতে হবে। মৃত্যুদণ্ড হলেই অপরাধ কমবে। কারণ, যাবজ্জীবন সাজা দিলে ওরা বেরিয়ে এসে আরো অপরাধ করার সুযোগ পাবে।
তিন প্রজন্ম ধরে ফাঁসির আসামিদের গলায় ফাঁস পরানোর কাজ করছে পবনের পরিবার। পবনের গুরু তারই দাদা। তিনিই ফাঁসি দিয়েছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর হত্যাকারীকে। ১৯৮২ সালে অপহরণ ও হত্যা মামলায় ফাঁসি দিয়েছিলেন আরো ২ জনকে। পবনের ছেলের বয়স এখন সাত। তার ছেলেও কি পেশাদার জল্লাদ হবে? উত্তরে নীরব ছিলেন পবন।
কথাবার্তা চলার মাঝেই পবনের ফোনে বেজে উঠল অ্যালার্ম। ‘আপনার নির্ধারিত কুড়ি মিনিট শেষ। এবার উঠুন। আপনি তো একা নন। সারা দেশ, এমনকি বিদেশের লোকেরাও আমার সঙ্গে কথা বলতে চায়।’ উঠে পড়তে পড়তে বললেন পবন। তবে পবন উগরে দিলেন ক্ষোভ। জানালেন, মাসে ৫ হাজার টাকা ভাতায় পেট ভরে না। তাই এদিক ওদিক আয়ের চেষ্টা করতে হয়। মিডিয়াকে সময় দিয়েও বোধহয় কিছু আয় হয়। তবে তার আশা, ফাঁসি হয়ে যাওয়ার পর তার অবস্থা ফিরিয়ে দেবেন দেশের মানুষ। ‘আশপাশের লোকেরা আমাকে ভালোই বাসে। তবে আমি নিশ্চিত, ফাঁসির পর আমার সম্মান আরো বেড়ে যাবে’, বললেন পবন কুমার।
এদিকে দিল্লির তিহার জেলে ফাঁসির অপেক্ষায় দিন গুনছে নির্ভয়াকাণ্ডে সাজাপ্রাপ্ত চার অপরাধী অক্ষয়, পবন, বিনয় ও মুকেশ। কয়েকদিন আগে থেকেই শুরু হয়েছে প্রস্তুতি। ইতোমধ্যেই চারজনের গলার মাপ নিয়ে গেছে জেল কর্তৃপক্ষ। কলা ঘষে ঘষে নরম করা হচ্ছে ফাঁসির দড়ি যাতে সহজে গলায় বসে যেতে পারে। এমন টুকরো টুকরো খবর সামনে আসছে মিডিয়ার বদৌলতে।
বাঁচার শেষ চেষ্টা করেছেন আসামিরা। তিহার জেল কর্তৃপক্ষের কাছে কিছু নথিপত্র চেয়ে আবেদন জানিয়েছিলেন বিনয় শর্মা, পবন গুপ্তা ও অক্ষয় কুমার। কিন্তু জেল কর্তৃপক্ষ সেই নথি দিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন তাদের আইনজীবী এ পি সিং। আর তাই তার মক্কেলেরা আদালতে কিউরেটিভ আরজি জানাতে পারছে না বলেও দাবি করেন তিনি। এ নিয়ে পাতিয়ালা হাউজ কোর্টের দ্বারস্থ হন তাদের আইনজীবী। আর্জি খারিজ করে বিচারক জানিয়ে দেন, আর কোনো নথির প্রয়োজন নেই। তাছাড়া সরকারি আইনজীবীর তরফ থেকে আদালতকে জানানো হয়, জেল কর্তৃপক্ষ সমস্ত নথি দিয়ে দিয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।